পৃথিবী আজ এক অভূতপূর্ব সংকটে। ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র এক জীবাণু বিভিন্ন মহাদেশ পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে প্রায় দু’শোটি দেশে। দুনিয়া জুড়ে বিছিয়ে দিয়েছে এক অজানা আতঙ্কের রহস্যময় চাদর।
কিন্তু আপাতত মানবদেহই বুঝি তার একমাত্র লক্ষ্য। এই মৃত্যুমিছিলের আবহে প্রকৃতি কিন্তু ক্রমশ নির্মলতর, উজ্জ্বলতর হয়ে উঠছে। এত দুঃখেও কেউ পরিহাসছলে বলছেন, পৃথিবী নাকি তার অটো-ইমিউনাইজেশন সিস্টেমকে সক্রিয় করতেই এই জীবাণুর আমদানি করেছে! সত্যি, গতবছর যখন সেই ছোট্ট মেয়েটি, গ্রেটা থুনবার্গ রাষ্ট্রসঙ্ঘে লাঞ্ছিতা পৃথিবীর, ভয়াল সংকটে থাকা পরিবেশের কথা বলতে গিয়ে ক্ষোভে দুঃখে আত্মহারা হয়ে গিয়েছিল, বাষ্পরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল তার কণ্ঠ, ক’জন রাষ্ট্র প্রধান গুরুত্ব দিয়েছিলেন তার কথায়? আবেগে? কিন্তু আজ জনাকীর্ণ ঘিঞ্জি মহল্লাতেও যখন কুণ্ঠিত অস্তিত্ব নিয়ে বেঁচে থাকা সবুজ হঠাৎ ফলে ফুলে প্রাণের হিল্লোলে ভরে উঠেছে – মানুষের মৃত্যু আতঙ্কের পরোয়া না করে, নিত্য নতুন পাখিদের জলসায় ভরে থাকছে সারাটা দিন – তখন মনে হচ্ছে পরিবেশপ্রেমী সেই বালিকার ইচ্ছে হয়তো আপাতত কিছুটা পূর্ণ হয়েছে! – কিন্তু তার জন্যে মানবসমাজকে গুণতে হয়েছে অভূতপূর্ব মাশুল, হারাতে হয়েছে আজ এইমুহূর্ত পর্যন্ত প্রায় আড়াই লক্ষ প্রাণ!
কল্পবিজ্ঞানের কোনো লেখকও এমন ভয়ঙ্কর একটি পরিস্থিতির কথা ভাবতে পেরেছেন কিনা জানিনা, যা ওলট পালট করে দিয়েছে গোটা দুনিয়াকে। কিন্তু এমন অতলান্তিক বিপন্নতার মধ্যেও বেঁচে আছে, টিঁকে রয়েছে, অতি সক্রিয় হয়ে উঠছে পৃথিবীর আদিমতম এক ভাইরাস – গার্হস্থ্যহিংসা তথা লিঙ্গবিদ্বেষ। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় গোটা পৃথিবী জুড়ে চলছে লকডাউন।আর তার মধ্যেই বিশ্বের সমস্ত প্রান্তে বেড়ে চলেছে গৃহহিংসা অভাবনীয় হারে। যার জন্য রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুটারেসকে ট্যুইটারে লিখতে হয়েছে “I urge all governments to put women's safety first as they respond to the pandemic”। কেমন তার গতিধারা? সেই প্রসঙ্গে ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটির সমাজতত্ত্ববিদ মন্তব্য করেছেন “Domestic abuse is acting like an opportunistic infection flourishing in the conditions created by the pandemic”
১) নানুরের এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ শ্বশুরবাড়ির অশান্তির জেরে পালিয়ে বাপেরবাড়ি (বাঁকুড়ার পাত্রসায়র) যাওয়ার জন্য শনিবার সকাল থেকে রেললাইন ধরে ২৫ কিমি পথ একাকী হেঁটে ক্লান্ত, বিপর্যস্ত হয়ে পড়লে স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশ তাকে বনপাস স্টেশন থেকে উদ্ধার করে বাড়ি পাঠায়, কোর্টের নির্দেশে। স্বামী তার, মহারাষ্ট্রের কর্মস্থলে আটকে রয়েছেন। অভিযোগ, শনিবার সকালে বধূ একাই বোলপুর থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে, তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর সে নিরুপায় হয়ে হাঁটতে শুরু করে।
২) ১৮ এপ্রিল জামাই আতিয়ারের অনৈতিক কাজে বাধা দিতে গিয়ে খুন হয়েছেন ভাঙড় থানার কাশীপুর জামাইপাড়ার আমিনা বিবি। ৯ দিন পর গ্রেপ্তার হল আতিয়ার মোল্লা।
