গত ২৬ জুলাই বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে এ্যাম্বুলেন্সের সামনে আমাদের এক সহনাগরিকের মৃত্যু জেলার সমস্ত মানুষকে বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। এই মৃত্যু সভ্যতার লজ্জা, অমানবিকতার চুড়ান্ত নিদর্শন। একটি মহকুমা হাসপাতালের রেফার করা রোগীকে এ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই ! এটা নিছক মৃত্যু নয়, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অপদার্থতার কারণে এটা হত্যা! একথা উল্লেখ করে এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি দাবি করে উত্তর ২৪ পরগণা জেলা স্বাস্থ্য অধিকর্তার কাছে সিপিআই (এম-এল) লিবারেশানের জেলা সংগঠনের পক্ষ থেকে এক স্মারকলিপি পাঠানো হয়। ঐ স্মারকলিপিতে আরও হুঁশিয়ারী দেওয়া হয় যাতে জেলায় ও রাজ্যের আর কোথাও এই ধরনের অমানবিক আচরণের মুখোমুখি না হতে হয় কোনো রোগীকে।
বনগাঁ মহকুমায় প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের বাস। ৪ মাস পার হয়ে গেল, অথচ এই অঞ্চলে কোভিড চিকিৎসার কোন ব্যবস্থাই গড়ে তোলা হলো না! প্রতিদিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, আর জনসাধারণ বিশেষ করে গ্রামীণ গরিব মানুষেরা অসহায় ভাবে আতঙ্কে দিন গুনছেন। স্মারকলিপিতে দাবি করা হয়েছে, দ্রুত বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিট সহ ১০০ বেডের কোভিড হাসপাতাল, প্রতিটি পৌরসভা ও ব্লকে মৃদু সংক্রমিত করোনা রোগীদের জন্য ডাক্তার, নার্স, চিকিৎসা পরিষেবা সহ সেফ হোম, গ্রামেগঞ্জে ভ্রাম্যমান গাড়িতে টেস্টের ব্যবস্থা, করোনা রোগী পরিবহনের জন্য দু’জন হেল্পার সহ এ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থ এবং প্রতিটি ওয়ার্ড-গ্রামে হেল্প ডেস্ক চালু করতে হবে। জেলার সমস্ত মহকুমাতেই এই ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
উপরোক্ত কাজগুলো এড়িয়ে গিয়ে পুলিশের-লাঠি-রক্তচক্ষু দেখিয়ে খাপছাড়া লকডাউন জনগনের উপর চাপিয়ে দিয়ে এই সমস্যার মোকাবিলা করা সম্ভব নয় এটা আপনিও (সিএমওএইচ) বোঝেন। আমরা চাই করোনা মোকাবিলায় অঞ্চলের আগ্রহী ছাত্র-যুব ও সমাজকর্মীদের অংশগ্রহণ ও সামাজিক সংহতি। জেলা স্বাস্থ্য প্রশাসনের উদ্যোগ ও হস্তক্ষেপ দেখেই আমরা পরবর্তী জনআন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করব।
স্মারকলিপির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, উত্তর ২৪ পরগণা জেলাশাসক ও বনগাঁ মহকুমা শাসকের উদ্দেশ্যে।