লকডাউন কেড়ে নিল ১০০ দিন প্রকল্পে গ্রামীণ মহিলাদের কাজ। সরকারি তথ্যই জানাচ্ছে, এই অর্থ-বর্ষের প্রথম পাঁচ মাসে ১০০ দিন প্রকল্পে গ্রামীণ মহিলাদের সমগ্র কর্মদিবস (টোটাল পার্সন ডে) নেমে দাঁড়িয়েছে ৫২.৪৬ শতাংশে, যা গত আট বছরে সর্বনিম্ন।
এনআরইজিএ-র সরকারি পোর্টালে যে তথ্যপঞ্জি প্রকাশিত হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে (২৪ আগস্ট পর্যন্ত) ২০১৩-১৪-র অর্থ-বর্ষে সমগ্র কর্মদিবস বা পার্সন ডে ছিল ৫২.৮২ শতাংশ। তারপর থেকে বর্তমানে যে অবস্থাটা এসে দাঁড়িয়েছে তা সর্বনিম্ন।
প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা যায়, ২০১৩-১৪’র পর থেকে ২০১৬ পর্যন্ত গ্রামীণ মহিলাদের অংশগ্রহণ ভালোই বৃদ্ধি পেয়ে ৫৬.১৬ শতাংশে পৌঁছেছিল। গতবছরের তুলনায় বর্তমানে যে সংখ্যাটা সামনে এসেছে তা ২.২৪ শতাংশ বিন্দু কম। মোট ১৩.৩৪ কোটি কর্মশীল ব্যক্তি নারেগার সাথে যুক্ত ছিলেন। যার মধ্যে ৬.৫৮ কোটি বা ৪৯ শতাংশ মহিলা।
অতিমারীর ফলে বিপুল সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিক নিজ নিজ গ্রামে ফিরে আসায় অর্থনৈতিক বাধ্যবাধকতা থেকে ১০০ দিনের কাজে পুরুষদের অংশগ্রহণ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
তথ্য থেকে আরও যে বিষয়টা জানা যাচ্ছে তা হলো, চলতি অর্থ-বর্ষে ২৮০.৭২ কোটি কর্মদিবসের যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তারমধ্যে ইতিমধ্যেই অর্জিত হয়েছে ১৮৩ কোটি কর্মদিবস, যা গ্রামাঞ্চলে চরম আর্থিক দুর্দশাকেই প্রতিবিম্বিত করে।
গ্রামীণ মহিলাদের হ্রাসপ্রাপ্ত কর্মদিবসের জাতীয় গড় ২.২৪ শতাংশ। অন্ধ্র প্রদেশে মহিলাদের অংশগ্রহণের হার জাতীয় হারের তুলনায় সবচেয়ে বেশি কমেছে (৩.৫৮), গতবছর যা ছিল ৬০.০৫ তা এবছরে নেমে এসেছে ৫৬.৪৭ শতাংশে। এরপরই রয়েছে বাংলার স্থান। পশ্চিমবাংলায় তা ৩.৩২, তেলেঙ্গানায় ২.৬২, হিমাচল প্রদেশে ২.৮৮।
ছত্তিশগড়, ঝাড়খন্ড, পঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, মেঘালয়, তামিল নাড়ু, উত্তরাখন্ড, সিকিম, বিহার, রাজস্থান, জম্মু-কাশ্মীর, আন্দামান নিকোবর এবং অন্যান্য রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে এই প্রবণতা নিম্নগামী।
চলতি বছরে কেরলে মহিলাদের মোট কর্মদিবসে অংশগ্রহণ সবচেয়ে বেশি, ৯১.৩৮ শতাংশ। আর জম্মু-কাশ্মীরে মহিলাদের অংশগ্রহণের গড় সবচেয়ে কম, ৩০.৭২ শতাংশ। তারপরেই স্থান উত্তর প্রদেশ, ৩৩ শতাংশ।
শুধু গ্রামীণ ভারতে মহিলাদের এই দুরাবস্থা নয়, অতিমারীতে সবচেয়ে বেশি কাজ খুইয়েছেন শ্রমজীবী মহিলারা, তারমধ্যেও বিশেষ করে যারা দাঁড়িয়ে আছেন প্রান্তসীমায়, সেই সব তপশিলি জাতি উপজাতি ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মহিলারা।
(তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ২৫ আগস্ট ২০২০)
- অতনু চক্রবর্তী