অপরিকল্পিত লকডাউনে একদিকে দেশে খাদ্য, মজুরি, সুরক্ষার অভাবে লম্বা হচ্ছে মৃত্যু মিছিল অন্যদিকে এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কেন্দ্র সরকার নামিয়ে আনছে একের পর এক জনবিরোধী, শ্রমিক-বিরোধী আইন। এই সময়ে রাজ্য জুড়ে অসহায়, বিপন্ন মানুষের কাছে অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য ও অন্যান্য সামগ্রী তুলে দেওয়া থেকে শুরু করে প্রশাসনের থেকে কৃষি ও গ্রামীণ মজুর, পরিযায়ী শ্রমিক, আদিবাসী, অসংগঠিত তথা ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের শ্রমিক সহ সমস্ত প্রান্তিক মানুষদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে লাগাতার আন্দোলনে সামনের সারিতে থেকেছেন কমরেডরা। লকডাউন ও বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে লণ্ডভণ্ড দক্ষিণবঙ্গে এই পরিস্থিতিতে দুর্গত মানুষের পাশে সর্বতোভাবে দাঁড়ানোই ছিল এবারের নকশালবাড়ি দিবসের শপথ।
নকশালবাড়ি দিবসে পার্টির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য অফিসে শ্রদ্ধাঞ্জলি
২৫ মে ঐতিহাসিক নকশালবাড়ি দিবসে কলকাতায় সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের রাজ্য অফিস চত্বরে শহীদ বেদীতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য কার্তিক পাল, রাজ্য কমিটি সদস্য বাসুদেব বসু ও প্রবীর দাস।
দার্জিলিং
আপোসহীন নকশালবাড়ির প্রতিস্পর্ধার ধারাবাহিকতায় দার্জিলিং জেলার বিভিন্ন জায়গায় পালিত হয় ৫৪তম নকশালবাড়ি দিবস। অপরিকল্পিত লকডাউনে বিপর্যস্ত দেশের মানুষ, অন্যদিকে ঘূর্ণীঝড় আমফানে বিধ্বস্ত দক্ষিণবঙ্গের বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর দায়বদ্ধতা। আরেকদিকে সাম্প্রদায়িক বিভাজন ও কর্পোরেট ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নকশালবাড়ির দিশায় গণ আন্দোলনে গড়ে তোলার সংকল্পে বৃষ্টিস্নাত সকাল থেকে বিকাল আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনাকে উপেক্ষা করেই কমরেডরা শিলিগুড়ি থেকে রাঙাপাণি – নকশালবাড়ি থেকে খড়িবাড়ি শহর থেকে গ্রাম জড়ো হয়েছিলেন বিভিন্ন জায়গায়।
শিলিগুড়ির সুভাষপল্লী স্থিত কমরেড চারু মজুমদারের মূর্তির সামনে দার্জিলিং জেলা কমিটির উদ্যোগে ৫৪তম নকশালবাড়ি দিবস পালিত হয়। মাল্যদান শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন জেলা সম্পাদক অভিজিৎ মজুমদার। শ্লোগান সংকল্পে নকশালবাড়ির আলোকে গণসংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে শেষ হয় কর্মসূচী। কর্মসূচীতে শ্রমজীবী মহিলাদের একাংশের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য।
