আমেরিকায় মৃত্যু মিছিল -- কাঠগড়ায় ট্রাম্প
tramp

এই প্রতিবেদন লেখা যখন চলছে, তখন পর্যন্ত (০৫/০৫/২০২০) আমেরিকায় নোভেল করোনাভাইরাসে সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা ১২১৩১৮৫ এবং কোভিড-১৯ প্রাণ নিয়েছে ৬৯৯২৯ মানুষের। অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় এই সংখ্যাগুলো অনেক বেশি। এবং সে দেশের অর্থনীতিও বড় ধরনের সংকোচনের মুখে।  কিন্তু আমেরিকাকে এত বড় বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হল কেন? ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র এক জীবাণুর কাছে অর্থনীতি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা দেশটার এমন নাস্তানাবুদ অবস্থা আধুনিকতার সীমাবদ্ধতা এবং প্রকৃতির প্রতি নিষ্ঠুরতার পরিণামকে যেমন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, সেরকমই গোড়ার দিকে এর ভয়াবহতার সম্ভাবনাকে উপেক্ষা করার মাশুল গুনতে হওয়ার আখ্যানকেও সামনে নিয়ে আসছে। আমেরিকার এক বড় অংশ, গুরুত্বপূর্ণ অনেক প্রদেশই কোভিড-১৯-এর গ্ৰাসে চলে যাওয়ায় আমেরিকার জনগণ সহ অনেক ভাষ্যকারই আমেরিকার এই বিপর্যয়ে ট্রাম্প ও তাঁর পার্শ্বচরদের ভূমিকাকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। এবং কেন সে কথা বিচার করা যাক।

আমেরিকায় করোনা সংক্রমণের প্রথম ঘটনা ধরা পড়ে জানুয়ারীর মাঝামাঝি, এবং করোনা ঘটিত মৃত্যুর প্রথম খবরটা পাওয়া যায় ২৯ ফেব্রুয়ারী। ইতিমধ্যে জানুয়ারির শেষে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সারা বিশ্বেই স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে জরুরি অবস্থার কথা ঘোষণা করেছে। তখনও কিন্তু এই ঘটনায় গুরুত্ব দেওয়া, চীনের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেওয়ার কোন তাগিদই ট্রাম্প ও তাঁর প্রশাসনের দিক থেকে দেখা গেল না। এই ভাইরাসের সংক্রমণকে গোড়ার দিকে সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জার মতন বলে ট্রাম্প মন্তব্য করলেন। যেমন, ২৬ ফেব্রুয়ারী সাংবাদিকদের কাছে নিত্যদিনের বিবৃতিতে বললেন, “এটা একটা ফ্লু। এটা একটা ফ্লুর মতন।” ফেব্রুয়ারীর ২৮ তারিখে আবার বললেন, “এটা মিলিয়ে যাবে। একদিন ভোজবাজির মতন – এটা উবে যাবে।” কখনও আবার, যেমন ফেব্রুয়ারীর ৭ ও ১৯ তারিখে, তাঁর কল্পনা ডানা মেলে এই অভিলাষের ওপর ভর করল যে – এপ্রিলের গরম হাওয়ায় ভাইরাস দুর্বল হয়ে পড়বে। বিশেষজ্ঞরা যখন বলছেন যে, নোভেল করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক বার করতে কম করে এক থেকে দেড় বছর লাগবে, ট্রাম্প ২৫ ফেব্রুয়ারী বলে বসলেন, “দ্রুতই এক টিকার সন্ধান পাওয়া যাবে।” এই সমস্ত মন্তব্য এমন এক রাষ্ট্রপ্রধানকে দেখিয়ে দেয়, যিনি শুধু এই ভাইরাস থেকে বিপদের সম্ভাবনাকেই অবজ্ঞা করেননি, নোভেল করোনাভাইরাস সম্পর্কে যাঁর ধারণা ছিল একেবারেই ফাঁপা এবং এই বিপর্যয় মোকাবিলার ব্যবস্থাকে বিপথে চালিত করার পক্ষে যা ছিল যথেষ্ট।

coro

 

