ঘূর্ণিঝড় আমফানের পরেই তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত কলকাতা পুরসভার অপদার্থতা প্রকাশ্যে চলে আসে।কলকাতা শহরের ১০৩, ১০৪, ১০৫, ৯২, ৯১ সহ অসংখ্য ওয়ার্ডে বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ থাকে প্রায় ৪/৫ দিন। সিইএসসি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকেও অবস্থা সামাল দিতে পর্যাপ্ত প্রস্তুতির অভাব স্পষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে এলাকায় এলাকায় শুরু হয় অবরোধ-বিক্ষোভ।
এর মধ্যেই ২৩ তারিখ হামলা হয় ৯২ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিআই কাউন্সিলর মধুছন্দা দেব-এর ওপর। স্থানীয় ১০৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তরুণ মন্ডলের বাহিনী আচমকাই হামলা চালায় বামপন্থী কাউন্সিলর ও তার সমর্থকদের ওপর। ৯২নং ওয়ার্ডের ৮-নম্বর শহীদনগর এলাকায় সিইএসসি-র কর্মীদের নিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার কাজ করছিলেন মধুছন্দা দেব। সেই সময় তৃণমূল কাউন্সিলর তরুণ মন্ডলের অনুগামীরা দাবি জানায়, তারা ওই সিইএসসি-র টিমকে নিয়ে তাদের ওয়ার্ডে কাজ করাবে।
বামপন্থী কাউন্সিলর ও উপস্থিত এলাকাবাসী এর প্রতিবাদ করেন। তখনই স্থানীয় গড়ফা থানার পুলিশের উপস্থিতিতেই শারীরিকভাবে হেনস্থা করা হয় ষাটোর্দ্ধ পেরোনো এই কাউন্সিলরকে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন, ঢাকুরিয়া এলাকার সিপিআইএম নেতা অচ্যুত চক্রবর্তীও। এই খবর এলাকার বিভিন্ন বামপন্থী কর্মীদের কাছে পৌঁছলে জড়ো হয়ে যান বহু মানুষ।
শহীদনগরের ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়, সিপিআই(এমএল) লিবারেশন-এর যাদবপুর-ঢাকুরিয়া লোকাল কমিটির সদস্যরাও। সেখানেই বিভিন্ন দলগুলোর পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এই ঘটনার প্রতিবাদে মিছিল করা হবে এলাকায়। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সিপিআই, সিপিআই(এমএল), সিপিআই(এম) ও আরএসপি-র পক্ষ থেকে এলাকায় ধিক্কার মিছিল বেরিয়ে সেলিমপুর পর্যন্ত যায়। তার পরে চারটি বাম দলের পক্ষ থেকে এক প্রতিনিধি দল গড়ফা থানায়, দোষীদের গ্রেপ্তারির দাবিতে ডেপুটেশন জমা দেয়। সেই প্রতিনিধি দলে সিপিআইএমএল)-এর পক্ষ থেকে লোকাল সম্পাদক কম: বাবুন চ্যাটার্জি প্রতিনিধিত্ব করেন।
এই তৃণমূলী কাউন্সিলর তরুণ মন্ডল, এর আগেও একাধিক বার বিভিন্ন বামপন্থী কর্মীর ওপর আক্রমন করেছে। কয়েক দিন আগেই লকডাউনের ত্রাণ-বিলি বন্ধ করতে হামলা হয় লোকাল পার্টির সম্পাদক বাবুন চ্যাটার্জির ওপর। তৃণমূলী গুন্ডাদের এই নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে আগামী দিনে বামপন্থী দলগুলো ঐক্যবদ্ধ ভাবে এলাকায় প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।