পুর্ব বর্ধমান জেলার বর্ধমান সদর ১নং ব্লকের বন্ডুল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কামারকিতা গ্রামে ২০১৫/১৬ সালে ১৫ দিন একশো দিনের কাজ করানো হয়েছিল। শতাধিক মানুষকে এখনও তার মজুরি দেওয়া হয়নি। বারবার বলার পরও মজুরি পাওয়ার ব্যবস্থা হয়নি। উল্টে তৃণমূল নেতারা সন্ত্রাস দেখিয়ে মানুষের মুখ বন্ধ করে রেখেছিল। পঞ্চায়েত নির্বাচনে জোর করেই ক্ষমতাসীন হয়েছে। কিন্তু তারপর থেকে আর কাজ দেওয়া হলনা, পুরনো মজুরিও দেওয়া হল না। বর্তমান লকডাউনের পরিস্থিতি ও আমফান ঝড়ের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর মানুষের চরম দুর্ভোগের মধ্যেও তৃণমূল নেতারা মানুষকে বঞ্চিত করে চলেছেন। তাই মানুষের ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙ্গে যায়। মানুষ সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের নেতৃত্বে শাসকের সন্ত্রাস অগ্রাহ্য করেই বিক্ষোভে সামিল হন। প্রধানকে চাপ দেওয়া হয়। কোনো সদুত্তর না পেয়ে বিডিও-কে জানানো হয়। এবং ডেপুটেশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে তারিখ জানানো হয়। খবর পেয়ে বিডিও সিপিআই(এম-এল) লিবারেশনের প্রতিনিধিদের নিয়ে প্রধান ও পঞ্চায়েত সমিতির লোক নিয়ে বৈঠক করেন। ডেপুটেশনের আগেই গ্রামে কাজ দিতে শুরু করে। গ্রামে সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের জেলা সম্পাদক সলিল দত্তর নেতৃত্বে জনগণকে নিয়ে বৈঠক করা হল। ১৩ জুলাই ডেপুটেশন সংগঠিত হয়। দাবি ছিল,
১) ১০০ দিনের কাজের বকেয়া মজুরী অবিলম্বে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। যাদের জবকার্ড নেই তাদের জবকার্ড দিতে হবে। ১০০ দিনের কাজ চালু রাখতে হবে।
২) প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর নিয়ে দলবাজী দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। প্রকৃত পাপকদের তালিকা অনুযায়ী অগ্রাধিকার দিতে হবে।
৩) বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
ডেপুটেশনে ৪০ জন, বিশেষ করে ভাল সংখ্যক মহিলাদের অংশগ্রহণ ছিল। উপস্থিত ছিলেন জেলা সম্পাদক সলিল দত্ত ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সমীর হাজরা ও কমরেড করুনা মুখার্জি, এই দুই জন প্রতিনিধির সাথে বিডিও আলোচনা করেন। বিক্ষোভে খালি গলায় বক্তব্য রাখেন জেলা কমিটির সদস্য শ্রীকান্ত রানা। ডেপুটেশন শেষে করুনা মুখার্জির বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে সভার কাজ সমাপ্ত হয়। বিডিও বকেয়া মজুরির ব্যপারে তদন্ত করে মজুরী দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন বলেন। কাজ চালু রাখার চেষ্টা করবেন। বার্ধক্য ভাতার ফরম জমা দিতে বললেন। অন্যান্য দাবির বিবেচনা করবেন বলেন। এই ডেপুটেশন এলাকার মানুষের মধ্যে ভালো উৎসাহ সৃষ্টি করেছে।