গত ২৩ এপ্রিল সারা ভারত প্রগতিশীল মহিলা সমিতি শারীরিক দূরত্ব রেখে সামাজিক সংহতি ও ঐক্যের দাবিতে, লকডাউনে ক্ষুধার বিরুদ্ধে, করোনার নামে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রচারের প্রতিবাদে এবং মহিলা ও শিশুদের প্রতি ক্রমবর্ধমান হিংসার বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে অনশন অবস্থান কর্মসূচী পালন করে। লকডাউনের সময়কার নিয়মবিধি মেনে অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাড়িই হয়েছে অনশন অবস্থানস্থল।
এরাজ্যের বিভিন্ন জেলায় এই কর্মসূচি পালিত হয। প্ল্যাকার্ড, পোস্টার নিয়ে মহিলারা করোনা লক-ডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত সমস্ত গরিব, প্রান্তিক, কাজ-হারা ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য খাদ্যের দাবি, রেশনে প্রত্যেক মানুষের প্রয়োজন অনুসারে খাদ্যদ্রব্য বণ্টনের দাবি করেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে করোনার নামে অস্পৃশ্যতা,ঘৃণা ও সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ প্রচারের বিরুদ্ধে ঐক্য ও সম্প্রীতির আওয়াজ তোলা হয়। ডাক্তার, নার্স, আশা, স্বাস্থ্যকর্মী ও করোনা আক্রান্তদের উপর যে সামাজিক অস্পৃশ্যতা দেখা যাচ্ছে তার বিরোধিতা করি।
অতিমারীর সময়ে নারী ও শিশুদের উপর ঘরোয়া হিংসা বৃদ্ধির বিরুদ্ধে হেল্প লাইনের ও নিরাপত্তার দাবি করা হয়। এছাড়া পরিযায়ী শ্রমিক পরিবার, অসংগঠিত ক্ষেত্রের মহিলা আশা, অঙ্গনওয়াড়ি, মিড ডে মিল, পরিচারিকাদের মহামারী ভাতার জন্য সরকারের কাছে দাবি করা হয়।
দার্জিলিং জেলার রিপোর্ট – কোভিড -১৯ এর সময় লকডাউন চলাকালীন ক্রমশ বেড়ে চলা সাম্প্রদায়িক হিংসা বুভুক্ষা ও অবহেলার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়া মানুষের সঙ্গে ঐক্য ও সংহতি জানাতে এবং পরিযায়ী ও অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের মজুরি হ্রাস না করে উপযুক্ত লকডাউন ভাতা দেওয়ার দাবি সহ বিভিন্ন দাবিতে শারীরিক দুরত্ব বজায় রেখে সকাল ১১ থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সমস্ত রাজ্যের সঙ্গে দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ি-ফাঁসিদেওয়া-কাওয়াখালি এবং খড়িবাড়িতে অনশন প্রতিবাদ পালন করলেন সারা ভারত প্রগতিশীল মহিলা সমিতির কর্মী সমর্থকেরা।
ফকদই বাড়ি - শিলিগুড়ির ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি সংলগ্ন ফকদই বাড়িতে প্রায় চল্লিশ জন শ্রমজীবী মহিলা সকাল ১১ থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত অনশন বসেন। বিভিন্ন দাবির সপক্ষে শ্লোগানে মুখরিত অনশন কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন মীরা চতুর্বদী, রীতা সরকার, ময়না সরকার প্রমুখ।
শক্তিগড় : শিলিগুড়ি শক্তিগড়ে সকাল ১১ থেকে প্রতিবাদী অনশন শুরু হয়। মুলত শ্রমজীবী পরিবার থেকে আসা ১৫ জন মহিলা অনশনে বসেন। নেতৃত্বে ছিলেন রুবী সেনগুপ্ত, মিলি ভট্টাচার্য, গঙ্গা রায়, ছবি দত্ত, কল্পনা সরকার, ভাগ্য মন্ডল, আরতি বর্মণ, সঙ্গীতা দাস প্রমুখ। শ্লোগানে মুখরিত অনশন কর্মসূচী চলাকালীন পথচলতি অনেক মানুষকেই দাঁড়িয়ে শুনতে দেখা যায়। এআইপিডব্লিউএ-র অনশন কর্মসূচীকে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন পার্টির জেলা নেতৃত্ব পুলক গাঙ্গুলী। যদিও স্থানাভাব এবং কমরেডদের স্বতস্ফূর্ততার কারণে চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত শারীরিক দুরত্ব বজায় রাখতে পারা যায়নি।
কাওয়াখালি : কাওয়াখালিতেও প্রতিবাদ অনশন কর্মসূচি পালিত হয় মামণি বর্মণ, প্রতিমা সরকার, শম্পা বর্মনের নেতৃত্বে।
ফাঁসিদেওয়া ভতন জোত : সফে সিংহ, শোভা বর্মণদের নেতৃত্বে ভতন জোতের তিনটি জায়গায় প্রতীকী অনশন বসেন প্রায় ২০ জন শ্রমজীবী মহিলা। বিকাল ৫টা পর্যন্ত অনশন চলেছে।
খড়িবাড়ি : খড়িবাড়ি সোনাচান্দি চাবাগান সংলগ্ন কদুভিটাত সুমন্তি এক্কার নেতৃত্বে চা বাগানের মহিলা শ্রমিকেরা উত্সাহের সাথে প্রতিবাদ অনশন কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন।
সমস্ত জায়গাতেই শ্রমজীবী মহিলাদের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য।