বিহারের ব্লক সদরে পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রতিবাদ
bre

পরিযায়ী শ্রমিকদের কাছে প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানিয়েছিল সিপিআই(এমএল), এআইসিসিটিইউ, আয়ারলা এবং প্রবাসী মজদুর ইউনিয়ন। এই ডাকে সাড়া দিয়ে কয়েক হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ৭ জুলাই সারা বিহারের ব্লক সদর দপ্তরগুলোতে পৌঁছে বিডিও-দের কাছে স্মারকলিপি জমা দিলেন। এক যৌথ বিবৃতিতে সিপিআই(এমএল)-এর রাজ্য সম্পাদক কুনাল এবং আয়ারলা-র সাধারণ সম্পাদক ধীরেন্দ্র ঝা বলেছেন, বিজেপি এবং জেডিইউ পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে যে অভাবনীয় বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, তার বিরুদ্ধে পরিযায়ী শ্রমিকদের ক্রোধের প্রতিফলন ঘটেছে তাদের এই প্রতিবাদের মধ্যে। বিবৃতিতে তাঁরা আরও জানিয়েছেন, বিহার সরকার পরিযায়ী শ্রমিকদের এই আশ্বাস দিয়েছিল যে, যাদের যেমন দক্ষতা ও শিক্ষাগত যোগ্যতা রয়েছে, সেই অনুযায়ী তাদের কাজ দেওয়া হবে; কিন্তু বিহার সরকার পরিযায়ী শ্রমিকদের কি করোনা পরীক্ষা কী কাজের ব্যবস্থা, কিছুই করছে না। একদিকে করোনা সংক্রমিতদের সংখ্যা হু হু করে বেড়ে চলেছে, আর এই রাজ্যে কাজ না পেয়ে পরিযায়ী শ্রমিকরা কাজের খোঁজে অন্য রাজ্যে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এই সমস্ত বিষয়ে বিজেপি-জেডিইউ কোনো ভ্রুক্ষেপই করছে না, উল্টে ভার্চুয়াল সমাবেশের মধ্যে দিয়ে বিহার নির্বাচনকে হাতিয়ে নেওয়ার দিকেই তাদের ধ্যানজ্ঞান, বিহার জনগণকে তারা নিজেদের ব্যবস্থা নিজেদেরই দেখে নিতে বলছে।

gar

 

কয়েক হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ৭ জুলাই সারা বিহারের শতশত ব্লকের সদরে পৌঁছে সরকারের বিশ্বাসঘাতকতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও কাজের নিশ্চয়তার দাবি জানালেন। সেদিনের প্রতিবাদের মধ্যে দিয়ে তাঁরা যে দাবিগুলোকে তুলে ধরলেন সেগুলো হল :

  • পরিযায়ী শ্রমিক এবং নাপিত, ছুতোর, কামার, কুমোর, রিক্সাচালক-ঠেলাচালক-টেম্পোচালক এবং দোকানদার সহ সমস্ত স্বনিযুক্তদের ১০,০০০ টাকা করে লকডাউন ভাতা দিতে হবে;
  • আয়করের আওতার বাইরে রয়েছে এমন পরিবারগুলোর প্রত্যেক সদস্যকে ছ-মাস ধরে ১০ কেজি করে খাদ্যশস্য দিতে হবে;
  • দক্ষতা ও শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজ দিতে হবে, এবং যারা স্বনিযুক্ত কাজে যুক্ত হতে চায় তাদের সুদহীন ঋণ দিতে হবে;
  • এমএনআরইজিএ-র অধীনে ২০০ দিন কাজ এবং ৫০০ টাকা মজুরি দিতে হবে, এবং এই কর্মসূচীকে শহরেও সম্প্রসারিত করতে হবে;
  • বিহারে ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের সন্তানদের জন্য শিক্ষার বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে;
  • কৃষক এবং ভাগচাষিদের কেসিসি ঋণ মুকুব করতে হবে;
  • স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলোর ঋণ পুরোপুরি মুকুব করতে হবে;
  • প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে ২৪ ঘন্টা ডাক্তারদের থাকা এবং কোভিড চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে;
  • জেলা হাসপাতালগুলোতে করোনা পরীক্ষা এবং আইসিইউ-র ব্যবস্থা করতে হবে;
  • এর আগে যেমন ঘোষণা করা হয়েছিল সেই প্রতিশ্রুতি রেখে কোয়রান্টিন কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে আসা শ্রমিকদের ২,০০০ টাকা করে দিতে হবে এবং কোয়রান্টিন কেন্দ্রগুলোর ব্যয়ের সামাজিক অডিট করতে হবে।

যে সমস্ত জেলার ব্লকে-ব্লকে সেদিন প্রতিবাদ সংগঠিত হয় তার মধ্যে ছিল দ্বারভাঙ্গা, মধুবনী, মুজাফফরপুর, সহর্ষ, নালন্দা, গোপালগঞ্জ, ভোজপুর, আরওয়াল ও পাটনা গ্ৰামীণ।

খণ্ড-27
সংখ্যা-26