নোভেল করোনাভাইরাসের কাছে আমেরিকার চূড়ান্ত রূপে পর্যুদস্ত হওয়ার কারণ হিসাবে সেখানকার ভাষ্যকাররা ফেব্রুয়ারীর শেষের দিক থেকে মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ও প্রশাসনের করোনাভাইরাসের নিজেকে ব্যাপ্ত করার, বিশাল সংখ্যক মানুষকে সংক্রমণ কবলিত করার ভয়াল সম্ভাবনায় গুরুত্ব না দেওয়াকেই দায়ী করেছেন। এই সময়ে যথেষ্ট সংখ্যক মানুষের নমুনা পরীক্ষা হল না, পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় কিটও ছিল না। আর নমুনা পরীক্ষা না হওয়ায় সংক্রমিতদের যেমন খুঁজে বার করা গেল না, তেমনি তাদের সংস্পর্শে যারা এসেছে তাদেরও খুঁজে বার করে কোয়ারান্টিনে পাঠানোর ব্যবস্থা হতে পারল না। বিভিন্ন প্রদেশের হাসপাতালগুলোতে মাস্ক, গ্লাভস, বর্মবস্ত্রর তীব্র অভাবও দেখা গেল। বর্মবস্ত্র না পাওয়ায় নার্সরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, এমন ছবিও সংবাদপত্রে ছেপে বেরোলো। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ হিসেবে বিদেশ থেকে যে নাগরিকদের ফেরানো হল, তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভিড়ে ঠাসা বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হল। না জানা সংক্রমিতদের গা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে থাকা অনেক অসংক্রমিত ব্যক্তিও সংক্রমণের শিকার হলেন। যখন ট্রাম্পের বোধদয় হল যে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে, বিপদ গুরুতর মাত্রা নিয়ে নিয়েছে, ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে, তার বিস্তারের জন্য নোভেল করোনাভাইরাসের পালে অনেক বাতাস ইতিমধ্যেই জোগানো হয়ে গেছে। ট্রাম্প অবশেষে ১৩ মার্চ যখন জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করলেন, ততদিনে আমেরিকায় সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭০১ এবং কোভিড-১৯ থেকে মৃত্যু হয়েছে ৪০ জনের। দ্য টেলিগ্ৰাফ পত্রিকার ১৩ এপ্রিলের সংস্করণে প্রকাশিত নিউ ইয়র্ক টাইমস নিউজ সার্ভিস-এর একটা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হল – “হোয়াইট হাউসে তাঁর শাসন পর্বের অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় ফেব্রুয়ারীর শেষের দিনগুলো সম্ভবত তাঁর কাছে আসা সতর্কবার্তাকে গ্ৰহণ করতে ট্রাম্পের অক্ষমতা অথবা অনাগ্ৰহকে সবচেয়ে ভালোভাবে তুলে ধরে। …”

লকডাউনের ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ছেদ এবং শেয়ার বাজারের পতন তাঁকে যারপরনাই উদ্বিগ্ন করে তোলে। অর্থনীতির ইঞ্জিন কত তাড়াতাড়ি সচল করা যাবে, এই তাড়না থেকে তিনি সম্ভবত কোভিড-১৯ মোকাবিলার উদ্ভট কিছু উপায় বাতলানোর পথে গেছেন। কখনও বলেছেন কোভিড-১৯-এর চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন (যে ওষুধটা সরবরাহের জন্য ভারতের ওপর চাপ দেওয়া হয় এবং ভারত না দিলে ‘প্রত্যাঘাতের’ হুমকিও দেওয়া হয়) ‘গেম চেঞ্জার’ বা মোক্ষম দাওয়াই হবে। ওই ওষুধ আমেরিকায় গিয়ে রোগীদের ওপর প্রয়োগ হওয়ার পর সেখানকার ডাক্তাররাই জানিয়েছেন – যাদের ওপর এই ওষুধ প্রয়োগ হয়েছে তাদের মৃত্যুর হার যারা ওই ওষুধ পায়নি তাদের তুলনায় বেশি। কখনও আবার করোনা সংক্রমণের নিরাময় হিসাবে জীবাণুনাশকের কথা ট্রাম্পের মাথায় ঢোকে। সাংবাদিকদের সামনেই তিনি প্রস্তাব রাখেন – শরীরে জীবাণুনাশক বা অতি বেগুনি রশ্মি ঢুকিয়ে ফুসফুস সাফ করা যায় না? এই প্রস্তাব শুনে ব্রিটেনের ইস্ট এংলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাবিদ্যার অধ্যাপক পল হান্টার বললেন – “কোভিড-১৯-এর চিকিৎসা প্রকৃতই কিভাবে হবে সে ব্যাপারে এটা সবচেয়ে বিপজ্জনক ও নির্বোধ প্রস্তাবগুলোর অন্যতম।” ট্রাম্পের এই পথ বাতলানোর পর ডেটল ও লাইজলের মতো জীবাণুনাশক তৈরির সংস্থা রেকিট বেঙ্কাইজারকে বিবৃতি দিয়ে জনগণকে সতর্ক করতে হল – এই জীবাণুনাশকগুলো কেউ যেন গলাধঃকরণ না করেন বা ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে শরীরে না ঢোকান। বাজারকে সক্রিয় করার গরজে পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্রের প্রধান নিজেকে কি আহম্মক রূপে প্রতিপন্ন করলেন না!

