পুর্ব বর্ধমান জেলার জামালপুর ব্লকে ঋণমুক্তি কমিটির নেতৃত্ব বিডিও, থানা ডেপুটেশন, বিক্ষোভ, গণ কনভেনশন, বারবার মিছিল, অবরোধ আন্দোলনের ফলে মাইক্রোফিনান্স সংস্থার এজেন্টদের জুলুম নির্যাতন কমেছি। কিন্ত বর্তমানে লকডাউন শিথিল হওয়ার পর আবার এজেন্টদের জুলুম নির্যাতন বেড়ে চলেছে। ইতিমধ্যেই, যেহেতু ঋণ মুকুবের প্রশ্নে সরকারের কোনো পদক্ষেপ নেই, আবার এজেন্টদের বিভ্রান্তিমুলক প্রচার ও কৌশল অবলম্বন শুরু হয়েছে। যেমন, ‘পুরো কিস্তির টাকা শোধ করতে না পারলেও ১০০/২০০ টাকা দিলেই চাপ কমবে’ ইত্যাদি। তাই অনেকে এভাবেই রেহাই পাওয়ার চেষ্টাও করছেন। শেষ বিচারে আরও বেশি ঋণ ফাঁদে জড়াচ্ছেন। আসলে ঋণমুক্তির আন্দোলনকে দুর্বল করার চক্রান্ত। তাই গত ২৪ ডিসেম্বর জামালপুর ব্লকের বন্ধন ব্যাংকে ঋণমুক্তি কমিটির পক্ষ থেকে ঘেরাও বিক্ষোভ ও ডেপুটেশন সংগঠিত করা হল। মিছিল করে বন্ধন ব্যাঙ্কের সামনে জমায়েত হয়। ব্যাংক তাদের গেট বন্ধ করে দিলেন। অনেক সময় বিক্ষোভ অবরোধ চলার পর ঋণ মুক্তি কমিটির পক্ষ থেকে ডেপুটেশন দিতে চায়। কর্তৃপক্ষ ডেপুটেশন নিতে অস্বীকার করেন। পুলিশে খবর দেন। জামালপুর থানার পুলিশ আসে। পুলিশও বলেন আপনারা অগ্রিম জানিয়ে আসেন নাই। তাই ডেপুটেশন নেওয়ার বাধ্যতা নেই। ঋণমুক্তি কমিটির পক্ষ থেকেও আইনের প্রশ্নে চ্যালেঞ্জ করা হয়। পরে আন্দোলনরত ঋণগ্রস্ত মহিলাদের অনঢ় অবস্থানের ফলে বাধ্য হয়ে ডেপুটেশন গ্রহণ করার ব্যবস্থা করেন। ডেপুটেশনে দাবি ছিল –
১) কিস্তির টাকা শোধ করতে না পারার জন্য ঋণগ্রস্ত মহিলাদের উপর এজেন্টদের জুলুম নির্যাতন, অপমান-অসম্মান বন্ধ করতে হবে।
২) কিস্তির টাকা শোধ ২ বছর স্থগিত রাখতে হবে। এই সময়ের অতিরিক্ত সুদ নেওয়া চলবে না। ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সমস্ত ধরনের গরিবদের ঋণ মুকুবের ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে।
এই কর্মসূচীর নেতৃত্ব দেন কমরেড কুনাল বক্সী, রহিমা খাতুন ও নিতাই ক্ষেত্রপাল। সামগ্রিকভাবে উপস্থিত থেকে সংগঠিত করেন সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের জেলা সম্পাদক কমরেড সলিল দত্ত।
২৫ ডিসেম্বর খন্ডঘোষ থানার বেরুগ্রামে ঋণমুক্তির দাবিতে গন কনভেনশন সংগঠিত হয়। শতাধিক ঋণগ্রস্ত মহিলাদের উপস্থিতিতে এই কনভেনশন অনুষ্ঠিত হল। কনভেনশনে বিভিন্ন বক্তা এজেন্টদের জুলুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে সংগ্রামের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন এবং আন্দোলন শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। বক্তব্য রাখেন কমরেড কুনাল বক্সী ও সলিল দত্ত। ২৮ ডিসেম্বর রাজ্য কনভেনশনে হুগলি জেলার চুঁচুড়ায় প্রতিনিধিদের যাওয়ার আহ্বান রাখা হল।
২৬ ডিসেম্বর ঋণমুক্তি কমিটির পক্ষ থেকে ৬০ জন ঋণগ্রস্ত মহিলাদের উপস্থিতিতে পুর্বস্থলী থানায় ডেপুটেশন দেওয়া হল। নেতৃত্ব দেন কমরেড অশোক চৌধুরী।