কমরেড তরুণ প্রকাশ কুন্ডু (জাপানদা) স্মরণে
gar

২৪ জুলাই প্রয়াত হলেন জাপানদা। ১৯৭০ দশক থেকেই বাঁকুড়ার বুকে বিপ্লবী কমিউনিস্ট আন্দোলনের সাথে নিজেকে যুক্ত করেছিলেন। পরবর্তীতে পুনর্গঠনের প্রক্রিয়ায় জেলা সদর বাঁকুড়া শহরের বুকে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে পার্টিকে বুক দিয়ে আগলে ধরে রেখেছিলেন যারা তাদের অন্যতম ছিলেন সকলের প্রিয় জাপানদা, কমরেড তরুণ প্রকাশ কুন্ডু। অত্যন্ত জনপ্রিয় মানুষ ছিলেন। একটা বড় এলাকায় যে কোনো সামাজিক কাজে থাকতেন অগ্রণী ভূমিকায়। একদিকে অত্যন্ত মানবিক, নম্র বিনয়ী ব্যবহার, অপরদিকে যে কোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রামী দৃঢ়তা নিয়ে রুখে দাঁড়ানো এ দুটি দিক মিলেমিশে এক বিশেষ চারিত্রিক গুনাবলী বা বৈশিষ্ট্য ছিলো তাঁর। রাজনৈতিক ভাবে ছিলেন অত্যন্ত নীতিনিষ্ঠ। এসব কারণেই অবিবাহিত এই মানুষটি শহরের বুকে এমনকি শহর লাগোয়া পার্টি কাজের বেশ কিছু গ্রামাঞ্চলেও ছিলেন অত্যন্ত সুপরিচিত এক ব্যক্তিত্ব। শহরের বুকে তাঁর দোকানটা ছিলো অঘোষিত পার্টি অফিসের মতো, গোপন পার্টির সময়কাল থেকে জীবন্ত যোগাযোগের কেন্দ্র। পাশাপাশি বিভিন্ন বামপন্থী ও গণতান্ত্রিক মানুষের মেলামেশার জায়গা। দোকান ব্যবসা সামলেও শহরের বুকে প্রতিটি মিটিং মিছিল ও নানা কর্মসূচীতে তিনি থাকতেন একেবারে সামনের সারিতে। বাঁকুড়া শহরের সতীঘাটে পার্টি অফিস নির্মাণে তাঁর এবং তাঁর ছোট ভাই শহরের সুপরিচিত কমিউনিস্ট বিপ্লবী কর্মী গান্ধীদার বিশেষ সাহসী ভূমিকা ছিলো। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে বেশ কয়েক বছর শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁকে প্রায় গৃহবন্দী জীবন কাটাতে হয়েছে। তবুও পার্টির খোঁজ খবর রাখতেন। বিভিন্ন পরামর্শ দিতেন। অশক্ত শরীর কিন্তু সংগ্রামী মেজাজে ও আশাবাদে ছিলেন ভরপুর। তাঁর প্রয়াণে বাঁকুড়ার বুকে পার্টি-কাজের এক উজ্বল অধ্যায়ের অবসান ঘটলো। তিনি ছিলেন আমাদের মতো সমস্ত সংগঠক ও কর্মীদের প্রতি অত্যন্ত স্নেহপ্রবণ একজন অভিভাবকের মতো। কমরেড জাপানদাকে জানাই অন্তরের শ্রদ্ধা ও লাল সেলাম।

- জয়তু দেশমুখ  

খণ্ড-27
সংখ্যা-26