আমেরিকায় মৃত্যু মিছিল যত বাড়ে, প্রথম দিকে বিপদকে লঘু করে দেখার জন্য, গ্রহণীয় অত্যাবশ্যকীয় পদক্ষেপ না নেওয়ার জন্য, পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে দেওয়ার জন্য ট্রাম্প ও তাঁর প্রশাসনের সমালোচনা ততই বেড়ে চলে। আর ট্রাম্পকেও তাই ক্রমেই বেশি করে নন্দ ঘোষ, দায় পাচারের জন্য ঘাড় খুঁজতে হয়েছে। বিশ্ব সংস্থার (হু) বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ আনলেন – তারা সংক্রমণের প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে দিশা দেখাতে পারেনি, নির্দিষ্ট সময়ে যে পদক্ষেপ নেওয়া ও সঠিক তথ্য জানানো দরকার তা তারা জানাতে পারেনি; আমেরিকা হুকে সবচেয়ে বেশি অর্থ দেয়, এ সত্বেও হু ‘চীন কেন্দ্রিক’ হয়ে চীনের প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখাচ্ছে। ট্রাম্প অতএব হুকে অর্থ দেওয়া বন্ধ করলেন। হু প্রধান টেড্রস অ্যডানম গেব্রিয়েসাস অবশ্য কোভিড-১৯ অতিমারী নিয়ে রাজনীতি বন্ধ করার আবেদন জানিয়ে বললেন, “আপনারা যদি শবদেহ ভরা আরও ব্যাগ দেখতে চান – তবে এটা করুন, আর যদি শবদেহ ভরা আরও ব্যাগ দেখতে না চান তাহলে রাজনীতি করা থেকে বিরত থাকুন।”

chin

 

তবে ট্রাম্প সবচেয়ে বড় নন্দ ঘোষ করে তুললেন চীনকে। ট্রাম্প নোভেল করোনাভাইরাসকে ‘চীনা ভাইরাস’ বলে, বিদেশ সচিব মাইক পম্পেও ‘উহান ভাইরাস’ বলে অভিহিত করলেন, যাতে পৃথিবী ব্যাপী বিপর্যয়ের দায়ের সঙ্গে চীনকে জড়ানো যায়। করোনা সংক্রমণ নিয়ে তথ্য গোপন করার, এক জনের থেকে অন্য মানব দেহে ভাইরাস সংক্রমিত হচ্ছে সে কথা বিশ্বকে না জানানোর অভিযোগও তিনি চীনের বিরুদ্ধে আনলেন। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকেও একটা বিশেষ কাজে লাগানো হল – নোভেল করোনাভাইরাস উহানের পরীক্ষাগার থেকে বেরিয়েছে তার প্রমাণ তাদের খুঁজে বার করতে হবে। অর্থাৎ, এই ভাইরাসের উৎস রয়েছে চীনের জীবাণু অস্ত্র প্রকল্পের মধ্যে তা প্রতিষ্ঠিত করা। কিন্তু তাদের তদন্তের ফল বলছে, এই ভাইরাস খুব সম্ভবত কোনোভাবে প্রাণী থেকে মানুষের দেহে ঢুকেছে, এর সঙ্গে পরীক্ষাগারের কোনো সম্পর্ক নেই, যেমনটা ঘটেছিল এইচআইভি, ইবোলা এবং সার্স সংক্রমণের ক্ষেত্রে। এ সত্বেও ট্রাম্প ও মাইক পম্পেও দাবি করে চলেছেন – নোভেল করোনাভাইরাসের উৎপত্তি উহানের পরীক্ষাগার থেকেই হয়েছে। আমাদের মনে পড়ে যাচ্ছে সাদ্দাম হুসেনের কাছে গণবিধ্বংসী অস্ত্র থাকার অভিযোগে জর্জ বুশের ইরাক আক্রমণের কথা, যে অস্ত্রের কোনো সন্ধান আমেরিকা কোনোদিন পায়নি এবং সে কথা তাদের স্বীকার করতেও হয়। তবে, ট্রাম্পের চীন-বিরোধী হুঙ্কার, তাদের অর্থনীতির ক্ষতির জন্য চীনের থেকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ আদায়ের হুমকি কিন্তু তীব্রতর হয়ে চলে। ট্রাম্পের হম্বিতম্বি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে মিসৌরি, মিসিসিপি, ফ্লোরিডার মতো আমেরিকার কয়েকটি প্রদেশও চীনের থেকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ আদায়ের মামলা করেছে।

