খবরা-খবর
বিষ্ণুপুর পৌরসভার সাফাই কর্মচারিদের আন্দোলন : এএলসি দপ্তরে ডেপুটেশন
bis

আর্থিক সংকটের তীব্র আবহে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিষ্ণুপুর পৌরসভাতে শহরবাসীর জনস্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে সাফাইকর্মী, পানীয়জল সরবরাহ দপ্তর, বিদ্যুৎ বিভাগের পৌরসভা কর্মীরা কাজ করে গেলেও, তাঁদের বকয়ে মজুরি মেটানো হয়নি তিন মাসের ওপোর। এই অবস্থায় গত ১ মাসের বেশি সময় ধরে সরাসরি সম্পর্ক গঠন ও বিগত দেড় বছরের এআইসিসিটিইউ কর্তৃক প্রচারের ফলেই, শ্রমিকরা এআইসিসিটিইউ-র নেতৃত্বে ইউনিয়ন গড়ে তোলেন এবং আন্দোলনে দৃঢ় বিশ্বাসী হন। গত ১৪ সেপ্টেম্বর এআইসিসিটিইউ-র নেতৃত্বে বিষ্ণুপুর পৌরসভা সংগ্রামী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন প্রথমবার মিছিল করে অ্যাসিস্ট্যান্ট লেবার কমিশনারকে ৪ দফা দাবিতে ডেপুটেশন দেয়। মিছিলে লোকসংখ্যা ছিল ১৫০-র অধিক।

ইউনিয়নের অভিযোগ, শুধু বেতন বকেয়া একমাত্র কারণ নয় আন্দোলনের বরং তাঁদের মজুরি দৈনিক ১৫০ টাকা। কাজে যোগ না দিলে বেতন কাটা হয়, এমনকি শারীরিক অসুস্থতা থাকলেও কাজ না করলে বেতন কাটা যায়। মহিলা কর্মীরা মাতৃত্বকালিন ছুটি থেকেও বঞ্চিত হয়েছেন। ২৫ বছরের ঊর্ধ্বে কাজ করেও অনেক মজদুরের কোনো পিএফ, পেনশন কিছুই চালু হয়নি। আর এসব না পাওয়া অধিকার নিয়ে পৌর কর্তৃপক্ষকে প্রশ্ন করলে ছাঁটাই এর হুমকি এমনকি কাজে যোগ দিতে দেওয়া হয় না জোর করে। এ এক তীব্র দাসত্বের জামানা দেখছেন সাফাইকর্মীরা। তায় তাঁরা আর উপেক্ষিত হতে চান না, এবার সময় অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার। সরকার নির্ধারিত নুন্যতম মজুরি চালু করানো। নিজেদের কর্মের সুরক্ষা চাইছেন তাঁরা, জীবনের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় জুতো, গ্লাবস সহ পর্যাপ্ত পরিমাণে সাবান, স্যানিটাইজার সহ অন্যান্য সামগ্রী প্রদানের দাবি তুলছেন। ইউনিয়নের সভাপতি পদ্মা মাদ্রাজি বলছেন, “কাজ ছাড়িয়ে দেওয়ার শাসানি তো আমরা সবসময়ই পায় তারপরও আমাদের বয়স্ক পুরনো কর্মীরা ৬০ বছর পর কোনো সুবিধা পেয়েছে কি? তাহলে আমাদের আন্দোলনই পথ, শাসানি চলুক কত চলবে।” ইউনিয়ন সম্পাদক দিলবার খাঁ সহ অন্যান্য কিছু কর্মীরা বলছেন, “ইউনিয়ন কে প্রতিষ্ঠা করাই এখন মূল লক্ষ্য, তবেই ভবিষ্যৎ এ দাবি আদায় সম্ভব।”

একদিকে দীর্ঘ ৩৫ বছর পর বহু রাজনৈতিক জামানার অদলবদলের পর শ্যামা প্রসাদ মুখার্জীর (২৫ বছরের ঊর্ধ্বে চেয়ারম্যান) হুমকি, ভয় উপেক্ষা করে বিষ্ণুপুর পৌরসভাতে কোনো ইউনিয়ন তৈরি হল। এবং একই সাথে আন্দোলনের পথেই সমস্ত দাবিগুলিকে তারা সম্মিলিত রূপ দিয়ে একটি শক্তিশালী সাংগঠনিক ভিত্তি তৈরি করতে সক্ষম হলো।

এই ডেপুটেশন সফল ভাবে সম্পন্ন হয় এএলসি-র তরফ থেকে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকার আশ্বাস পেয়ে। আন্দোলনকে ভবিষ্যতে কি ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে তা জানান এআইসিসিটিইউ-র নেতৃত্ব, বিল্টু ক্ষেত্রপাল এবং ফারহান খান জানান, “আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর বাঁকুড়া জেলাশাসকের কাছে ডেপুটেশনে ইউনিয়নের দাবিগুলিও যুক্ত করা আছে। বিষ্ণুপুর থেকে ৬০ জন কর্মী ঐ ডেপুটেশনে যোগ দেবেন এবং সেখান থেকে ফিরে মিটিং করে আগামী কর্মসূচী ঠিক করা হবে।”

খণ্ড-27
সংখ্যা-33