৩) অন লাইন লুডোয় হেরে বেধড়ক মার স্ত্রীকে, শিরদাঁড়ায় গুরুতর আঘাত। গুজরাতের ভদোদরার ঘটনা।
৪) নাগপুরের হুড়কেশ্বর এলাকায় বিক্রান্ত পিল্লেওয়ার নামে এক যুবক রাগের বশে শুধু বাবার ঘাড়ে কামড় বসিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, যৌনাঙ্গও কেটে নিয়েছে। প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। (এই সময়,২৮এপ্রিল) এক দিনেই এতগুলো খবর। তালিকা দীর্ঘায়িত করে লাভ নেই। হয় স্বামী বা শ্বশুরবাড়ির পরিজনদের দ্বারা বধূনির্যাতন, নয় ছেলে-বৌয়ের হাতে বৃদ্ধ বৃদ্ধার নিগ্রহ, শিশু নির্যাতন, বাবা কাকা জ্যাঠা দাদার দ্বারা শারীরিক ও মানসিক পীড়ন, হ্যাঁ যৌননির্যাতন ও পারিবারিক পরিসরের মধ্যেই আপাত দুর্বলের উপর আপাত সবলের কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ চাপিয়ে দেওয়া, হিংসার আশ্রয় নিয়ে।
ভারতে এই মুহূর্তে, বিশেষ করে কর্ণাটক ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে চুরি ছিনতাই রাহাজানি খুন সহ অ্যালকোহল জনিত অপরাধ অবশ্য প্রায় ৫০% কমে গেছে। কিন্তু শিশুনির্যাতন সহ গার্হস্থ্যহিংসার বৃদ্ধি মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে ভাবিয়ে তুলেছে। নির্যাতিতদের সুরক্ষা ও পৃথক আশ্রয়ের আবেদন জানিয়ে সুপ্রিমকোর্ট ও দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন জমা পড়েছে।
জাতীয় মহিলা কমিশন সূত্রে জানা গেছে,গত ২৪ মার্চ (লকডাউন ঘোষণার পর) থেকে ১ এপ্রিলের মধ্যে ২৫৭টি নারী নির্যাতনের অভিযোগ এসেছিল যার মধ্যে ৬৯টি গার্হস্থ্য হিংসা সংক্রান্ত। এনসিডব্লুর চেয়ারপার্সন রেখা শর্মার মতে, সংখ্যাটা আসলে আরও বেশি।কারণ বহু নির্যাতিতা ভবিষ্যতে আরও অত্যাচারের ভয়ে, পুলিশে অভিযোগ জানাতে সাহস পায় নি। জাতীয় মহিলা কমিশন সূত্রে – ২৩ মার্চ থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত ৫৮৭ টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ২৭ ফেব্রুয়ারী থেকে ২২ মার্চ পর্যন্ত সংখ্যাটা ছিল ৩৯৬। ভারতে লকডাউন পর্বে লিঙ্গ হিংসা দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। চাইল্ডলাইন ইন্ডিয়া হেল্পলাইনে ২০-৩১ মার্চের মধ্যে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে কল এসেছে ৯২০০০এরও বেশি। রেখা শর্মা আগেই শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে লকডাউনে গার্হস্থ্য হিংসা বাড়তে পারে যেহেতু অত্যাচারিতা অত্যাচারীর সহাবস্থান বাধ্যতামূলক হয়ে পড়বে। এ প্রসঙ্গে সিপিআই(এমএল) লিবারেশন-এর পলিটব্যুরো সদস্য ও অ্যাপোয়ার কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক কবিতা কৃষ্ণাণ জানিয়েছেন, লকডাউনে গার্হস্থ্য হিংসার এত বাড়বাড়ন্তের কারণ সরকারের অপরিকল্পিত ও সম্পূর্ণ আকস্মিকভাবে লকডাউন ঘোষণা। তিনি বলেন, নির্যাতিতারা অনেকেই অভিযোগ জানিয়েছেন
