খবরা-খবর
ঋণ মুক্তির আন্দোলনসংগঠিত করার উদ্যোগ এগিয়ে চলেছে
gggr

বিভিন্ন জেলাতে গ্রামীণ গরিবদের আন্দোলন কিছুটা গতি পেতে শুরু করেছে। তার খবরাখবর দেশব্রতীর পাতায় নিয়মিত প্রকাশ হচ্ছে। এই সংখ্যায় পূর্ব বর্ধমানের কিছু অভিজ্ঞতা অন্যতম সংগঠক সজল পালের কলমে --

পুর্ব বর্ধমান জেলায় ‘গ্রামে গ্রামে চলুন, ঘরে ঘরে চলুন’ কর্মসূচীকে সামনে রেখে ঋণ মুক্তি কমিটি সংগঠিত করার উদ্যোগ বিভিন্ন ব্লকের গ্রামাঞ্চলে বিস্তার লাভ করছে।

এপর্যন্ত ৯টা ব্লকে বিভিন্ন ধরনের কমিটি গঠন হয়েছে। নতুন নতুন ব্লকে ও গ্রামে যেমন তৈরি হয়েছে, তেমনই সংগঠনের পুরনো কাজের গ্রামে তৈরি হচ্ছে। কোনও কোনও এলাকায় প্রথম প্রথম অনেকে  মনে করতেন যে তার নিজের এলাকায় সেই পরিস্থিতি নেই। কিন্ত সামান্য উদ্যোগ নিতেই  দেখা যাচ্ছে ব্যাপক মেহনতিদের পরিবারের মহিলাদের অংশগ্রহণ ঘটছে। গ্রামীণ গরিব মেহনতিদের পরিবারের মহিলাদের এক দিকে যেমন রোজগার করার জন্য বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে হয় – তাঁতের কাজ, বিড়ির কাজ, সেলাই মেশিনের কাজ, বিভিন্ন ধরনের ইমিটেশন তৈরি, রাখী তৈরির কাজ, জমিতে কৃষি মজুরের কাজ, হাঁস মুরগী গরু ছাগল পালন করার কাজ – তেমনই আবার ঘরের গৃহস্থালীর কাজ করতে হয়। তাছাড়া গ্রামীণ সমাজের প্রচলিত রীতি-নীতিকে মোকাবিলা করেই অনেক ক্ষেত্রে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করা সম্ভব হয়। এত প্রতিকুলতা অতিক্রম করেও পরিস্থিতির প্রয়োজনে মহিলারা দলে দলে ঋণ মুক্তির আন্দোলনে সামিল হচ্ছেন। অনেকেই এই আন্দোলনের সফলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

বাস্তব বিষয় হল গ্রামীণ গরিব জনগণের সমস্যার সমাধান করার দাবিতে সংগঠিত করার প্রশ্ন। আয়ারলার পক্ষ থেকে অনেক দাবিই তোলা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ধরনের দাবিতে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। কোথাও ঋণের প্রশ্ন, কোথাও পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজ। তার সাথে যুক্ত করেই মনরেগা প্রকল্পের কাজ, মজুরি, আবাস যোজনার ঘর, শৌচাগার, দলবাজি-দুর্নীতির বিরোধিতা ও অন্যান্য গ্রামীণ মেহনতিদের দাবি। আন্দোলনকে বৃহত্তর পরিধিতে বিস্তার ঘটানোর চেষ্টা চালাতে হবে। পুর্ব বর্ধমানে সেই চেষ্টাই চলছে। পুর্বস্থলী-২ ব্লকের মুকশিম পাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রথমে অগ্রগতি শুরু হয়েছে পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে দিয়েই। বর্তমানে ঋণ মুক্তির দাবিতে গত ৩০ আগষ্ট প্রায় ১০০ জন মহিলা বৈঠক করেন বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। তার কিছুক্ষণ পরেই দেখা গেল আরও ৫০ জন মহিলা এসে উপস্থিত হয়েছেন। তাই আবার একবার আলোচনা চলল। শেষ হওয়ার পর রাত আটটার সময় আবার ৪০ জন মত হাজির হলেন এবং আবার আলোচনা চালানো হল। এইসব মহিলাদের বেশিরভাগই সংখ্যালঘু পরিবারের মহিলা। ৩১ আগষ্ট মেড়তলা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সিমলা মুসলিম পাড়া ও চণ্ডীপুর গ্রামের মহিলাদের নিয়ে বৈঠক হয়। ২৮ আগষ্ট রায়না ব্লকের বুরার গ্রামে শতাধিক মহিলাদের উপস্থিতিতে বৈঠক হয়। কমিটি গঠন হয়। কালনার আঙ্গারসন গ্রামেও বৈঠক হয়। গণস্বাক্ষর সংগ্রহ ও ১৫ সেপ্টেম্বর জেলা শাসকের কাছে ভেপুটেশন কর্মসূচীর প্রস্তুতি চলছে।

খণ্ড-27
সংখ্যা-31