নোবেলজয়ী অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন যে দরিদ্রদের ত্রাণ সরবরাহের ক্ষেত্রে ভারত যা দরকার তার কাছাকাছিও কিছু করতে পারেনি। তিনি আরও বলেন যে পরবর্তী কালে সরকারের কী করা উচিত সে সম্পর্কে ভারত সরকারকে একটি “স্পষ্ট, সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা” বানাতে হবে।
বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন যে সংকট মোকাবিলায় সরকার “সিস্টেমের মধ্যে একটি ধাক্কা দিয়ে ঠিক করেছে”, তবুও লোকদের ত্রাণ দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও উদার হওয়া দরকার। “এই রোগটি দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সঙ্গে থাকবে যতক্ষণ না কোনও প্রতিষেধক আসে, যা খুব তাড়াতাড়ি হওয়ার সম্ভাবনা নেই ।”
ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ইতিমধ্যে অতিরিক্ত চাপের মধ্য দিয়ে চলেছ। এর ওপর করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের ফলে জীবিকা অর্জন করার সুযোগ হ্রাস পেয়েছে এবং এর জন্য বাজারে চাহিদা হ্রাস পেয়েছে, “আমি জানি যে একটি উদ্বেগ আছে যে ‘বাজারগুলি যদি বন্ধই থাকে তাহলে অর্থ প্রদান করে কি হবে?’ তবে, মানুষকে টাকা দিলে মানুষ আশ্বস্ত হবে এবং বাজারে চাহিদা বাড়বে। মানুষের আশ্বাস দরকার। এবং জনগণকে আশ্বাস দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারকে তৎপর হতে হবে।”
অভিজিৎ বাবু যোগ করেছেন যে, ভারতীয় প্রশাসনের উচিত আয়ের সুযোগ হারানোর কারণে দারিদ্র্যের মুখোমুখি হওয়া লোকদের আরও উদার হস্তে সাহায্য করা। “কোটি কোটি পরিবার যারা ইতিমধ্যে ভারতের বহু কল্যাণমূলক প্রকল্পের প্রাপক হিসাবে তালিকাভুক্ত আছেন তাদেরকে সরাসরি টাকা দেওয়া, বিপুল সংখ্যক লোক যারা এই জাতীয় প্রকল্পের সুবিধাভোগী নয় তাদের চিহ্নিত করে অর্থটি তাদের পকেটে পৌঁছেছে কি না তা নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় রিপোর্টিং-এর ব্যবস্থা করা দরকার”।
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ স্বীকার করেছেন যে এই সুবিধাগুলির প্রাপকদের চিহ্নিতকরণ প্রক্রিয়ায় ভুল থাকবে, “কিন্তু, নিখুঁত থাকাটা এই মুহুর্তের মূল কথা নয়, এটি জরুরি অবস্থা”। অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো ভারতেরও জনকল্যাণ স্কিমগুলোর প্রসার ঘটাতে অর্থ ছাপানো উচিত।
বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, “সম্ভবত পণ্য ও পরিষেবার সরবরাহ না হলে মুদ্রাস্ফীতি হওয়ার আশঙ্কা আছে ভারত সরকারের। “তবে, ভারতে উপার্জনের যেরকম বৈষম্য তৈরি হয়েছে তা কমানোর জন্য কিছু করা দরকার। সরকারকে আরও আগ্রাসী ভাবে অর্থ ব্যয় করতে হবে”।
বাংলা রিপোর্ট- প্রত্যুষ নন্দী, সূত্র: দ্যা ওয়্যার।