সরকারের আগাম ঘোষণা থাকলে তারা নিরাপদ স্থানে চলে যেতে পারতেন। তাঁর মতে, এখন একমাত্র করণীয় হল-অভিযোগ কারিণীদের সাহায্য ও উদ্ধার করা। তিনি এবং তার সংগঠন এআইপিডব্লুএ প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এক চিঠিতে প্রতিটি জেলায় ২৪×৭ হট লাইন চালু করার ও অভিযোগকারিণীদের কাছে দ্রুত পৌঁছানোর জন্য একটি বিশেষ টিম গঠনের দাবি জানিয়েছেন। প্রয়োজনে এ ব্যাপারে তিনি মহিলা সংগঠনগুলির সাহায্য নেওয়ার কথা বলেছেন। তারা পিসিপিএনডিটি আইনটি কঠোরভাবে বলবৎ করার দাবিও জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রক গত ৪ এপ্রিল এক গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত ঐ আইনের কিছু বিধি শিথিল করেছে। এই আইনটি (প্রি-নাটাল অ্যান্ড প্রি-কনসেপশন ডায়াগনস্টিক টেকনিক অ্যাক্ট) লিঙ্গ নির্ণয় পরীক্ষা সংক্রান্ত। আইনটির কঠোরতা হ্রাসের মাধ্যমে কন্যাভ্রূণ হত্যাকে আইনি অনুমোদন দিতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর সাহায্য নিয়ে পারিবারিক হিংসা আরও ব্যাপক হবে বলে উদ্বেগ জানিয়েছে নারী সংগঠনগুলি।
নারী অধিকার কর্মীরা অনেকে গার্হস্থ্যহিংসাকে ‘শ্যাডো প্যানডেমিক’ আখ্যা দিয়েছেন। হিংসার আশ্রয় নিয়ে মহিলাদের কাজকর্ম ও গতিবিধির উপর এই নিয়ন্ত্রণ মেয়েদের মর্যাদার সঙ্গে বেঁচে থাকা তথা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে ভয়ঙ্করভাবে বিপর্যস্ত করছে।
জাতীয় মহিলা কমিশন অভিযোগ নেওয়ার জন্য একটি হোয়াটস্অ্যাপ নম্বর (7217735372) প্রকাশ করেছে। সারা দেশে মহিলাদের সাহায্যের জন্য ৫০টিরও বেশি হেল্প লাইন চালু আছে।
শুধু ভারতেই নয়, গোটা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই লকডাউন পর্বে গার্হস্থ্য হিংসা বেড়েছে। নতুন জনস্বাস্থ্যবিধি অত্যাচারের সুযোগ করে দিচ্ছে,সন্ত্রাস তৈরিতে সাহায্য করছে। লকডাউন অত্যাচারীদের কাছে "নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার" হয়ে উঠেছে। সরকার অনেকক্ষেত্রেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ও নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।
হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার সময় এই গৃহহিংসাকে বিশেষজ্ঞরা ‘অন্তরঙ্গ সন্ত্রাস’ বলে অভিহিত করেছেন। নিরবচ্ছিন্নভাবে এই পাশাপাশি থাকা তৈরি করছে সংঘাত। ক্রমশ তা শারীরিক ও মানসিক পীড়নের রূপ নিচ্ছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে শারীরিক নিগ্রহ নাও থাকতে পারে। কিন্তু স্ত্রী বা সঙ্গিনীকে কঠোর ও নিরবচ্ছিন্ন নজরদারিতে রাখা ও ‘প্রতারণা করছে’ এমন সন্দেহপ্রবণতায় ভোগা, বন্ধু, পরিবার, কর্মসংস্থান থেকে নির্বাসিত অবস্থায় তাকে দূরভাষ, মোবাইল ফোন বা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করতে না দেওয়া (সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট নম্বর ডিলিট করে দেওয়া), কঠোর আচরণবিধি আরোপ করা, সন্তানসহ সঙ্গিনীকে খাদ্য, বস্ত্র, পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার মতো মৌলিক অধিকারগুলি থেকে বঞ্চিত করা, এমনকি স্নানঘরের নিভৃতিটুকুও কেড়ে নেওয়া – এ সবই চলছে ঘরবন্দি থাকার সুযোগে।
হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি মেডিকেল স্কুলের ট্রমা বিশেষজ্ঞ জুডিথ ল্যুইস হারম্যান বলছেন: অত্যাচারীরা সঙ্গিনী ও সন্তানদের সঙ্গে এমন পদ্ধতিতে অত্যাচার করছে, যার সঙ্গে অপহরণকারীরা তাদের হেফাজতে থাকা পণবন্দিদের বা অত্যাচারী সৈন্যরা রাজনৈতিক বন্দিদের মনোবল ভেঙে দেওয়ার জন্য যা করে তার সাদৃশ্য রয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, “while perpetrators of organised political or sexual exploitation may instruct each other in coercive methods, perpetrators of domestic abuse appear to reinvent them.”
