স্বাধীনতা আন্দোলনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হল গণতন্ত্র, যে কোনো মূল্যেই একে রক্ষা করতে হবে
sadi

এক মহামারীর প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই ভারত স্বাধীনতার ৭৩তম বার্ষিকী উদযাপন করছে। অনেক দেশই এখন যেখানে কোভিড-১৯ অতিমারীর বিপর্যয়কে কাটিয়ে উঠছে, ভারতে এর লেখচিত্র ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে, নতুন সংক্রমিতদের সংখ্যা প্রতিদিনই ৬০,০০০-এর বেশি করে বাড়ছে। সংক্রমিতদের মোট সংখ্যা ২৫ লক্ষ ছাড়িয়ে গেছে এবং এই ব্যাধিতে মৃত্যুর সংখ্যাও প্রায় ৫০,০০০ ছুঁয়েছে। অতএব, ২০২০-র স্বাধীনতা দিবসের পরিমণ্ডল যে যথেষ্ট বিষাদময় তা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে না। অত্যন্ত এলোমেলোভাবে পরিকল্পিত এবং চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত লকডাউন এই বিষণ্ণতাকে তীব্রতর করে তুলেছে, কেননা, এই লকডাউনের পরিণামে ভরতীয় জনগণের বড় অংশকে প্রবল অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়তে হয়েছে, আর সামাজিক বিন্যাসের একেবারে প্রান্তসীমায় থাকা বহু মানুষের কাছে এটা অস্তিত্বের সংকট হয়েই দেখা দিয়েছে।

তবে স্বাধীনতার প্রাণসত্তাকে সবচেয়ে তমসাচ্ছন্ন করে তুলছে ক্ষমতার তখতে থাকা আজকের সরকার, যে প্রতিদিনই সংবিধান এবং ন্যায়, সাম্য, স্বাধীনতা ও সৌভ্রাতৃত্বের সাংবিধানিক নীতিমালাকে প্রহসনে পরিণত করছে। এক কথায়, আমরা এটাকে ভারতের স্বাধীনতার সংকটই বলতে পারি যখন আজকের শাসকরা ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাস, কর্যক্রম ও স্বপ্নের বিপর্যয় ঘটিয়ে তাকে বিকৃত ধারায় লেখার চেষ্টা করছে। স্বাধীনতার সাত দশক পর অধিকাংশ ভারতবাসীর কাছেই আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাস আজ সুদূর অতীতের ব্যাপার বলে মনে হচ্ছে। আজ সংঘ-বিজেপি প্রতিষ্ঠান এই অসংলগ্ন অবস্থাকে পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে সম্মিলিতভাবে পরিকল্পিত আক্রমণ নামিয়ে আনছে স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাস ও ঐতিহ্য এবং তার ফসল সংবিধানের ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত আধুনিক ভারতের গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের ওপর।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের রয়েছে এক সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্র্যময় ইতিহাস যা জাতীয় ঐক্য এবং সাংবিধানিক কাঠামোর ভিত্তি রচনা করে দেয়, যে বিষয়টাকে এখন আমরা প্রশ্নাতীত বলেই মেনে নিয়ে থাকি। আমাদের রয়েছে ১৮৫০-র দশকের সাঁওতালদের হুল বিদ্রোহ এবং অন্যান্য কৃষক-আদিবাসী বিদ্রোহ থেকে শতক কাল ব্যাপী বিস্তৃত জনগণের গৌরবজনক প্রতিরোধের এক বহুমুখী আখ্যান যা শেষ পর্যন্ত বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের উৎখাতে পরিণতি পায়। গোড়ার দিকের কৃষক বিদ্রোহগুলো থেকে গান্ধীর সত্যাগ্ৰহ এবং তেভাগা, তেলেঙ্গানা ও পুনাপ্রা-ভায়লার’র মতো কমিউনিস্ট নেতৃত্বে চালিত কৃষক বিদ্রোহ সমূহ ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনকে ভারতের কৃষক জনগণের দীর্ঘস্থায়ী শক্তিশালী আত্মঘোষণা বলেই প্রতিপন্ন করে। পুরোনো ধারার জমিদারি এবং মহাজনী প্রথা পুরোপুরি বিলুপ্ত না হলেও আগের চেয়ে অবশ্যই অনেক দুর্বল হয়েছে, তবে আজ কর্পোরেট আগ্ৰাসন জমি, জল ও জঙ্গলের ওপর অধিকারের কৃষকের স্বপ্নকে প্রবলভাবে বিপর্যস্ত করে তুলছে।

