১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭টা সোয়া ৭টা, পুলিশের ঘেরাটোপে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।" ঘোষিত উদ্দেশ্য" মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় কে "উদ্ধার" ! রাজ্যপালের পেছন পেছন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঢুকলো একদল পরিচিত দুস্কৃতি। লোকে তাদের আর এস এসের মদতপুষ্ট গুন্ডা বলেই চেনে। রাজ্যপাল যখন " উদ্ধারকাজে" ব্যস্ত,তখন সংঘী গুন্ডারা পুলিশের চোখের সামনে শুরু করে দিয়েছে তান্ডব। বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ থেকে শুরু করে ছাত্র সংসদের অফিস ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ।চে গেভারার ফটো ভেঙে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া। বাধা দিতে গিয়ে ছাত্র ছাত্রীরা আক্রান্ত, লাঞ্ছিত। রাজ্যপালের কাছে পুলিশ মারফত সব খবরই রিলে হচ্ছিল। রাজ্যপাল তখন ছাত্র ছাত্রীদের "সবক" শেখাতে ব্যস্ত।
তারপর কেটে গেল একমাস। " বিলম্বিত বোধোদয়" বলে একটা কথা অভিধানে আছে। আমরা জানি না,রাজ্যপাল ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় তাঁর উপস্থিতিতে (? পরোক্ষ মদতে ) বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে সংঘী গুন্ডারা যে তান্ডব ও গুন্ডামি করল,তার নিন্দা করবেন কিনা। আমরা অপেক্ষায় থাকলাম।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কাকে সাম্মানিক ডি লিট দেবে, কাকে সাম্মানিক ডিএসসি দেবে তা ঠিক করা বা নির্ধারণ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের " কোর্ট" বৈঠকে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় কেন ,তার যৌক্তিকতাই বা কোথায় তা শুধু বোধগম্য নয়, তাই নয়,যথেষ্ট প্রশ্নসুচক।
ঔপনিবেশিক যুগে ব্রিটিশ লাটসাহেবরা বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চূড়ায় বসে থাকতেন , উপনিবেশ বিরোধী জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি নজরে রাখার জন্য।৭০ বছরের স্বাধীন দেশেও কেন এবং কি যুক্তিতে রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য থাকবেন,বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চূড়ামণি থাকবেন তা নগ্ন রাজনীতি ছাড়া আর কিছু হতে পারে না।
এবছরের ১৯ সেপ্টেম্বর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র বিক্ষোভের ঘটনায় রাজ্যপাল যে বিতর্কিত ভূমিকা রেখেছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে " সাম্মানিক" ডিলিট, ডিএসসি দেবার জন্য "কোর্ট" বৈঠকে রাজ্যপালের অংশগ্রহণ যথেষ্ট প্রশ্নসুচক।
কোর্ট বৈঠকে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের অংশগ্রহণের আমরা তীব্র বিরোধিতা করছি ।
---- পার্থ ঘোষ,
সিপিআই(এমএল) লিবারেশন