খবরা-খবর
উত্তরপ্রদেশ সহ সমগ্র দেশে ক্রমবর্ধমান ধর্ষণ, নারী নির্যাতন, দলিত নিপীড়নের বিরুদ্ধে যৌথ মিছিল, পথসভা, প্রচার, বিক্ষোভ
ddare

বিগত ১৪ সেপ্টেম্বর উত্তরপ্রদেশে হাথরাসে একটি ১৯ বৎসর বয়সী মেয়ের অতিমানবীয় যে ধর্ষণ ও খুন হয়েছে তার বিরুদ্ধে আজ আইসা ও আইপোয়া-র পক্ষ থেকে একটি প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করা হয়। সেই কর্মসূচীতে প্রথমে বিষ্ণুপুর পোকাবাঁধে স্লোগান ও কমরেড ফারহান কর্মসূচীর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রারম্ভিক বক্তব্য রাখেন। তারপর সেখান থেকে পথমিছিলের মাধ্যমে বিক্ষোভ কর্মসূচী শুরু হয় ও স্ট্যাচু মোড় তথা এসডিও অফিসে মিছিল থামে। সেখানে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়, বক্তব্য রাখেন আইপোয়া নেত্রী তিতাস গুপ্ত। তিনি বলেন “ধর্ষিতা মনীষা বাল্মীকির পরিবারের উপর যোগী তথা বিজেপি সরকার কী নির্মম অত্যাচার চালিয়েছে। এই দেশে ধর্ষিতা ও ধর্ষিতার পরিবারকে কেন প্রশ্নের মুখে দাঁড়াতে হয়...”। বক্তব্য রাখেন আইসা সদস্য বিল্টু ক্ষেত্রপাল। তিনি বলেন “এই ধর্ষণ, পুরুষতান্ত্রিক ও ব্রাহ্মন্যবাদ চিন্তা ছাত্রদের কিভাবে ভুল পথে পরিচালনা করে ..”। মঙ্গল মুর্মু বিষ্ণুপুর চন্দ্রকোনা আরও অনেক জায়গায় এই ধর্ষণের উদাহরণ টেনে সাধারণ মানুষের সচেতনতার প্রশ্ন তোলেন। আইসা সম্পাদক সুশান্ত ধীবর বলেন, “এই ব্রাহ্মণবাদের প্রচারের মাধ্যমে দলিতদের নিপীড়ন করা চলবে না...”। শেষে ইনকিলাব জিন্দাবাদ স্লোগান তুলে কর্মসূচী শেষ হয়।

- প্রান্তিক দাশগুপ্ত  

tta

প্রতিবাদী মিছিল কোন্নগরে

হাথরাস, বলরামপুর স্পষ্ট দেখিয়ে দিয়েছে উত্তরপ্রদেশে কেবলমাত্র বিজেপি-আরেসএস মদতপুষ্ট ধর্ষক-খুনী-পুলিশ-আমলা আঁতাত চলছে। সেই বিজেপি আবার বাংলায় তৃণমূলী নৈরাজ্যের পরিবর্তে সুদিন আনার গল্প শোনায়! এই সীমাহীন ভণ্ডামির বিরুদ্ধে ও নির্যাতিতদের দ্রুত ন্যায় বিচারের দাবিতে গত ৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় কোন্নগর বেঙ্গল ফাইন চৌরাস্তার মোড়ে জ্বলন্ত মশাল নিয়ে বিজেপিকে সোচ্চারে ধিক্কার ও হুঁশিয়ারি দিলো সিপিআই(এমএল) লিবারেশন। এই সমাবেশে মহিলারা ছিলেন নেতৃত্বে। এলাকার কিছু মানুষও বিক্ষোভে যোগ দেন। উপস্থিত ছিলেন পার্টির রাজ্য সম্পাদক পার্থ ঘোষ ও হুগলি জেলা সম্পাদক প্রবীর হালদার। সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন পার্টির উত্তরপাড়া থানা এরিয়া কমিটির সদস্য সৌরভ ও রাজ্য সম্পাদক। এরপরে স্লোগান দিয়ে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কুশপুতুল জ্বালানো হয়।

