সিপিআই(এমএল)-র একটি প্রতিনিধিদল গত ৭ অক্টোবর হাথরাস পরিদর্শনে যায় এবং গণধর্ষণ ও খুনের শিকার মনীষা বাল্মিকির পরিবারের সাথে দেখা করে। প্রতিনিধিদল পরিবারকে সান্ত্বনা জ্ঞাপন করে এবং সুবিচার পেতে সমগ্র ঘটনাটিকে সুপ্রিম কোর্টের কোনও বিচারক দ্বারা তদন্ত করানোর দাবিকে সমর্থন জানায়। সিপিআই(এমএল) উত্তরপ্রদেশ রাজ্য সম্পাদক সুধাকর যাদব জানিয়েছেন যে পার্টির রাজ্য কমিটির সদস্য ও পশ্চিম ইউপি পার্টির দায়িত্বশীল নাশির শাহের নেত্রিইত্বে প্রতিনিধি দল মনীষার মা রামা দেবি, বাবা ওম প্রকাশ, ভাই সত্যেন্দ্র, কাকা রামবীর সহ পারা প্রতিবেশিদের সাথে দেখা করে কথাবার্তা চালায়। পরিবারটি খুব গরিব। দারিদ্র্য ও জাতবাদী আধিপত্যের কারণেই প্রশাসনের এই অবজ্ঞা তথা প্রমাণ লোপাট করে ধামাচাপা দেওয়ার মরিয়া প্রচেষ্টা। সঠিক সময়ে এফআইআর নেওয়া হয়নি, চিকিৎসাও হয়নি। এতদসত্বেও আলিগড় মেডিক্যাল অফিসার ভিক্টিমের শরীরে ধর্ষণজনিত ক্ষতের কথা বলেছেন।
তাছাড়া, প্রশাসন গভীর রাতে মরদেহ পুড়িয়ে ফেলেছে পরিবারকে অন্ধকারে রেখে। ডিএম কেবল পরিবারকে হুমকি দিয়েই থেমে থাকেনি, পরিবারের লোকেদের লাথিও মেরেছে। ঘটনাটিকে ধামাচাপা দেওয়ার অভিসন্ধিতে প্রথম দিকে বিরোধী নেতা ও মিডিয়াকে পরিবারের সাথে দেখা করতে বাধা দেওয়া হয়। পুরো গ্রামটিকেই একটি পুলিশ পস্টে পর্যবসিত করা হয়েছে, কিন্তু অভিযুক্তের পরিবার ও সমর্থকেরা অবাধে জমায়েত করছে ও নির্যাতিতার পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে। বিজেপি নেতারা অভিযুক্তের পক্ষে দাঁরাচ্ছে। এসবই সরকারের ইশারাতে ঘটছে।
রাজ্য সম্পাদক সুধাকর যাদব বলেন যে যোগি সরকার তথাকথিত ‘আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র’র কথা বলছে সরকারের ন্বক্কারজনক ভুমিকা থেকে দৃষ্টি সরাতে, তারা একের পর এক এফআইআর করে চলেছে এবং সাংবাদিকদের নিশানা বানাচ্ছে। এসবই চরম দমন ও নজর ঘোরানোর কৌশল। সুধাকর আবেদন জানান যে লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত না হয়ে সুবিচারের লরাইকে আরও তীব্র করে তুলতে হবে।
প্রতিনিধিদলের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে উত্তরপ্রদেশ রাজ্য পার্টি নিম্নলিখিত দাবিসমূহ উত্থাপন করেছে : ডিএম ও এসপি-র (এখন সাসপেণ্ডেড) বিরুদ্ধে এফআইআর ও শাস্তি, দোষিদের কঠোর শাস্তি, নির্যাতিতার পরিবারের যথাযথ সুরক্ষার বন্দোবস্ত, অভিযুক্তের পরিবার দ্বারা জমায়েত ও হুমকি প্রদান অবিলম্বে বন্ধ করা, প্রতিবাদকারী রাজনৈতিক নেতাদের ওপর চাপানো মামলা প্রত্যাহার, সাংবাদিকদের ওপর নিপীড়ন বন্ধ করা, হাথরাস, বলরামপুর, ভাদোরি, মুখ্যমন্ত্রী যোগি আদিত্যনাথের পদত্যাগ — আজমগড় সহ রাজ্যের একের পর এক ঘটনা থেকে স্পষ্ট যে নারীর ওপর অত্যাচার বন্ধ করতে তিনি সম্পূর্ণ ব্যর্থ।
সিপি আই(এমএল)-র এই প্রতিনিধিদলে ছিলেন রাজ্য কমিটির সদস্য নাশির সাহ, এআইকেএম রাজ্য ভাইস প্রেসিডেন্ট নাথিলাল পাঠক, তারা সিং, রাকেশ চৌধুরি, মনোজ কুমার, সালিম খান, আর ওয়াই এ নেতা আমন ও বিষ্ণু শর্মা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই টিমের গতিরোধ করা হয় নির্যাতিতার বাড়ির এক কিলোমিতার দূরে এবং শেষ পর্যন্ত পাঁচজন প্রতিনিধিকে পরিবারের সাথে দেখা করতে দেওয়া হয়।