নিজের অবস্থানে দৃঢ় থাকার বদনাম কেউ ট্রাম্পকে দিতে পারবেন না। আজ যা বলেন কাল তাকে অবলীলায় পাল্টে ফেলেন। চীনের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার ঘটেছে। চীনের ভাইরাস নিয়ন্ত্রণের প্রশংসায় প্রথম দিকে তিনি পঞ্চমুখ হয়েছেন। তথ্য সংকলকরা দেখিয়েছেন, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারী মাসে বিভিন্ন উপলক্ষে ট্রাম্প অন্তত পনের বার চীনের প্রশংসা করেন। তার মাত্র তিনটের উল্লেখ আমরা এখানে করছি। জানুয়ারী ২৪ : “করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে চীন অত্যন্ত কঠোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রচেষ্টা ও স্বচ্ছতার বিশেষ প্রশংসা করছে।…” জানুয়ারী ৩০ : “দুর্ভাগ্যবশত, এই মুহূর্তে চীনের অবস্থা ভালো নয়। কিন্তু ওরা প্রাণপণে চেষ্টা চালাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়ায় তা আমরা দেখব। তবে, আমরা চীন ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে কাজ করছি।” ফেব্রুয়ারী ৭ : “গত রাতেই আমি প্রেসিডেন্ট জি-র সঙ্গে কথা বলেছি, আর আপনারা জানেন, আমরা ওই সমস্যাটা, ভাইরাস নিয়ে কাজ করছি। এটা অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতি। তবে আমি মনে করি তিনি এটা সামলে নিতে পারবেন। আমি মনে করি তিনি অত্যন্ত ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করছেন। যেটুকু সাহায্য করতে পারি তা আমরা করছি।”

তাহলে ট্রাম্পের এই ভোলবদল কেন? এ বছর নভেম্বরের গোড়ায় আমেরিকায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হওয়ার কথা এবং ট্রাম্প তাতে প্রার্থী। কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে তাঁর সুবিশাল ব্যর্থতা (অনেকেই যেটাকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বলে বর্ণনা করছেন) দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার সামনে বিরাট প্রশ্নচিহ্ন তুলে ধরেছে। তিনি এখন আবার বলতে শুরু করেছেন যে, তাঁকে হারাতে চীন সমস্ত রকমের চেষ্টাই চালাচ্ছে। ট্রাম্পের এই চীন-বিরোধী তর্জন গর্জনের আসল লক্ষ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচকমণ্ডলী যাঁরা এবারের নির্বাচনে ভোট দেবেন। মৃত্যুমিছিল নিয়ে আমেরিকার জনগণের যে ক্ষোভ, ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা নিয়ে তাদের যে অসন্তোষ, অর্থনৈতিক বিপর্যয় এবং ফলে কাজ হারানো লোকেদের সংখ্যা আকাশ ছুঁতে চলায় তাদের যে ক্রোধ, তাকে চীনের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার কৌশলকেই ট্রাম্প তুরুপের তাস করতে চাইছেন বলে মনে হয়। নির্বাচনের এখনও বেশ কয়েক মাস দেরী। ট্রাম্পের ফেরি করা বর্ণবাদ, উগ্ৰ জাতীয়তাবাদের উদগীরণ তাঁকে ঈপ্সিত ফল এনে দিতে পারে কিনা তা দেখার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।

খণ্ড-27