৩ জুলাই দেশব্যাপী প্রতিবাদ দিবসকে সফল ভাবে সংগঠিত করার জন্য কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলো অভিনন্দন জানাচ্ছে শ্রমিক শ্রেণিকে।
কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলোর সংযুক্ত মঞ্চ, স্বাধীন সেক্টর ভিত্তিক ফেডারেশন ও এসোসিয়েশন ২-৩-৪ জুলাই, এই তিন দিন ব্যাপী সফল ধর্মঘটের জন্য সমস্ত কয়লা শিল্পের শ্রমিকদের অভিনন্দন জানাচ্ছে। এই ধর্মঘটের ফলে কোল ইন্ডিয়া ও এসএসসিএল-এর অধীনে সমস্ত কয়লা খনি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজকর্ম থমকে যায়, সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায় কয়লা উত্তোলন। ধর্মঘট ডাকা হয়েছিল গোটা কয়লা শিল্পকে পুরোপুরি বেসরকারী সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে। এই বেসরকারীকরণের ফলে শুরু হবে কয়লা ক্ষেত্রে অনিয়ন্ত্রিত বাণিজ্যিক খনন ও বাণিজ্য, যেখানে অংশ নেবে বেসরকারী সংস্থাগুলোর সাথে বিদেশি সংস্থা, যা শেষ পর্যন্ত জাতীয় স্বার্থ ও আত্মনির্ভরতার বিরুদ্ধেই যাবে। ধর্মঘটের ফলে ব্যাহত হয় ৯০ লক্ষ কয়লা উৎপাদনও সরবরাহ।
কয়লা শিল্পের শ্রমিক ও ইউনিয়নগুলো দেশের শক্তি সংক্রান্ত নিরাপত্তা এবং আত্মনির্ভরতার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ ও বীরত্বপূর্ণ লড়াই চালিয়ে এসেছে যাতে দেশি বিদেশি কর্পোরেট দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদ স্রেফ মুনাফার তাগিদে লুন্ঠন করতে না পারে।
বাণিজ্যিক খননের সিদ্ধান্ত থেকে সরকারকে সরে আসতে হবে, সিএমপিডিআইকেসিআইএল থেকে বিযুক্ত করার পলিসি ও প্রত্যাহার করে ইউনিয়নগুলোর পেশ করা দাবি সনদে যে চুক্তি হয়েছিল, সরকারকে সেটা কার্যকরী করতে হবে।
কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলো সারা ভারতের শ্রমিকশ্রেণিকে অভিনন্দন জানাচ্ছে ৩ জুলাই দেশব্যাপী প্রতিবাদ দিবসকে সংগঠিত করার জন্য, যা পালিত হয় কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রমিক বিরোধী জনবিরোধী সরকারী নীতিকে বিরোধিতা করতে। আমরা এটাও লক্ষ্য করছি, কিষাণ সংগঠনগুলোর যৌথ মঞ্চ ও ৩ জুলাইয়ের কর্মসূচীর প্রতি সংহতি জানায়।
উদ্ধত কেন্দ্রীয় সরকার রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থাগুলোকে বেসরকারী হাতে তুলে ও বেচে দিতে ক্রমশ অগ্রসর হচ্ছে। এর ফলে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র, যেমন প্রতিরক্ষায়, বিদেশি পুঁজির অনুপ্রবেশে ৪৯ থেকে ৭৪ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়পত্র দিয়ে দিল, ৪১টা প্রতিরক্ষা কারখানাকে কর্পোরেটকরণের সম্মতি দেওয়ায় তা বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতীয় রেলকেও ধাপে ধাপে বেসরকারীকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আর সম্প্রতি স্থির করেছে ১৫১টা ট্রেনকে বেসরকারী সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হবে। ওই সব ট্রেনগুলো রেলেরই কর্মী ও পরিকাঠামো ব্যবহার করে চলবে অত্যন্ত লাভজনক রুটে, পকেটে পুরে নেবে বিরাট মুনাফা। এরই সাথে গত দু-মাসের মধ্যে ২২ বার পেট্রল ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি ঘটিয়ে আমজনতার উপর চাপানো হলো বিরাট বোঝা।
কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলো শীঘ্রই পরবর্তী আন্দোলনের কর্মসূচী নির্ধারণ করবে, সরকারের জনবিরোধী নীতিগুলোকে অমান্য ও অসহযোগ করে নির্দ্ধারণ করবে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা।
তারিখ : ৪ জুলাই, ২০২০
স্বাক্ষরকারী ট্রেড ইউনিয়ন:
এআইসিসিটিইউ, আইএনটিইউসি, সিআইটিইউ, এআইটিইউসি, ইউটিইউসি
এআইইউটিইউসি, টিইউসিসি, এইচএমএস, সেবা, এলপিএফ