স্কুলডাঙি দ্রোহকালের জন্মস্থান নকশালবাড়ির স্কুলডাঙিতে বসন্তের বজ্রনির্ঘোষের উত্তাল সময়ের যোদ্ধা জেলা সদস্য খেমু সিং, কান্দরা মুর্মু, নেমু সিং, দেওয়ান মার্ডি, পবিত্র সিংহ, শরত সিংহ, বন্ধু বেক; এ সময়ের সহযোদ্ধা সুমন্তি এক্কা, রমু সিংহ, আন্দোলনের প্রথম শহীদ নেতৃত্ব কমরেড বাবুলাল বিশ্বকর্মকারের ছেলে বিভাস বিশ্বকর্মকার প্রমুখের উপস্থিতিতে কান্দরা মুর্মু রক্ত পতাকা উত্তোলন করেন। সত্তরের শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত শহীদ বেদীতে মাল্যদানের পর সেদিনের যোদ্ধা বর্তমানের অন্যতম প্রবীণ জেলা সদস্য খেমু সিংহের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে কর্মসূচী শেষ হয়। খড়িবাড়ির কদুভিটায় প্রবীণ নেতৃত্ব কমরেড শিরিল এক্কা অশক্ত শরীরে বাড়িতে বসেই সাদ্রী ভাষায় সহজ সরল ভাবে নকশালবাড়ি আন্দোলনে কথা, বর্তমান সময়ে তার মর্মবস্তু উপলব্ধি করে বর্তমানের কর্মীদের সেই দিশায় শাসকের বিরুদ্ধে লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। ফাঁসিদেওয়া ব্লকের রাঙাপাণিতেও নেমু সিংহ, পবিত্র সিংহ, শরত সিংহ পঞ বর্মণ প্রমুখের উপস্থিতিতে বর্তমান ফ্যাসিবাদী, সাম্প্রদায়িক শাসকের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে এবং বর্তমানে সংকটজনক পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে থেকে মানুষের জন্য সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকারে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয় নকশালবাড়ি দিবস।
জলপাইগুড়ি
২৫ মে পার্টি কার্যালয়ে রক্ত পতাকা উত্তোলন করেন জেলা কমিটির বর্ষীয়ন সদস্য সুভাষ দত্ত। উপস্থিত জেলা সদস্য শ্যামল ভৌমিক, প্রদীপ গোস্বামী, মুকুল চক্রবর্তী সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অপরিকল্পিত লকডাউনের ফলে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ পরিযায়ী শ্রমিক কৃষকদের যে সঙ্কটর মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে সে কথা উল্লেখ করে কেন্দ্র এবং সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং চরম ফ্যাসিস্ট, অগণতান্ত্রিক, সাম্প্রদায়িক মোদী সরকারের বিরুদ্ধে নকশালবাড়ির দিশায় গণআন্দোলনে গড়ে তোলার আহ্বান রাখেন। দাবি ওঠে কেন্দ্রীয় সরকারকে সাইক্লোন আমফানেকে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণা করে বিধ্বস্ত বাংলার পুনর্নিমাণের জন্য সমস্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। জলপাইগুড়ি শহর ছাড়া ময়নাগুড়ির চুড়া ভান্ডার সহ গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় যথাযথ মর্যাদায় ৫৪তম নকশালবাড়ি শহীদ দিবস পালিত হয়।
হাওড়া
ঐতিহাসিক নকশালবাড়ির ৫৩ তম বছর শ্রদ্ধার সঙ্গে পালিত হল হাওড়া জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে। রক্ত পতাকা উত্তোলন, শহীদ বেদীতে মাল্যদান, নকশালবাড়ির বীর শহীদ সহ বাম ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও বিধ্বংসী আমফান ঝড়ে মৃত মানুষ দের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নীরবতা পালন করা হয়। বালীর জোড়া অশ্বথতলায় শহীদ বেদীর সামনে পতাকা উত্তোলন করেন হাওড়া জেলা কমিটির সদস্য কমঃ রঘুপতি গাঙ্গুলী, মাল্যদান ও শহীদদের স্মরনে নীরবতা পালনের পরে নকশালবাড়ির প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে বক্তব্য রাখেন রাজ্য কমিটির সদস্য কমঃ তপন বটব্যাল। সাম্প্রতিক কালে