আইসোলেশনে থাকার জন্যে নির্যাতিতাদের সাহায্য পাওয়া বা নিরাপত্তার জন্য কোথাও পালিয়ে যাওয়ার পথও খোলা থাকছে না। ফলে এক ভয়ঙ্কর বিপন্নতা তাদের গ্রাস করছে। প্রশাসন সময়মত হস্তক্ষেপ না করলে মারাত্মক বিপদ ঘটে যেতে পারে।
চীনের বেজিংভিত্তিক একটি এনজিও, ‘ইক্যুয়ালিটি’ জানাচ্ছে – হুবেই প্রদেশে লকডাউন শুরুর পর, ফেব্রুয়ারীর গোড়া থেকে হেল্প লাইনে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ জানিয়ে কলের সংখ্যা প্রচুর বেড়ে যায়। গতবছর ফেব্রুয়ারির তুলনায় এ বছর ফেব্রুয়ারিতে তিনগুণ বেড়ে গেছে-৪৭ থেকে ১৬২। চীনের এক নির্যাতিতা তরুণী শিশুকন্যাকে কোলে নেওয়া অবস্থায় স্বামীর দীর্ঘক্ষণের নির্মম নির্দয় প্রহারে রক্তাক্ত আহত হওয়ার পর পুলিশকে ফোন করলে, ঘটনাটি নথিবদ্ধ করা হয়, কিন্তু পরবর্তী কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে মেয়েটি আইনজীবীর সাথে যোগাযোগ করে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন জানায়। কিন্তু তার জন্যেও তাকে অপেক্ষা করতে হবে। এর মধ্যে নতুন আশ্রয়ের সন্ধান করাও সম্ভব নয়। অগত্যা শিশুকন্যাকে নিয়ে তাকে সেই অত্যাচারী লোকটির সঙ্গেই সহাবস্থানে বাধ্য হয়ে কোর্টের রায়ের প্রতীক্ষা করতে হচ্ছে। এরকমই চলছে সারা বিশ্ব জুড়ে।
ব্রিটেন, ফ্রান্স, স্পেন, ইতালি – ইওরোপের সর্বত্র একই অভিজ্ঞতা। গার্হস্থ্য হিংসার শিকার যারা, তাদের সুরক্ষার কোনো ব্যবস্থা, পরিকল্পনা ছাড়াই সরকারের লকডাউন ঘোষণার অনিবার্য ফলশ্রুতিতে অসহনীয় অবস্থায় কাটাতে হচ্ছে নির্যাতিতাদের।
ইউরোপে প্রথম ইতালিতে,মার্চের শুরুতে লকডাউন ঘোষিত হয়। তারপর থেকে গার্হস্থ্য হিংসাও বাড়তে থাকে।নিরুপায় মেয়েদের পালানোর কোন উপায় ছিল না। সংক্রমণের ভয়ে কোথাও তাদের ঠাঁই হচ্ছিল না। তাই সরকার স্থানীয় প্রশাসনকে হোটেলগুলিতে অস্থায়ী আশ্রয় গড়ে তোলার নির্দেশ দেয় যেখানে মেয়েরা নিরাপদে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে পারে।
স্পেনে লকডাউন ঘোষণার (১৪ মার্চ) পর দু’সপ্তাহের মধ্যে জরুরি নম্বরে কলের সংখ্যা আগের মাসের থেকে ১৮% বেড়ে যায়। সেখানে মহিলা সংগঠনগুলির সাহায্য নিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমস হোয়াটস্অ্যাপে নির্যাতিতাদের সাক্ষাৎকার নেয়। স্পেন সরকারও হোটেলের খালি ঘরগুলোতে সন্তানসহ নির্যাতিতাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত নেয়।
এরপর ব্রিটেন। সংক্রমণ শুরুর অনেকেটা পরে ২৩ মার্চ সেখানে লকডাউন ঘোষিত হয়। লকডাউনের এক সপ্তাহের মধ্যে দেশের পূর্ব দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলে, অ্যাভন ও সমারসেটে গার্হস্থ্য হিংসা ২০% বেড়ে যায়। চ্যারিটি 'রিফিউজ' জানিয়েছে লকডাউনের পর তাদের ‘ন্যাশনাল ডোমেস্টিক অ্যাবিউজ হেল্পলাইনে’ কলের সংখ্যা ২৫% বেড়ে যায়। গোটা ইউ কে-তে ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহের তুলনায় 'ন্যাশনাল ডোমেস্টিক অ্যাবিউজ হেল্প ওয়েবসাইট'-এ তথ্যানুসন্ধান ১৫০% বেড়ে গেছে। এই সংস্থার এক প্রচারক (ক্যাম্পেনার) রাচেল উইলিয়ামস আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, লকডাউন ও সোশ্যাল ডিসস্ট্যান্সিং দীর্ঘায়িত হলে হিংসা তো বাড়বেই, খুনের সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে। এই সংস্থার মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক স্যানড্রা হার্লের মতে লকডাউন যত প্রলম্বিত হবে, শিশুসহ মহিলাদের স্বাধীনতা তত খর্ব হবে। তিনি আরও জানিয়েছেন, নিজের ১৮বছরের দাম্পত্যজীবন ছিল স্বামীর নির্যাতনে জর্জরিত। সেই দুর্বিষহ জীবন থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত জানালে তাকে শট গান থেকে গুলি করা হয়। বিবিসি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি মন্তব্য করেছেন, “Homicide rate is going to go through the roof –” আর বিশ্বমহামারীতে এটা এপিডেমিকে পৌঁছে গেছে বলে তিনি মনে করেন।
ব্রিটেনে গৃহহিংসা বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে নিউইয়র্ক টাইমস স্বরাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে,সেখান থেকে জানানো হয় – পরামর্শ ও সাহায্যের জন্য চালু ব্যবস্থাগুলোর সহায়তা মিলতে পারে। এরপর সরকার কয়েকটি হট লাইন ও অ্যাপের কথা ঘোষণা করে। কিন্তু তার মধ্যে মাত্র একটিই ছিল কোভিড-১৯ সংকট সংক্রান্ত! সংকট তীব্র হওয়ায়, কয়েক ডজন নাগরিক সংগঠন গণস্বাক্ষরিত খোলা চিঠি পাঠালে, স্বরাষ্ট্র দপ্তর জানায় সমস্যা সমাধানে তারা যথাসাধ্য সচেষ্ট। আরও জানায় নির্যাতনের শিকার যারা, নতুন আশ্রয় খোঁজার প্রয়োজনে ঘরবন্দিত্বের বিধি লঙ্ঘন করতে পারেন। সেখানেও স্থানীয় প্রশাসন একইভাবে খালি হোটেলগুলোকে কাজে লাগিয়ে সমস্যা মেটাতে চেষ্টা করে।
ফ্রান্সে লকডাউন জারি হয় ১১ মার্চ। সেখানেও ফরাসী পুলিশ প্রশাসনের নজরে আসে, গোটা দেশে গার্হস্থ্য হিংসা ৩০% বেড়ে গেছে লকডাউনের পর।
লাতিন আমেরিকায় – এই গোটা অঞ্চলে সাধারণভাবেই প্রতিবছর প্রায় ২ কোটি মহিলা ও কিশোরী শারীরিক ও যৌন নিগ্রহের শিকার হয়ে থাকে। আর ঘরবন্দি অবস্থায় তা কতটা বেড়েছে, বুয়েনস আয়ার্স, মেক্সিকো সিটি, সান্তিয়াগো, সাও পাওলো – সর্বত্র হটলাইনে কলের আকস্মিক বৃদ্ধিই তার সাক্ষ্য দিচ্ছে ।
আর্জেন্টিনায় ২০ মার্চ লকডাউন ঘোষণার পর, নির্যাতিতদের জন্য নির্দিষ্ট ১৩৭টি জরুরী লাইনে কলের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় ৬৭% বেড়েছে। ‘ইউনাইটেড নেশনস উইমেন’ সম্প্রতি জানিয়েছে, কোয়ারেন্টইনে মেক্সিকো, ব্রাজিল এবং কলাম্বিয়ায় নারীর প্রতি হিংসা বেড়েছে , আর্জেন্টিনায় নারীহত্যা দ্বিগুণ বেড়েছে। (লকডাউনের আগে সেখানে প্রতি ২৩ ঘণ্টায় একজন নারী খুন হত।) চিত্রনির্মাতা লুসিয়েন ভাসেল্লো বলেছেন, “গৃহহিংসা আরেকটি প্যানডেমিক হতে চলেছে”।
লাতিন আমেরিকায় নারীদের উপর পিতৃতান্ত্রিক আগ্রাসন ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে গত বছর তীব্র আন্দোলন চলেছে, বিশাল বিশাল মিছিল হয়েছে।