স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় ভারতের শ্রমিক শ্রেণী আকারে তেমন বড় ছিল না, কিন্তু শ্রমিক শ্রেণী এবং তাদের সংগ্ৰাম স্বাধীনতার জন্য জনগণের আত্মঘোষণাকে শক্তিশালী এবং উদ্দীপিত করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন প্রধানত কমিউনিস্ট এবং সোশ্যালিস্টদের নেতৃত্বেই চালিত হত, তবে লালা লাজপত রাই এবং জওহরলাল নেহরুর মতো কংগ্ৰেসের নেতারা ‘সারা ভারত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্ৰেস’-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন (১৯২০ সালে এআইটিইউসি প্রতিষ্ঠার সময় সভাপতি ছিলেন লাজপত রাই এবং নেহরু তার সভাপতি হন ১৯২৮ সালে)। শ্রমিক শ্রেণীর অধিকার এবং শ্রমিক স্বার্থের অনুগামী আইন প্রণয়নকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ডঃ আম্বেদকর কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করেন। মহারাষ্ট্রের বস্ত্র শিল্পের শ্রমিকদের মধ্যে তাঁর আইএলপি-র (ইন্ডিপেন্ডেন্ট লেবার পার্টি) শক্তিশালী উপস্থিতি ছিল এবং আইএলপি ব্রাহ্মণ্যবাদ/মনুবাদ এবং পুঁজিবাদ এই দুটি বিষয়কে তাদের নিশানা বানিয়েছিল। জাতপ্রথা নিছক শ্রমবিভাজন নয়, বরং হল শ্রমিকদের মধ্যে বিভাজন – তাঁর এই বিখ্যাত উক্তি জাতপাতবাদী উৎপীড়ন ও জাতের উচ্চ-নীচ ভেদ এবং পুঁজিবাদী শোষণের বিরুদ্ধে সংগ্ৰামের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে শ্রেণী হিসাবে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তাকেই সামনে এনেছিল। স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় থেকে অর্জিত শ্রমিকদের অধিকার ও শ্রম আইনগুলো এবং জাতীয়করণের লক্ষ্যে লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে নির্মিত রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রকে প্রণালীবদ্ধভাবে চূর্ণ করার উদ্যোগ এখন সক্রিয়ভাবে চলছে।

স্বাধীনতা আন্দোলন কৃষক ও শ্রমিকদের আন্দোলন হওয়ার সাথে যথার্থ অর্থেই সাধারণ ভারতবাসীর আন্দোলনও ছিল। স্বাধীনতার আকাঙ্খা যখন তীব্রতর হয়ে উঠল, জীবনের সমস্ত ক্ষেত্র থেকে আপামর ভারতবাসী তখন ওই আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। আর সর্বোপরি এটা ছিল তরুণ, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, উজ্জীবিত ভারতবাসীর আন্দোলন যাতে পুরুষদের সঙ্গে নারীরাও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই চালিয়েছিলেন। আমরা যখন স্বাধীনতা আন্দোলনের কথা বলব তখন আমাদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে বেশিরভাগ মানুষ একই সাথে বহুবিধ স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিলেন – জাতপাতবাদী উৎপীড়ন এবং অন্যায় থেকে মুক্তি যেমন স্বাধীনতা আন্দোলনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল, সেরকমই ছিল সমতা এবং পুরুষতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্তির জন্য নারীদের সংগ্ৰাম। একইভাবে, রাজন্য শাসিত রাজ্যগুলোতেও জনগণ লড়াই করছিলেন একই সাথে নিজ-নিজ সামন্ততান্ত্রিক-রাজন্য শাসকদের কবল থেকে এবং ঔপনিবেশিক পরাধীনতা থেকে মুক্তির জন্য। রাজন্য শাসিত রাজ্যগুলোর মধ্যে স্বাধীনতার জন্য এই লড়াই ছাড়া ভারতীয় ইউনিয়নের মধ্যে শতাধিক রাজন্য শাসিত রাজ্যের অন্তর্ভুক্তি এত অনায়াস ও দ্রুত হতে পারত না।

