ইংল্যান্ডে জুনিয়ার ডাক্তাররা ধর্মঘটে সামিল
strike-in-england

ইংল্যান্ড জুড়ে হাজারে হাজারে জুনিয়ার ডাক্তাররা ১৩ মার্চ ২০২৩ থেকে ধর্মঘটে পা বাড়ালেন। তিনদিন ধরে চলা তাঁদের এই ধর্মঘটের ফলে গোটা যুক্তরাজ্যে সরকার পোষিত হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো অচল হয়ে পড়ে।

ডাক্তারদের ট্রেড ইউনিয়ন ব্রিটিশ মেডিকাল সংস্থা জানিয়েছে, ২০০৮’র পর থেকে জুনিয়ার ডাক্তারদের প্রকৃত বেতন হ্রাসপ্রাপ্ত হয়েছে ২৬ শতাংশ। এদিকে, পাল্লা দিয়ে বেড়েছে কাজের অতিরিক্ত বোঝা, দীর্ঘায়িত হয়েছে রোগিদের সারি। মূল্যস্ফীতি সেখানে নাগালের বাইরে। জুনিয়ার ডাক্তাররা ঘন্টা প্রতি আয় করেন মাত্র ১৪.০৯ পাউন্ড বা ১৭ ডলার। ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় জুনিয়ার ডাক্তাররা ২৬ শতাংশ, তাই এই ধর্মঘট ওখানকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে বিপর্যস্থ করে দিয়েছে।

সরকার সিনিয়ার ডাক্তার ও অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মীদের দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।

কয়েকমাস আগে অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মী, নার্স-প্যারামেডিক্স, বর্ধিত বেতন ও উন্নত কাজের পরিবেশের দাবিতে ধর্মঘট করেন।

ইংল্যান্ডের জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মেডিকাল ডাইরেক্টার জানিয়েছেন, জুনিয়ার ডাক্তারদের এই ধর্মঘট বিরাট প্রভাব ফেলেছে আর তা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকেই পুরোপুরি ভেঙে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, “ধর্মঘটি ইউনিয়ন সরকারের সাথে সহযোগিতা করছে না, কোন আলাপ আলোচনায় বসছে না।” এদিকে, ধর্মঘটি ইউনিয়ন জানিয়েছে, মাসের পর মাস ধরে তাঁরা তাঁদের দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু সরকার কর্ণপাত করেনি। আর, এখন, বেশ কিছু পূর্বশর্ত আসছে আলোচনায় অংশ নেবার আগে।

ডাক্তারদের এই ধর্মঘটের পাশাপাশি আর কয়েকদিনের মধ্যে সেখানে শুরু হবে হাজারে হাজারে শিক্ষক ও সরকারি কর্মীদের ধর্মঘট। তাঁরা ঠিক করেছেন, যেদিন সরকার তার বাজেট পেশ করবে, সেদিন থেকেই শুরু হবে তাদের ধর্মঘট।

একের পর এক ধর্মঘটের ঢেউ গোটা ব্রিটেনকে বার বার অচল করে দিচ্ছে। এবছর জানুয়ারি মাসে সেখানে মুল্যস্ফীতি ১০ শতাংশে পৌঁছেছে। গত নভেম্বরে ১১.১ শতাংশের তুলনায় তা কম হলেও বিগত ৪০ বছরে তা এখনও সর্বোচ্চ।

হাজারে হাজারে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কর্মী, যাদের মধ্যে রয়েছেন ট্রেনের চালক, বিমানবন্দরে মালপত্র নামানো কর্মী, বর্ডার স্টাফ, বাস চালক, ডাক বিভাগের কর্মী — দলে দলে সকলেই কর্মবিরতি করেন বেতন বৃদ্ধির দাবিতে। ইউনিয়ন জানিয়েছে, সকলের বেতন, বিশেষ করে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেতন গত দশকে মুখ থুবড়ে পড়েছে। ওখানে দৈনন্দিন জীবন ধারণের খরচ, খাদ্য ও বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম চলে গেছে নাগালের বাইরে। তীব্র আর্থিক সংকটে ত্রাহিত্রাহি অবস্থা শ্রমিক কর্মচারীদের। তাই ধর্মঘট ছাড়া তাঁদের সামনে আর কোন রাস্তা খোলা নেই।

খণ্ড-30
সংখ্যা-7