চিলিতে ঘরবন্দিত্বের প্রথম সপ্তাহেই জরুরী কলের সংখ্যা ৭০% বেড়েছে। সান্তিয়াগোর মেয়র রয়টারকে জানিয়েছেন, আইনি,
মনস্তাত্ত্বিক ও সামাজিক সাহায্যের আবেদন জানানোর স্থানীয় দপ্তরে কলের সংখ্যা ৫০০% বেড়ে গেছে।
ব্রাজিলিয়ান ফোরাম অন পাবলিক সেফটি জানিয়েছে ব্রাজিলের সাও পাওলো স্টেট, যেখানে অতিমারীর আক্রমণ সব চেয়ে বেশি সেখানে গার্হস্থ্যহিংসা বেড়েছে ৪৫%।
মেক্সিকোর প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে – লকডাউনে গার্হস্থ্য হিংসা মার্চে গত বছরের তুলনায় এক চতুর্থাংশ বেড়েছে। মিউনিসিপ্যাল ইনস্টিটিউট ফর উইমেন অব ভেরাক্রুজ (যেখানে নারীহত্যার ঘটনা দেশের মধ্যে সর্বাধিক) জানিয়েছে-সেখানে গার্হস্থ্য হিংসায় মানসিক নির্যাতনের ঘটনাও অনেক। অনেক মহিলাই সন্তানসহ ঘর ছাড়ার এবং তার পরবর্তী আইনি পদক্ষেপের ব্যাপারে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন।
কলাম্বিয়ায় লকডাউনের প্রথম ১৮ দিনে জাতীয় মহিলা হটলাইনে সাহায্যের আর্তি জানিয়ে কলের সংখ্যা ১৩০% বেড়েছে ।
আর্জেন্টিনীয় সাংবাদিক এবং Ni Una Menos নারী আন্দোলনের সংগঠক Marta Dillon জানিয়েছেন গার্হস্থ্য হিংসার প্রতিরোধে সারা বিশ্বের মহিলারা একজোট হতে চাইছেন এবং গোটা পৃথিবীর সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করে তারা একটি ইস্তাহার প্রকাশ করবেন।
আমেরিকার পাঁচটি বড় শহর-শিকাগো,কানসাস সিটি,লস এঙ্গেলস,মেম্ফিস এবং নিউ অর্লিয়েন্স-এর ১০০০০০ রিপোর্ট বিশ্লষণ করে ‘দি ইকোনমিস্ট’ জানিয়েছে – ১৯-২৪ মার্চের মধ্যে লকডাউন জারি হওয়া শহরগুলিতে অন্যান্য অপরাধ ২৫% কমে গেলেও গার্হস্থ্যহিংসা ৫% বেড়ে গেছে । এন বি সি নিউজ জানাচ্ছে--মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্রের আইনবলবৎকারী সংস্থাগুলির পর্যবেক্ষণ-সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে গার্হস্থ্যহিংসা ৩৫% বেড়ে গেছে ।
অস্ট্রেলিয়া প্রশাসন সূত্রে-সেখানে গার্হস্থ্য হিংসা ৫% বেড়েছে ।
বেলজিয়ামে লকডাউনের তৃতীয় সপ্তাহে হেল্প লাইনে কলের সংখ্যা ৭০% বেড়েছে ।
সিঙ্গাপুরে লকডাউনে হেল্পলাইনে কলের সংখ্যা ৩০% বেড়েছে।
রাশিয়ায় ২০১৭ সাল থেকে গার্হস্থ্য হিংসা আর ফৌজদারি অপরাধ নয়।ফলে সরকারিভাবে পরিসংখ্যান পাওয়া মুশকিল। তবে ব্যক্তিগত গবেষণা বলছে-গার্হস্থ্য হিংসা হটলাইনে কলের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় এক চতুর্থাংশ বেড়েছে ।
পাকিস্তানে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে যারা কাজ করেন,তারা সেখানে গার্হস্থ্যহিংসা বৃদ্ধির জন্য আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। মানবাধিকার মন্ত্রক ন্যাশনাল ডোমেস্টিক অ্যাবিউজ হেল্পলাইন চালু করেছে। গার্হস্থ্য হিংসা প্রতিরোধের জন্য পাকিস্তানের জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপন কর্তৃপক্ষ, “জেন্ডার অ্যান্ড চাইল্ড সেল” গঠন করেছে।