বজবজে বিক্ষোভ

গত ২ অক্টোবর বজবজের কালীপুরে উত্তরপ্রদেশের হাথরাস ও বলরামপুরে ধর্ষণ, হত্যা এবং পুলিশ দ্বারা রাতের অন্ধকারে দেহ পুড়িয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সংগঠিত হয়। আওয়াজ ওঠে খুনি মুখ্যযমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। প্রবল প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যেও মহিলা ও ছাত্র-যুবরা প্রতিবাদে সামিল হন। উপস্থিত ছিলেন জেলা সম্পাদক কিশোর সরকার, আইপোয়ার-র রাজ্য নেত্রী কাজল দত্ত, সেখ সাবির (রাজা) সহ আরো অনেকে।

পোস্টার প্রচার

১ অক্টোবর সারা ভারত প্রগতিশীল মহিলা সমিতির উদ্যোগে হাথরাসে দলিত তরুণীর নৃশংস গণধর্ষণ, হত্যা ও দেহ জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনাকে ধিক্কার জানিয়ে অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে, দেশপ্রিয়নগর বাজার থেকে সমিতির অফিস পর্যন্ত পোস্টারিং করা হয়।

bal

২ অক্টোবর বেলঘরিয়ায় গান্ধী জয়ন্তীর দিনে

ভারতে আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং মণীষা বাল্মীকির ন্যায় বিচারের দাবিতে মিছিল ও প্রতিবাদী সভা হল। সিপিআই(এমএল) লিবারেশন প্রভাবিত সারাভারত প্রগতিশীল মহিলা সমিতি (এআইপিডব্লিউএ), অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (এআইএসএ), অল ইন্ডিয়া সেন্ট্রাল কাউন্সিল অব ট্রেড ইউনিয়নস (এআইসিসিটিইউ) যৌথভাবে প্রতিবাদে সামিল হয়। সভায় দাবি করা হয়, উত্তর প্রদেশে হাথরাসের দলিত তরুণী মণীষা বাল্মীকির ধর্ষক ও হত্যাকারীদের বিচার এবং শাস্তি চাই। উত্তর প্রদেশ সরকারের নির্দেশে মৃতা মণীষা বাল্মীকির শরীর অন্তিম সৎকারের জন্য তার পরিবারের হাতে  তুলে না দিয়ে পুলিশ নিজেই গভীর রাতে মৃতদেহ সৎকার  করেছে এবং তথ্য গোপন করার চেষ্টা করেছে। এই ঘটনায় জেলা শাসক সহ অভিযুক্ত অন্যদের অবিলম্বে চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে এবং উত্তর প্রদেশ মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে পদত্যাগ করতে হবে। প্রতিবাদী মিছিল দেশপ্রিয় নগরের বিভিন্ন অঞ্চল পরিক্রমা করে শহীদ বেদীতে শেষ হয় এবং সভা শুরু হয়। সভায় বক্তা ছিলেন সায়ন্তন মিত্র, সৌমেন্দু মিত্র (এআইএসএ), অর্চনা ঘটক (এআইপিডব্লিউএ), অশোক সাহা এবং শিবশঙ্কর গুহরায় (সিপিআই (এম-এল))। মিছিল ছাত্র কমরেডদের, বিশেষ করে ছাত্রী ত্রিয়াশা লাহিড়ির দৃপ্ত শ্লোগানে মুখরিত ছিল। সভা পরিচালনা করেন জয়ন্তী দাশগুপ্ত।

dda

 

৫ অক্টোবর ‘কামারহাটি আইডিয়াল এডুকেশনাল সোসাইটি’ হাথরাস ধর্ষণ ও হত্যার বিরুদ্ধে বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে। বক্তব্য রাখেন সেরাজ নোমানি, আসগর, শিবশঙ্কর গুহরায়, রাম বচন এবং নবেন্দু দাশগুপ্ত।

৭ অক্টোবর বেলঘরিয়া ‘নাগরিক উদ্যোগ’ হাতরাস ধর্ষণ-হত্যার বিরুদ্ধে এবং মোদী ও যোগী রাজের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মিছিল বিটি রোড রথতলা থেকে শুরু হয় এবং ফিডার রোড দিয়ে বেলঘরিয়া স্টেশনের কাছে শেষ হয়।