পার্টির কাজের বিস্তারের জায়গা শান্তিরাম রাস্তায় শহীদ বেদী স্থাপন ও পতাকা উত্তোলন করেন বর্ষীয়ান কমরেড মনোরঞ্জন ব্যানার্জ্জী। জগাছা অঞ্চলে বিধ্বংসী আমফান ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়, ভেঙ্গে যায় লোকাল কমিটির কার্যালয়ে টালির চালের একাংশ। বিপর্যস্ত পার্টি কমরেডরা সমস্ত বাধা দূরে সরিয়ে রেখে উপস্থিত হন ২৫ মে কর্মসুচীতে। রক্ত পতাকা উত্তোলন করেন পার্টির জেলা সম্পাদক কমঃ দেবব্রত ভক্ত। এর পর শহীদ বেদীতে মাল্যদান ও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নীরবতা পালন করা হয়। ঘোড়াঘাটা বাজারে পতাকা উত্তোলন করেন হাওড়া জেলা কমিটির সদস্য কমঃ সনাতন মনি, উপস্থিত ছিলেন অন্যান্য কমরেডরা।
হুগলী
একাধিক জায়গায় কোথাও বিদ্যুতের দাবিতে রাস্তায় নামা মানুষের পাশে তো কোথাও কৃষিকাজ ও ঘরবাড়ি হারানো কৃষক-ক্ষেতমজুরদের জন্য ত্রাণকার্যে আবার কোথাও টোটোচালক মেহনতি মানুষদেরকে সহযোগিতা —এমনই নানাবিধ উদ্যোগের মধ্যে রয়েছেন হুগলী জেলার পার্টি কর্মীরা। সেসবের পাশেই যথোচিত শ্রদ্ধার সাথে নকশালবাড়ি দিবস উদযাপিত হল জেলায়।
চুঁচুড়ার জেলা পার্টি অফিসে পতাকা উত্তোলন করেন পার্টির সূচনালগ্ন থেকে যুক্ত কমরেড খোকন ব্যানার্জি। আমফান দুর্যোগে নিহত মানুষ, লক ডাউনের সময় কেন্দ্রীয় সরকারের উদাসীনতায় দুর্ঘটনায় এবং পথিমধ্যে ও আত্মহত্যায় বাধ্য শ্রমিক এবং কমিউনিস্ট আন্দোলনের সমস্ত শহিদদের স্মরণে নীরবতা পালন করা হয়। বতর্মান পরিস্থিতিতে আমাদের কর্তব্য সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন বর্ষীয়ান নেতা মানিক দাশগুপ্ত, জেলা সম্পাদক প্রবীর হালদার, নির্মাণ সংগঠক সুভাষ অধিকারী, উপস্থিত ছিলেন বর্ষীয়ান কমরেড কল্যাণ সেন, সুদর্শন বসু, নির্মাণ সংগঠক গোপাল পাল সহ অন্যান্য সদস্যরা।
ধনেখালি ব্লকের মল্লিকপুরে পোলবা-দাদপুরের ও ধনেখালির কমরেডরা পতাকা উত্তোলন ও শহীদ স্মরণ করে ‘সেদিনের অনুপ্রেরণা ও আজকের তাৎপর্য’ বিষয়ে আলোচনা করেন। অগ্রণী ভূমিকায় ছিলেন আদিবাসী মঞ্চের কমরেড পাগান মুর্মু, বিশ্বনাথ সরেন, যুব সংগঠক কমরেড সজল দে, শৈলেন মাজি, নন্দলাল মাহেলি, অনিল মাহেলি, ছাত্রী ও মহিলা সংগঠক কমরেড অর্পিতা রায়, ক্ষেতমজুর নেতা কমরেড গোপাল রায়, অজিত শেঠ, সজল অধিকারী সহ দীর্ঘদিনের প্রবীণ অন্যান্য কমরেডরাও। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য এই সমগ্র অঞ্চলটি এখন নতুন উদ্যমে দরিদ্র আদিবাসী ও কৃষিজীবি মানুষের রেশন, রোজগার, লোকশিল্পের মর্যাদা ও অধিকার অর্জনের বহুমুখী লড়াইয়ের ক্ষেত্র হয়ে উঠছে। পাণ্ডুয়া ব্লকের সাঁচিতাড়া অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে পার্টি তথা নকশালবাড়ির রাজনীতি আঁকড়ে থাকা দরিদ্র ক্ষেতমজুর কমরেডরা পতাকা উত্তোলন ও শহীদ স্মরণের পরে এই দুর্যোগ কবলিত সময়ে পার্টির ভূমিকা পর্যালোচনা করেন। বৈঁচিতে নকশালবাড়ি দিবস উদযাপিত হয় বুনিয়াদী জনগণের ওপর নির্ভর করে আন্দোলনের গুরুত্ব ও চতুর্থ দফা লকডাউনের শুরুতে মোদির ৩৩ মিনিটের ভাষণের ফ্যাসিবাদী স্বরূপ নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে। সভায় সিদ্ধান্ত হয় : আগামী ২৭ তারিখ বিকেল ৩টের সময় “আমফান” ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের দাবি নিয়ে বিডিওর নিকট ডেপুটেশন দেওয়া হবে।