টিউনিশিয়ার নারী বিষয়ক দপ্তরের মন্ত্রী আশমা শিরি গার্হস্থ্য হিংসা বাড়ার কথা স্বীকার করেছেন।
তুরস্কের লকডাউন ঘোষণা হয় ১১ মার্চ। মার্চের শেষে গৃহহিংসার জেরে অন্তত ১২ জন নারী প্রাণ হারিয়েছে। টার্কিশ ফেডারেশন অব উইমেন্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। করোনা প্রাদুর্ভাবের পর সেখানে হটলাইনে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগের বন্যা আছড়ে পড়েছে। করোনাভাইরাস-এর ছায়া হয়ে প্রায় গোটা বিশ্বেই ছড়িয়ে পড়েছে এই হিংসা। যদিও নারী সংগঠনগুলি মনে করে, এইসব পরিসংখ্যানে হিমশৈলের চূড়ামাত্র দৃশ্যমান হয়েছে। ৫০% ঘটনা দৃষ্টির অগোচরেই রয়ে গেছে।
গার্হস্থ্যহিংসা পৃথিবীর প্রাচীনতম হিংসা। সর্বত্রই আছে। তবে এই ঘরবন্দি অবস্থায় তার এত বাড়বাড়ন্ত কেন? এটাও আকস্মিক বা নতুন কিছু নয়। এর আগেও প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা গভীর আর্থিক সংকটের সময় তার ভয়াল প্রকাশ ঘটেছে। উন্নয়নের মাপকাঠিতে বিভিন্ন দেশের সামাজ-আর্থনীতিক অবস্থা, সাংস্কৃতিক পরিবেশ, জীবন ধারায় ফারাক রয়েছে। কিন্তু লকডাউনের প্রভাবে সারা দুনিয়ার অর্থনীতিই বিপর্যস্ত। বহু মানুষ ইতিমধ্যেই কাজ হারিয়েছে। কেউ হারাবার আশঙ্কায় প্রহর গুণছে। ভয়ঙ্কর আর্থিক সংকট ব্যক্তিজীবনের ভারসাম্য ও সুস্থিতিকে নষ্ট করেছে। আর্থিক অনিশ্চয়তা, সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা, জনসাধারণের প্রতি রাষ্ট্রের নির্দায় ও নির্দয় মনোভাব ব্যক্তিমানুষকে গভীর বিপন্নতা, অবসাদের খাদে ঠেলে দিচ্ছে । কর্মস্থলের চাপ, ঝড়ের গতির বৈচিত্র্যহীন প্রাত্যহিকতা সম্পর্কের মধ্যে চোরাফাটল তৈরি করছে। যেখানে আস্থা বিশ্বাস সহমর্মিতার অভাব ক্রমশ প্রকট হচ্ছে। সন্তানদের সময় না দিতে পারায় তাদের সঙ্গেও দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। ঠিক এমন একটা পরিস্থিতিতে ঘরবন্দি জীবনের নিরবচ্ছিন্ন নৈকট্য মতান্তরকে মনান্তরে পরিণত করছে। সেখান থেকে সংঘাত। ঘৃণা অবিশ্বাসের ফাটলটা চওড়া ও দুর্লঙ্ঘ্য হচ্ছে। স্ত্রী বা সঙ্গিনী ও সন্তানদের প্রতি হিংস্র অমানবিক বর্বর হয়ে উঠতে সাহায্য করছে তাদের অসহায়তা নিরুপায়তা, তাদের আক্ষরিক অর্থে বন্দিজীবন।আবার চরিত্রগতভাবে নির্দয়, রূঢ় মানুষ এই অসহায়তার সুযোগ নিয়ে ক্রূরতর হয়ে উঠছে। পিতৃতান্ত্রিক আগ্রাসন ও নিপীড়ন তো সমাজে আছেই। ঘরবন্দিত্বে তা আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে।
গার্হস্থ্যহিংসার অনিবার্য ফলশ্রুতিতে সংসার ভেঙে যাওয়ার ঘটনাও বিপুলহারে বেড়ে গেছে। বিভিন্ন দেশেই বিবাহ বিচ্ছেদের মামলার পাহাড় জমছে। অপমান লাঞ্ছনা নির্যাতনকে ছায়াসঙ্গী করে যে মেয়েরা সংসার করছিল, লকডাউন তাদের সেখান থেকে চিরতরে বেরিয়ে আসার প্রয়োজন বুঝিয়ে দিয়েছে।