সংগ্ৰাম এবং জনগণকে সমাবেশিত করার রূপ ও পন্থার কথা বিচার করলে দেখা যাবে স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল বিভিন্ন ধারার সংমিশ্রণ, যে ধারাগুলো নিজেদের মধ্যে আদান-প্রদান চালিয়ে একে অপরকে প্রভাবিত করেছিল। কংগ্ৰেস অবশ্য প্রধান মঞ্চ রূপে আত্মপ্রকাশ করেছিল এবং গান্ধী মাঝে-মধ্যেই যে গণ আন্দোলনের ডাক দিতেন তাতেই সারা দেশে সবচেয়ে বেশি জনগণ সাড়া দিতেন। তবে স্বাধীনতা আন্দোলন আকারে বড় হলেও তা কখনই অভিন্ন রূপের ছিল না। ১৯৪০-র দশকের দিকে তাকালে দেখা যাবে, এটা ছিল আন্দোলনের কয়েকটা বড় রূপের একটা বুনট যেখানে গান্ধী ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ডাক দিলেও তাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল জনগণের স্বতস্ফূর্ত আত্মঘোষণা -- সুভাষ বোসের আইএনএ অভিযান, কমিউনিস্টদের নেতৃত্বে চালিত তেভাগা-তেলেঙ্গানা ও অন্যান্য কৃষক অভ্যুত্থানের উদ্যোগুলো, নৌ-বিদ্রোহ এবং শ্রমিক শ্রেণীর শক্তিশালী আন্দোলনসমূহ, এ সবই স্বাধীনতার লক্ষ্যে দেওয়া চূড়ান্ত ধাক্কাটায় অবদান যুগিয়েছিল।

কোনো মতাদর্শগত ধারা যদি স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে দূরে থেকে থাকে এবং এমনকি ব্রিটিশ শাসকদের সঙ্গে সহযোগিতা করে ও নিজেদের সাম্প্রদায়িক এজেণ্ডা দিয়ে স্বাধীনতা আন্দোলনে শুধু বিভেদ সৃষ্টি ও তাকে বিপথে চালিত করতে সহায়তা করে থাকে, তবে সেটা ছিল সাভারকারের হিন্দু মহাসভা এবং হেডগেওয়ারের আরএসএস-কে নিয়ে গঠিত হিন্দু বাহিনী। হিন্দুত্ব ধারা এবং মুসলিম লিগ পরস্পরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা চালিয়ে সাম্প্রদায়িক চ্যুতি-রেখাকে বিস্তৃত করে চলেছিল, এবং ব্রিটিশ উপনিবেশবাদীদের সুচতুর হস্তক্ষেপ ওই ফাটলকে আরও বাড়িয়েই তুলেছিল। এর পরিণামে এমন একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি হল যার মধ্যে দিয়ে সাম্প্রদায়িক রক্তস্নানে কলঙ্কিত হয়ে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষের উচ্ছেদের মর্মঘাতী যন্ত্রণা ও দেশান্তরী হওয়ার বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত দেশভাগের মধ্যে দিয়েই স্বাধীনতার আসা সম্ভব ছিল।

ইতিহাসের এক পরিহাসময় বিকাশে ভারতের ঔপনিবেশিকতা-বিরোধী আন্দোলনে কোন শিকড় না থাকা এই হিন্দুত্ব ধারাই আজ প্রাধান্যকারী মতাদর্শগত-রাজনৈতিক ধারা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। এরাই কেন্দ্রে এবং ভারতের মোট রাজ্যের প্রায় অর্ধেকগুলোতে শাসন ক্ষমতার তখতে বসে আছে এবং আমাদের সাংবিধানিক গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর ওপর ওদের শক্তিশালী কবজাও রয়েছে। সাম্প্রদায়িক বিভাজন এবং দেশভাগের মর্মবেদনা, এবং ঔপনিবেশিক শাসনের নিপীড়ন কৌশলের ভাণ্ডারই হল সেই পরম্পরা যা সংঘ-বিজেপি প্রতিষ্ঠান ভারতের ঔপনিবেশিক অতীত থেকে আহরণ করেছে। কর্পোরেট শাসনের রূপেই পুনরুজ্জীবন ঘটানো হচ্ছে কোম্পানি রাজের, রাষ্ট্রের শাসন পদ্ধতির বুনিয়াদি আইনি পরিকাঠামো রূপে পুনরায় তুলে আনা হচ্ছে দানবীয় আইনগুলোকে, কেন্দ্রীভবনের স্টিমরোলার চালিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বৈচিত্র্য ও যুক্তরাষ্ট্রীয় অধিকারকে এবং সংখ্যাগুরুবাদী আধিপত্যের ও সংখ্যালঘুদের প্রণালীবদ্ধভাবে কোণঠাসা করার রূপেই জাতীয়তাবাদের নতুন ভাষ্য হাজির করা হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তুষ্ট করতে ভারতের বিদেশ নীতি যখন প্রতিবেশী দেশগুলো এবং পূর্বেকার মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে বিচ্ছিন্নতা ঘটাচ্ছে, তখন নিজেদের বেছে নেওয়া সাম্রাজ্যবাদী নির্দেশ মুক্ত পথে চলার অধিকারকে ক্রমেই আরও বেশি করে বন্ধক দেওয়া হচ্ছে মার্কিন-ইজরায়েল রণনৈতিক অক্ষের স্বার্থের কাছে। এবং অর্থনৈতিক নীতিমালা ‘আত্মনির্ভর ভারত’-এর ভেক নিয়ে আড়াল করছে বিশ্ব পুঁজি এবং বিদেশী কর্পোরেশনগুলোর ওপর ক্রমবর্ধমান নির্ভরতাকে।