এছাড়াও, বলাগড় ব্লকের গুপ্তিপাড়া পার্টি ব্রাঞ্চ, ২নং কলোনি বাজার পার্টি অফিসে কোন্নগর-রিষড়া লোকাল কমিটি, দেশবন্ধু পার্কে হিন্দমোটর-কোতরং লোকাল কমিটি ও ভদ্রেশ্বরে অ্যাঙ্গাস পার্টি ব্রাঞ্চের পক্ষ থেকে রক্তপতাকা উত্তোলন ও শহীদ স্মরণ হয়। নকশালবাড়ি কেবল ইতিহাস নয়, নকশালবাড়ি বর্তমান, নকশালবাড়ি মূল্যবোধ এই কথাগুলি সোচ্চারে স্লোগানে উঠে আসে।
নদীয়া
কৃষ্ণনগর জেলা অফিসে উপস্থিত কর্মীরা নকশালবাড়ির তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করেন ও শহরের বুকে আগামী প্রচার কর্মসূচী নিয়ে পরিকল্পনা গৃহীত হয়। ধুবুলিয়া পার্টি অফিসে পতাকা উত্তোলন, শহীদ বেদীতে মাল্যদান কর্মসূচী সংগঠিত হয়।
নাকাশীপাড়ার গাছা বাজারে এক বিক্ষোভ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সম্প্রতি ঐ এলাকায় একটি জমির বিষয়কে কেন্দ্র করে পার্টি কর্মীদের উপর বিজেপি হামলা করে ও সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক প্রচার চালায়। এর বিরুদ্ধে ঐ প্রতিবাদী কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন পার্টির নদীয়া জেলা সম্পাদক সুবিমল সেনগুপ্ত, জয়তু দেশমুখ, কাজল দত্তগুপ্ত। এছাড়াও নকশালবাড়ি দিবস উদযাপন কর্মসূচী হয় নবদ্বীপ, তাহেরপুর, পলাশীপাড়া প্রভৃতি স্থানে।
দঃ ২৪ পরগণা
৫৪তম নকশালবাড়ি দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয় দঃ ২৪ পরগণা জেলা কার্যালয়ে। রক্ত পতাকা উত্তোলন করেন পার্টির দঃ ২৪ পরগণা জেলা সম্পাদক কিশোর সরকার। উপস্থিত ছিলেন জেলা কমিটির সদস্যা দেবযানী গোস্বামী, অঞ্জনা মাল, বজবজ শহর লোকাল কমিটির সম্পাদক অঞ্জন ঘোষ, দেবাশীষ মিত্র, রঞ্জন ঘোষ, নন্দন, বজবজ গ্রাম লোকাল কমিটির পক্ষে শ্যামসুন্দর গোস্বামী এবং ছাত্র-ছাত্রী কমরেডরা। বাখরাহাটে নকশালবাড়ি দিবসে রক্তপতাকা উত্তোলন করেন লোকাল কমিটির সদস্য ইস্রাফিল সেখ, শহীদ বেদীতে মাল্যদান করেন পার্টির লোকাল কমিটির অন্যতম সদস্যা পূর্ণিমা হালদার। সমগ্র কর্মসূচি পরিচালনা করেন পার্টির বিষ্ণুপুর-সাতগাছিয়া লোকাল কমিটির সম্পাদক নিখিলেশ পাল। বক্তব্য রাখেন জেলা কমিটির সদস্য শুভদীপ পাল ও অন্যন্যরা।
মুর্শিদাবাদ
বহরমপুর শহরের পার্টির জেলা অফিসে নকশালবাড়ির দিবস উদযাপন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। উপস্থিত ছিলেন জেলা সম্পাদক রাজীব রায়, রাজ্য কমিটির সদস্য সজল পাল, বহরমপুর শহরের সম্পাদক রবি মন্ডল, জেলা কমিটির অন্যতম সদস্য অপুর্ব লাহিড়ী সহ অন্যন্যরা। শহীদ স্মৃতিতে পুষ্প অর্পণ ও নীরবতা পালনের পরে জেলা কার্যালয়ে নকশালবাড়ি দিবসে পার্টির আহ্বান সম্পর্কিত আলোচনা করেন কমরেড সজল পাল। ২৭ মে এআইকেএসসিসি-র যৌথ কর্মসূটী নিয়েও আলোচনা করা হয়।
কলকাতা
