আটটি রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ রাষ্ট্রপতির কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়ে বিরোধী নেতৃবৃন্দ এবং মানবাধিকার কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার এবং প্রতিবাদকারী ও রাজনৈতিক সমালোচকদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের রাজনীতির অবসানের দাবি জানিয়েছেন।
সিপিআই(এমএল)-এর সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য ১৪ মে একটা বিবৃতিতে বলেছেন, যাদের জেলে থাকার কথা তারা অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে; আর সফুরা জারগরের মতো অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে জেলে পোরা হচ্ছে। করোনা সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বের সমস্ত দেশই এখন জেলগুলোকে কয়েদি শূন্য করার কথা বলছে, আর ভারতে এর বিপরীতটাই ঘটছে। সুধা ভরদ্বাজ, ভারভারা রাও, আনন্দ তেলতুম্বদে, লালু যাদব, মেহেবুবা মুফতি সঈদের মতো রাজনৈতিক বন্দীদের বয়স ৬০-৭০ বছরের বেশি। এই সমস্ত ব্যক্তিদের জেলে আটকে রাখার মধ্যে দিয়ে কোনো উদ্দেশ্য সাধিত হতে পারে? সরকারকে এই সমস্ত বন্দীদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।
সফুরা জাগর, অখিল গগৈ এবং অন্যান্য সিএএ-বিরোধী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দকে মুক্তি দেওয়ার দাবিও কমরেড দীপঙ্কর জানান। করোনা সংকটের সময় সরকার যে সিএএ-বিরোধী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে দিল্লী দাঙ্গায় উস্কানি দেওয়ার মিথ্যা অভিযোগ এনে তাদের জেলে পুরছে, সেটা অবশ্যই ধিক্কারযোগ্য। বিহারের জেলে আরওয়াইএ-র জাতীয় সভাপতি অমরজিৎ খুশাওয়া সহ যে সমস্ত দরিদ্র মানুষ বন্দী রয়েছেন তাদের মুক্তি দেওয়া বা প্যারোলে জেলের বাইরে আসতে দেওয়ার দাবিও দীপঙ্কর জানান।
রাষ্ট্রপতিকে পাঠানো স্মারকলিপির একটি অংশে বলা হয়েছে, “দিল্লীতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে থাকা পুলিশ সম্পূর্ণরূপে শান্তিপূর্ণ সিএএ-বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া মহিলা সহ সুপরিচিত কর্মীদের পুরোদস্তুর সাজানো অভিযোগের ভিত্তিতে দানবীয় ইউএপিএ আইনে গ্ৰেপ্তার করছে এবং পুলিশের অভিপ্রায় হল দিল্লীর সাম্প্রদায়িক হিংসায় জড়িত বলে তাদের দেখানো। এ ছাড়াও, স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চ বহু সংখ্যক ছাত্রকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে এবং হুমকি দিচ্ছে। জেএনইউ-তে চালানো হিংসার শিকার হওয়া ছাত্রছাত্রীদের নিশানা বানানো হচ্ছে আর যে সমস্ত বহিরাগতরা ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষকদের বিরুদ্ধে হিংসা সংঘটিত করল তাদের কাউকেই গ্ৰেপ্তার করা হয়নি। এই ব্যাপারটাও যথেষ্ট আপত্তিকর যে, একদিকে বিশেষ সম্প্রদায়কে নিপীড়নের নিশানা বানানো হচ্ছে, আর অন্যদিকে যারা সাম্প্রদায়িকতা চালিত হিংসা সংঘটিত করেছে, বিভিন্ন ভিডিও রেকর্ডিং থেকে যাদের পরিচিতি জানা যাচ্ছে এবং যাদের মধ্যে শাসক দলের বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দও রয়েছে, তারা অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে।”
রাষ্ট্রপতিকে ১১ মে পাঠানো স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেন সিপিআই(এম)-এর সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, সিপিআই-এর সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা, সিপিআই(এমএল)-এর সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য, সারা ভারত ফরোয়ার্ড ব্লকের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাস, আরএসপি-র সাধারণ সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্য, এলজেডি-র সাধারণ সম্পাদক শারদ যাদব, আরজেডি-র সাংসদ মনোজ ঝা এবং ভি সি কে-র সাংসদ ও সভাপতি থল থিরুমাভালাভান।