উত্তরপ্রদেশে নারী-বিরোধী হিংসা ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে। সম্প্রতি আমেথির দুই মহিলা (মা ও মেয়ে) ন্যায়বিচারের দাবিতে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সচিবালয় লোকভবনের সামনে আত্মাহুতি দেওয়ার লক্ষ্যে গায়ে আগুন দেন। তাঁদের দেহ যথাক্রমে ৮০ শতাংশ ও ২০ শতাংশ পুড়ে যায়। এই সবের বিরুদ্ধে আইপোয়া সারা রাজ্যে ২১ জুলাই প্রতিবাদ সংগঠিত করে। প্রতিবাদের সময় মহামারী সংক্রমণ ঠেকাতে দূরত্ব বিধি ও অন্যান্য নিয়ম মানা হয়। তাঁরা উত্তরপ্রদেশে চলা গুণ্ডারাজ এবং দরিদ্র, দলিত, আদিবাসী ও নারীদের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের নামিয়ে আনা নিপীড়নের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেন।
সেদিনের প্রতিবাদ কর্মসূচীতে আইপোয়ার রাজ্য সভাপতি কৃষ্ণা অধিকারী বলেন, উত্তরপ্রদেশের জনগণ যখন মহামারীর মোকাবিলায় তীব্র সংগ্ৰাম করছেন, বিজেপি শাসনাধীনে তখন নারীদের বিরুদ্ধে হিংসা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের সামনে দুই মহিলার আত্মাহুতির চেষ্টা দেখিয়ে দিচ্ছে যে এই রাজ্যে দরিদ্রদের জন্য ন্যায়বিচারের দরজা বন্ধ হয়েই রয়েছে। উচ্ছেদের লক্ষ্যে এই সরকার দলিত ও আদিবাসীদের ওপর নিপীড়নকেও যথেষ্ট মাত্রায় বাড়িয়ে তুলেছে। লক্ষ্ণৌ, সোনভদ্র, চন্দৌলি, কানপুর, লখিমপুর, আজমগড়, প্রভৃতি স্থান থেকে এই ধরনের নিপীড়নের খবর পাওয়া গেছে, কিন্তু কোনো এফআইআর করা হয়নি এবং কেউ গ্ৰেপ্তারও হয়নি।
সেদিনের কর্মসূচীতে নিম্নলিখিত দাবিগুলোকে তুলে ধরা হয়।
- মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের সামনে দুই মহিলার আত্মাহুতির চেষ্টার হৃদয়বিদারক ঘটনায় আইপোয়া তীব্র ক্রোধ ব্যক্ত করছে, প্রবল রূপে অগ্নিদগ্ধ হওয়া সাফিয়ার জন্য উচ্চ পর্যায়ের চিকিৎসা প্রদানের এবং তাঁর মেয়ের জন্যও যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবি জানাচ্ছে। আমেথিতে তাঁদের জমি বিবাদের ঘটনায় সত্বর ন্যায়বিচারের দাবিও আমরা জানাচ্ছি।
- অযোধ্যার হায়দারগঞ্জ থানার সানওয়ারধির গ্ৰামে সামন্ততান্ত্রিক শক্তির হাতে দলিত মহিলাদের শ্লীলতাহানির ঘটনায় এবং ওই ঘটনায় শ্লীলতাহানির শিকার দলিত মহিলাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা এফআইআর হওয়ার ব্যাপারে আইপোয়া তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছে। এই ঘটনার সময় সংঘর্ষে যে দলিত মহিলারা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা আহত হন আইপোয়া তাঁদের প্রতি সংহতি এবং তাঁদের ডাক্তারি পরীক্ষা ও যথাযথ চিকিৎসার দাবিও জানায়। এই গ্ৰামের যে সমস্ত দলিত পরিবার ন্যায্য মজুরির জন্য দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করছেন আইপোয়া তাদের প্রতি সংহতি জানাচ্ছে।
- চন্দৌলি জেলার চাকিয়া ব্লকে শাসক শক্তি সমর্থিত জেলা পঞ্চায়েত সদস্য মহেন্দ্র রাও দুই দলিত মহিলাকে অর্ধনগ্ন করে প্রহার করে। এই ঘটনায় আইপোয়া তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছে এবং নিগৃহীত দুই মহিলার প্রতি সংহতি জানিয়ে তাদের যথাযথ চিকিৎসার দাবিকে তুলে ধরছে। মূল অভিযুক্তর নামে এফআইআর করার দাবিও আমরা রাখছি।
- মির্জাপুরে আইপোয়া নেত্রী জিরা ভারতির ওপর যৌন হেনস্থার পর ২০ দিন পেরিয়ে গেলেও দুষ্কৃতীরা এখনও অধরা। আইপোয়া আক্রমণকারীদের অবিলম্বে গ্ৰেপ্তারের দাবি জানাচ্ছে, এবং তা না হলে মিরজাপুর জেলার জেলাশাসক ও এসপি-কে সাসপেন্ড করতে হবে।