বাঁশদ্রোণী মেট্রো স্টেশনের সামনে পতাকা উত্তোলন করে নকশালবাড়ি সহ সমস্ত গন আন্দোলনের শহীদদের স্মরণ করা হয়। বেহালা আঞ্চলিক কমিটির অন্তর্গত সরশুনা ব্রাঞ্চ ও কালীতলা ব্রাঞ্চের উদ্যোগে নকশালবাড়ি দিবস পালন করা হয় পতাকা উত্তোলন, শহীদ স্মরণ ও নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে। আমফান ঝড়কে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণা সহ ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ এবং খাদ্য, পানীয় জল ও ইলেক্ট্রিসিটি সরবরাহ দ্রুত বৃদ্ধি করার দাবি জানানো হয়। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও পরিযায়ী শ্রমিকদের দাবিগুলিকেও তোলা হয়।
যাদবপুর-এর পালবাজার ও লোকাল কমিটির অফিসে নকশালবাড়ি আন্দোলনের বীর শহীদদের স্মরণ করা হয় রক্ত পতাকা উত্তোলন, মাল্যদান ও নিরবতা পালনের মাধ্যমে। এই দিন যাদবপুরের গাঙ্গুলিপুকুর কার্যালয় থেকে লকডাউনে বিপর্যস্ত ৬০ জন মানুষের হাতে খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেট তুলে দেওয়া হয়। এছাড়াও পার্টির পক্ষ থেকে এই সপ্তাহে এলাকার ২৫০ জন মানুষের ও আম্পানে ভয়ানক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পার্ক-সার্কাস ময়দানের ২০ জন ঝুপড়িবাসীর হাতে রেশন তুলে দেওয়া হয়েছে।
পূর্ব বর্ধমান
পূর্বস্থলী ২নং ব্লক এর ফলেয়া অফিসে ঐতিহাসিক নকশালবাড়ি অভ্যুত্থানের ৫৩তম বার্ষিকী উদযাপন করা হয়। শহীদ বেদীতে মাল্যদান ও নকশাল বাড়ীর শহীদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হল। নেতৃত্ব দেন জেলা কমিটির সদস্য কমরেড সমীর বসাক। মেড়তলা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার চণ্ডীপুর গ্রামের চড়কতলায় শহীদ বেদীতে মাল্যদান ও দ্রোহকালের অমর শহীদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
এছাড়াও কাটোয়া থানার সাহাপুর গ্রামে, সদর ২নং ব্লক এর শক্তিগড়ে, কালনা লোকাল কমিটির উদ্যোগে আগ্রাদহ গ্রামে শহীদদের স্মৃতিসৌধে মাল্যদান ও নকশাবাড়ির বীর শহীদদের স্মরণ করে নীরবতা পালন করা হয়। শ্লোগান ওঠে আমফানে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। লকডাউনকে কাজে লাগিয়ে কর্পোরেট স্বার্থে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনের পরিবর্তন করা চলবে না। ১০০ দিনের কাজ চালু করতে হবে। বন্ধন সহ সমস্ত ধরনের ঋণ মুকুব করতে হবে। বিদ্যুতের বিল মুকুব করতে হবে। জবকার্ড অ্যাকাউন্ট-এ ১০ হাজার টাকার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
উত্তর ২৪ পরগণা
বেলঘরিয়ার জেলা কার্যালয়ে সকালে রক্তপতাকা উত্তোলন ও শহিদ স্মরণের মধ্যে দিয়ে নকশাল বাড়ির ৫৩ বছর পালিত হয়। অশোকনগর ও গাইঘাটার চাঁদপাড়া অফিসে শহীদ স্মরণ ও আজকের দিনে নকশালবাড়ি দিবসের তাৎপর্য আলোচিত হয়।
বারাসাতে নকশাল বাড়ি দিবস উদযাপনের কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন রাজ্য কমিটির সদস্য অনিমেষ চক্রবর্তী ও জেলা সদস্য নির্মল ঘোষ। সন্ধেবেলা শহীদদের স্মরণ করে নৈহাটি অগ্নিবীণা সাংস্কৃতিক সংস্থা সামাজিক মাধ্যমে সরাসরি প্রতিবাদী গণসঙ্গীত উপস্থাপনা করেন।