চীনে লকডাউন পর্বে বিবাহ বিচ্ছেদ ২৫% বেড়েছে। প্রতিবছর এই হারটা সেখানে অন্যান্য দেশের থেকে বেশিই থাকে। বিবাহ বিচ্ছেদ-আইনজীবী স্টিভ লি’র মতে – বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দাম্পত্য জীবনে অবিশ্বাসই বিচ্ছেদ ডেকে আনছে। তার পর্যবেক্ষণ-তরুণ প্রজন্মের মধ্যেই এই প্রবণতা বেশি, বোঝাপড়া ও সহিষ্ণুতার অভাবে।
গার্হস্থ্য হিংসার অনুষঙ্গে আরেকটি বিপজ্জনক দিক সামনে আসছে। ইউনাইটেড নেশনস পপুলেশন ফান্ড-এর একজিকিউটিভ ডিরেক্টর নাতা লিয়া কানেম আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন-লকডাউন দীর্ঘায়িত হলে, কম ও মধ্য আয়ের ১৪৪টি দেশের ৪৪০ লক্ষ মহিলা আধুনিক গর্ভনিরোধক পাবেন না এবং ১০লক্ষ অনিচ্ছুক গর্ভধারণের ঘটনা ঘটবে। ঘটবে অনিরাপদ গর্ভপাত এবং গর্ভধারণ সংশ্লিষ্ট কারণে মৃত্যুর ঘটনা। বাল্যবিবাহও বেড়ে যাবে। তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করেন যে, পূর্ব এবং দক্ষিণ আফ্রিকা ও আরব দেশে লোকজন মেয়েদের কম বয়সে বিয়ে দেওয়া জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে যখন পূর্ব আফ্রিকার একটি দেশে প্রসবকালীন মৃত্যু হার তিনগুণ বেড়ে গেছে। সামনের দশকটি সারা পৃথিবীর মেয়েদের জন্যই এক গুরুতর সমস্যার দশক।
রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুটেরেস বিভিন্ন দেশের কাছে মহিলাদের নিরাপত্তার বার্তার সঙ্গে একগুচ্ছ পরামর্শও দিয়েছেন। যেমন অনলাইন পরিষেবা ও নাগরিক এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলোর জন্য সরকারকে ব্যয় বাড়াতে হবে, সুরক্ষা ও আশ্রয়ের ব্যবস্থাকে অত্যাবশ্যক পরিষেবা বলে গণ্য করতে হবে, অত্যাচারীদের বিচারসাপেক্ষে কারাদণ্ডের ব্যবস্থা করতে হবে ইত্যাদি। বিভিন্ন দেশের সরকার কিছু কিছু ব্যবস্থা নিয়েছেও। কিন্তু এগুলো সবই স্বল্পমেয়াদি পদক্ষেপ। মহিলাদের নির্ভয় স্বাধীনতা ও মর্যাদার সঙ্গে বেঁচে থাকা ও বিকশিত হয়ে ওঠার জন্য স্বাস্থ্য শিক্ষা পুষ্টি সামাজিক সুরক্ষাকে সুনিশ্চিত করতে হবে।তাদের স্বাধিকার, আত্মনিয়ন্ত্রণ ও ক্ষমতায়নকে সম্ভব করার মতো সমাজকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। পিতৃতান্ত্রিক আগ্রাসন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ জারি রাখতে হবে। আর ভারতবর্ষের ভয়ঙ্কর মন্দাপরিস্থিতি থেকে অর্থনীতির মুক্তির জন্য দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষের রুটি-রুজি,সামাজিক নিরাপত্তার দায় সরকারকে নিতে হবে-বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদরা একথা বারংবার সরকারকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। এই সব প্রশ্নে মহিলা সংগঠনগুলির সামনে এখন নিরন্তর লড়াইয়ের বলিষ্ঠ চ্যালেঞ্জ।এবং সেটা তারা হিম্মতের সঙ্গে লড়ছে, লড়বেন – জোটবদ্ধ হয়ে, মানুষকে সাথে নিয়ে, ইতিহাসকে সঙ্গী করে।
সূত্র: Impact of the COVID-19 pandemic on domestic violence
LOCKDOWN wjth abusers:India sees surge in domestic violence
A new covid-19 crisis:domestic abuse rises worldwide: Amanda Taub