পূর্বস্থলীতে বিক্ষোভ

পুর্ব বর্ধমান জেলার পুর্বস্থলী ২নং ব্লক-এর ফলেয়া বাজারে সিপিআই(এমএল) লিবারেশন-এর পুর্বস্থলী এরিয়া কমিটির পক্ষ থেকে ২ অক্টোবর মিছিল করে উত্তর প্রদেশের হাথরাস গণধর্ষণকারীদের উপযুক্ত শাস্তির ও যোগী আদিত্যনাথ-এর পদত্যাগের দাবি তোলা হয়। এরপর যোগীর কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।

sss

প্রতিবাদ বিক্ষোভ শিলিগুড়িতে

উত্তরপ্রদেশের হাথরাসের দলিত মহিলার গণধর্ষণ এবং হত্যার প্রতিবাদে রাজ্যের অন্যান্য জায়গার সাথে শিলিগুড়ির শক্তিগড়, ফকদইবাড়ি এবং কাওয়াখালিতে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির চেয়ে এবং মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান এআইপিডব্লিউএ এবং পার্টি কর্মীরা। তিনটে জায়গায় বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন মীরা চতুর্বদী, ময়না সূত্রধর, মামণী বর্মণ, শ্যামল ভৌমিক, রুবী সেনগুপ্ত, মিলি ভট্টাচার্য, রজত বর্মণ, শাশ্বতী সেনগুপ্ত প্রমুখ।

হাওড়া জেলায় বিক্ষোভ

উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে দলিত নাবালিকার ধর্ষণ এবং হত্যার বিরুদ্ধে, যোগী আদিত্যনাথের পদত্যাগের দাবিতে, বিরোধী দলগুলি এবং সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের হাথরাসে যাওয়া আটকানোর বিজেপির ফ্যাসিস্ট আচরণের বিরুদ্ধে ৪ঠা অক্টোবর হাওড়া জেলার বালি এবং আড়ুপাড়ায় বিক্ষোভ সংগঠিত হয়। আড়ুপাড়ায় বিক্ষোভ কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন পরিতোষ ব্যানার্জী এবং সুপ্রিয় রায়। বালিতে জোড়া অশ্বত্থতলা লেভেল ক্রশিং থেকে মিছিল করে শ্রীকৃষ্ণ হল পর্যন্ত যাওয়া হয় এবং রাস্তা অবরোধ করে যোগীর কুশপুতুল পোড়ানো হয়।

কলকাতায় বিক্ষোভ

কলকাতায় ধারাবাহিক বিক্ষোভ চলছে। বিভিন্ন বামপন্থী ছাত্রছাত্রী-যুব ও মহিলা সংগঠনের ডাকে মৌলালি থেকে ধর্মতলা যৌথ মিছিল বিশেষ উদ্দীপনা সৃস্টি করেছিল। আইসা, আইপোয়া, এআইসিসিটিইউ, এআইপিএফ অন্যান্য সংগঠনের সাথে একাধিক বিক্ষোভ সংগঠিত করে। স্থানীয় স্তরে ৪ অক্টোবর বাঘাযতীন থেকে পল্লিশ্রী পোর চার জায়গায় পথসভায় বক্তব্য রাখেন বাসুদেব বোস, চন্দ্রাস্মিতা চৌধুরি, ইন্দ্রানী দত্ত, রুদ্র প্রভাকর দাস, সম্প্রীতি মুখার্জী, মিলন সমাদ্দার। এই প্রচার এলাকায় প্রভাব ফেলে। একইভাবে ৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় ইউনিভার্সিটির ৪ নং গেট থেকে যাদবপুর কমিউ ও ফেমিনিস্ট ইন রেজিস্ট্যান্স সহ আইসা আইপোয়া যৌথভাবে পোদ্দারনগর, বিক্রমগড় বাজার, গলফগ্রীন মোড় ও বিজয়গড় বাজারে প্রচার সভা চালায় যেখানে ১২ জনের ওপর মহিলা বক্তব্য রাখেন এবং শেষে মোদির কুশপুতুল ও মনুস্মৃতি পুড়িয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। একদম পাড়া স্তরে প্রচার চালিয়ে বিজেপি ও আরএসএস-এর স্বরূপ উন্মোচিত করার আহ্বান রাখা হয়।

খণ্ড-27
সংখ্যা-36