বিহারের ঔরঙ্গাবাদ জেলায় দলিতদের ওপর গুলিচালনার বিরুদ্ধে সিপিআই(এমএল)’র প্রতিবাদ
বী

গত ২১ আগস্ট ঔরঙ্গাবাদ জেলার দাউদনগরের আঞ্ছা গ্রামের দলিত টোলায় গুলি চালায় সামন্ততান্ত্রিক রাজপুতদের সংগঠিত বাহিনী। গুলিতে আহত হন ছয় দলিত যাদের সবাইকেই পাটনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তিনজনকে ছেড়ে দেওয়া হলেও, বাকি তিনজন এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সিপিআই(এমএল)’র বিহার রাজ্য সম্পাদক কুনাল আঞ্ছা গ্রামের ঘটনাকে ধিক্কার জানিয়ে এক বার্তায় বলেছেন, বিহারে সামন্ততান্ত্রিক-সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলোর চূড়ান্ত বাড়বাড়ন্ত ঘটেছে, এবং আঞ্ছা গ্ৰামের ঘটনা তাদের দ্বারা সংঘটিত একের পর এক হিংসাত্মক ঘটনায় একটা সংযোজন মাত্র।

সিপিআই(এমএল)-এর এক তদন্তকারী দল আঞ্ছা গ্রাম পরিদর্শন করেন। ওই দলে ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও প্রাক্তন বিধায়ক রাজারাম সিং, আরওয়াল জেলা সম্পাদক মহানন্দ, রাজ্য কমিটি সদস্য জিতেন্দ্র যাদব ও রবীন্দ্র যাদব এবং ঔরঙ্গাবাদ জেলা সম্পাদক মুনারিক। তাঁরা জানিয়েছেন, ২১ আগস্টের গুলিচালনার ঘটনার জের রয়েছে ১৪ আগস্টের এক ঘটনার মধ্যে। সেদিন দলিত মহল্লায় ঠাকুর জাতের গান্ধি সিং-এর বাড়িতে জন্মদিনের এক অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এবং তার পরিণতিতে গান্ধি সিং-এর ভাইপো ধীরাজ পাশোয়ান নামে এক দলিত যুবককে মোটরসাইকেল দিয়ে ধাক্কা মারে। পরিস্থিতি তখনকার মত শান্ত হলেও ১৯ আগস্ট মুকেশ কুমার ও রোশন কুমার নামে দুই দলিত যুবক বাজার থেকে ফেরার সময় রাজপুত জাতের যুবকদের হাতে প্রহৃত হয়, চিকিৎসার প্রয়োজন হলেও তাদের গ্ৰামের বাইরে যাওয়া থেকে আটকানো হয়। এই নিপীড়নকে মুখ বুজে মেনে না নিয়ে দলিত যুবকরা পরদিন ২০ আগস্ট কয়েকজন রাজপুত যুবককে মারধর করে। এটা হজম করা রাজপুতদের পক্ষে সম্ভব হয় না, ২১ তারিখে গুলিচালনার মধ্যে দিয়ে তারা এর জবাব দেয়। কয়েকজন অল্পের জন্যে মৃত্যুর হাত থেকে রেহাই পায় এবং ছ-জনকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। গুলিচালনার লক্ষ্য দলিত হত্যা ছিল বলেই গ্ৰাম পরিদর্শনকারী তদন্তকারী দলের সদস্যরা জানিয়েছেন।

এই গুলিচালনার বিরুদ্ধে সিপিআই(এমএল) ২৪ আগস্ট রাজ্যব্যাপী প্রতিবাদ সংগঠনের ডাক দেয়। আরওয়াল, জাহানাবাদ, গয়া প্রভৃতি জেলার বিভিন্ন গ্রামে গ্রামবাসীরা এবং সামাজিক আন্দোলনের কর্মীরা ব্যাপক সংখ্যায় প্রতিবাদ আন্দোলনে অংশ নেন। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাজারাম সিং পাটনায় বলেন, সামন্ততান্ত্রিক শক্তিগুলো আঞ্ছা গ্রামে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল। সিপিআই(এমএল) গ্রামবাসীদের পাশে দাঁড়ানোয় তারা ভরসা পেয়েছে ও সাহসী হয়ে উঠেছে। তিনি আরও বলেন, দলিত, দরিদ্র ও চরম পশ্চাদপদরা আগামী বিধানসভা নির্বাচনে জনবিরোধী ও সামন্ততান্ত্রিক শক্তিগুলোকে মদতদানকারী নীতীশ সরকারকে শিক্ষা দিতে মনস্থ করেছে।

খণ্ড-27
সংখ্যা-31