বাস্তবের যে রূপের মুখোমুখি আজ আমরা দাঁড়িয়ে, সে সম্পর্কে কোন ধরনের সতর্কবার্তা স্বাধীনতা আন্দোলন কি আমাদের দিয়েছিল? হ্যাঁ, অবশ্যই দিয়েছিল। স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশ নেওয়া ভগৎ সিং আমাদের হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছিলেন যে, স্বাধীনতার অর্থ হতে হবে ঔপনিবেশিক শাসনধারা এবং জমিদার ও পুঁজিপতি শ্রেণীর শাসনের সঙ্গে সম্পূর্ণরূপে ছেদ ঘটানো, অন্যথায়, স্বাধীনতা শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশদের শাসন থেকে তাদের উত্তরাধিকারী বাদামি সহেবদের শাসনভার অধিগ্ৰহণের পর্বান্তরে অধঃপতিত হবে। সে সময় ডঃ আম্বেদকরও ছিলেন, যিনি ওপর-ওপর রাজনৈতিক সমতা এবং প্রচ্ছন্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক অসাম্যের মধ্যে অন্তর্নিহিত চাপা উত্তেজনার দিকে, ব্যক্তিপূজার চোরাবালির মধ্যে স্বৈরাচারের খাঁচায় গণতন্ত্রের বন্দী হওয়ার বিপদ সম্পর্কে এবং সামাজিক দিক থেকে উৎপীড়িত ও সংখ্যালঘুদের ন্যায় ও স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করতে হিন্দুরাজের জাতপ্রথা আরও শক্তিশালী করে তোলার সম্ভাব্য বিপর্যয়ের দিকে আমাদের দৃষ্টিকে নির্দেশিত করেছিলেন।

নরেন্দ্র মোদী আমাদের বলে চলেছেন যে গত সত্তর বছরে ভারতে ভালো কিছুই ঘটেনি। তিনি প্রকৃতই কী করতে চাইছেন এই মন্তব্য সে সম্পর্কে আমাদের একটা সুস্পষ্ট ও অকপট ধারণা দেয় -- সাংবিধানিক গণতন্ত্র থেকে যেটুকু সুবিধা আমরা পেয়েছি তিনি সেটাকে ধ্বংস করতে চাইছেন এবং আমাদের পিছিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন দেশভাগের মর্মবেদনা এবং সাম্প্রদায়িক সন্দিগ্ধতা ও ঘৃণার পরিস্থিতির মধ্যে, যার ধাক্কাকেই কাটিয়ে উঠে ভারত সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাইছে। আর এজন্য তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনের স্বপ্ন ও মূল্যবোধ তথা সংবিধানের প্রস্তাবনায় ঘোষিত দায়বদ্ধতার সাপেক্ষে পূর্ববর্তী সরকারগুলোর পাহাড়প্রমাণ বিশ্বাসঘাতকতাকেই পুঁজি করছেন। আমাদের তথা ভারতের জনগণের কাছে বার্তাটা জোরালো ও সুস্পষ্ট হয়েই পৌঁছচ্ছে। গণতন্ত্রের বিস্তার এবং জনগণের অধিকার ও অংশগ্ৰহণের ব্যাপারে যে সুবিধাগুলো আমরা অর্জন করেছি সেগুলোকে ধরে রাখতে এবং তাদের আরও সম্প্রসারণ ঘটাতে হবে। এই গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রকে ফ্যাসিবাদী হিন্দু রাষ্ট্রে অধঃপতিত হওয়া থেকে -- যা হলে কর্পোরেটরাজ এবং অত্যাচারী প্রশাসনিক ধারা আমাদের সমস্ত সম্পদ ও অধিকারকে পদদলিত করবে -- রক্ষা করতে হবে। ফ্যাসিবাদের কবল থেকে মুক্তি চাই -- এটাই হোক ২০২০’র স্বাধীনতা দিবসের রণধ্বনি।

(এম-এল আপডেট সম্পাদকীয় ১৮ আগস্ট ২০২০)  

খণ্ড-27
সংখ্যা-30