খবরা-খবর
জেলায় জেলায় স্বাধীনতা দিবস উদযাপন
dis

(গত সংখ্যায় কয়েকটি জেলার রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছিল। এই সংখ্যায় বাকি কয়েকটি দেওয়া হল)

দক্ষিণ ২৪ পরগণা

১৫ আগষ্ট সংবিধান বাঁচাও, গণতন্ত্র বাঁচাও কর্মসূচীর অঙ্গ হিসাবে দঃ ২৪ পরগণা জেলা অফিসের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ সংগঠিত হয়। উপস্থিত ছিলেন জেলা সম্পাদক কিশোর সরকার, লক্ষীকান্ত অধিকারী, অঞ্জন ঘোষ, দেবাশীষ মিত্র সহ আরো অনেকে। জেলা সম্পাদক তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন যে আরএসএস গোটা স্বাধীনতা আন্দোলনে বিশ্বাসঘাতকতা করে এসেছে, তারা আজ দেশপ্রেমের নামে দেশের সংবিধান-গণতন্ত্র ধ্বংস করছে। এদের পরাস্ত করতে হবে, গণতন্ত্র রক্ষার্থে সমস্ত গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

নদীয়া

নদীয়া জেলার ধুবুলিয়ায় নেতাজি পার্কে গত ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করা হয়। স্বাধীনতার ৭৪ বছরে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন আমরা দেখেছিলাম তাকে ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের দেশের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষার যে বিষয়গুলি ছিলো আজ তাকেও সম্পূর্ণ নাকচ করে দেওয়া হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার জন্য শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচী পালন করা হলো। সিপিএম, আরএসপি সহ বামপন্থী দলগুলির যৌথ উদ্যোগে এই কর্মসূচী সংগঠিত হয়। জাতীয় কংগ্রেসও এতে অংশগ্রহণ করে।

ঐ দিন নাকাশীপাড়া ব্লকের যুগপুর বাজারেও পার্টির পক্ষ থেকে স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়।

deeess

৭৪ তম স্বাধীনতা দিবসে ‘সংবিধান বাঁচাও, গণতন্ত্র বাঁচাও এবং দেশ বাঁচাও’ কর্মসূচী বেলঘরিয়ায়

১৫ আগস্ট ২০২০ বেলঘরিয়া, সিপিআই(এমএল) লিবারেশন রাজ্য সম্পাদক পার্থ ঘোষ জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে কর্মসূচির সূচনা করেন। বেলঘরিয়া আঞ্চলিক কমিটির সম্পাদক অশোক সাহা উপস্থিত সবাইকে সমবেতভাবে সংবিধানের প্রস্তাবনা পাঠ করিয়ে সংবিধান রক্ষা করার শপথ গ্রহণ করান। সোমা দাশগুপ্তের রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশনা, অয়ন গুহ রায়ের স্বরচিত কবিতা পাঠ এবং করোনা জয়ী কমরেড সুবীর দাশগুপ্তের উপস্থিতি সভাকে অন্য মাত্রা দেয়। সুবীরকে পুষ্পস্তবক দিয়ে সম্বর্ধিত করা হয়। তিনি তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে চিকিৎসা পাওয়া ও সুস্থ হয়ে ওঠার প্রক্রিয়ায় নার্সিং হোমের অকর্মণ্যতা, সরকারি হাসপাতালে ভর্তির হয়রানির কথা উল্লেখ্য করেন। বাঙ্গুর কোভিড হাসপাতালের চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে তিনি বাড়ি ফেরেন। এই হাসপাতালের রোগী পরিচর্যা ও নার্সিং পরিষেবা সন্তোষজনক বলে তিনি জানান। তার বার্তা, ‘ভয় পাবেন না, পরস্পরকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসুন’, যে সাহায্য তিনি পেয়েছিলেন তার পরিবার, বন্ধু ও প্রতিবেশীদের থেকে।

vee

 

রাজ্য সম্পাদক পার্থ ঘোষ তাঁর হৃদয়গ্রাহী বক্তব্যে, সিদো কানহুর লড়াই, ১৮৫৭’র মহাবিদ্রোহ থেকে স্বাধীনতা আন্দোলনে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধিতার বিস্তৃত প্রেক্ষাপট এবং স্বাধীনতা পরবর্তী গণসংগ্রামের উজ্জ্বল মুহূর্তগুলি তুলে ধরেন। স্বাধীনতা আন্দোলনের দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় কোথাও ছিল না গেরুয়া বাহিনীর পূর্বসূরীরা। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের দালালি আর ভারতীয় জনগণের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা দিয়ে তাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল, আজও তা অব্যাহত -- সে কথাই তিনি তথ্যসহ তুলে ধরেন। বিপরীতে কমিউনিস্টদের মানুষের পাশে থাকার, উজ্জ্বল ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন কেন্দ্রের বিজেপি সরকার দেশের সমস্ত সম্পদ ও সরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বেসরকারি কর্পোরেটদের হাতে তুলে দিয়ে অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে, ভারভরা রাও সহ বহু প্রতিবাদী কণ্ঠকে বিনা বিচারে কারারুদ্ধ করছে, কাশ্মীরে মানবাধিকার ছিটেফোঁটাও অবশিষ্ট নেই। নিজেদের কলঙ্কিত অতীতকে আড়াল করা এবং হিন্দুরাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্য নিয়ে রাম মন্দিরের ভূমি পূজনের দিনকে স্বাধীনতা দিবসের সাথে তুলনা করছে। এই মূঢ় স্পর্ধায় তারা অসংখ্য স্বাধীনতা সেনানীর আত্মত্যাগ ও আত্মবলিদানের অবমাননা করেছে। শেষে তিনি ফাসিবাদী বিজেপিকে রুখতে ব্যাপকতম ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান রাখেন।

মনোবিদ গোপাল শেঠিয়া তার বক্তব্যে বর্তমান পরিস্থিতিতে শিশুদের চাপমুক্ত রাখার ও তাদের সময় দেওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি আরও বলেন, এই সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সতর্কতা নিয়ে স্বাভাবিক কাজকর্ম চালিয়ে যাওয়াই সুস্থ থাকার উপায়। শিবশঙ্কর গুহরায় স্বাধীনতা আন্দোলনে কমিউনিস্টদের বিপ্লবী ভূমিকা নিয়ে তথ্যপঞ্জি রাখেন। এআইএসএ এবং এআইপিডাব্লিউএ থেকে বক্তব্য রাখেন যথাক্রমে সায়ন্তন মিত্র ও অর্চনা ঘটক। সভার সঞ্চালক ছিলেন নবেন্দু দাশগুপ্ত।

- নবেন্দু দাশগুপ্ত  

খণ্ড-27
সংখ্যা-30