তরাই-ডুয়ার্সে সার্বিকভাবেবোনাস ১৮.৫% ঠিক হলেও আরও কম দরে বোনাস স্থির হওয়া বা আদৌ কিছু ঠিক না হয়ে এমনকি ৮.৩৩%-র সর্বনিম্ন বোনাসে পর্যন্ত দাঁড়িয়ে আছে বহু বাগান। দার্জিলিং পাহাড়ের চা বাগানগুলিতে ১০.৫% বোনাসের কথা এবং এটা নিয়ে আর কোনও মিটিং হবে না বলে অনড় বসে আছে দার্জিলিং টি-র মালিকরা। উৎসবের দিনে বাগানের গেটে-গেটে শ্রমিকরা আর তাদের বাড়ির দরজায় সন্তানরা উদগ্রীব হয়ে থেকেছেন। বাজারহাট না গিয়ে আন্দোলনকারীরা অগত্যা দৌড়েছেন কলকাতা, শেষ আশা নিয়ে। ওদিকে মাছি মারছে বাজারের দোকানগুলো, যদিও অবশ্য জায়গায় জায়গায় তারা চা শ্রমিকদের লড়াইয়ের সংহতিতে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, অর্ধদিবস দোকানের শাটার বন্ধ রেখে।
এসবই হল এখন চালু চা বাগানের কথা, যাদের দৌলতে টি বোর্ডের তথ্যে এবারও লেখা হয়েছে যে চা-এর উৎপাদন আর বিক্রিও বেড়েছে এবছরও। বন্ধ বাগানের কথা এবারও ছেড়ে দিলাম। না আছে বেতন, না বোনাস। ফাউলাই নামক আপাত অনুদানের মলম লাগিয়ে ক্ষত মেকআপ দিচ্ছে সরকার। মিনিমাম ওয়েজ-এর আইনই এখনও লাগু হল না চা বাগানে।
এই সময়ে উত্তাল লড়াই করার ছিল। কিন্তু আইনানুগভাবেই জমি-বাড়ির পাট্টাবিহীন চা শ্রমিক আর তাদের পরিবারগুলো এনআরসি-র আতঙ্ক বুকে বয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছে অস্তিত্ব প্রমাণের কার্যকরী শংসাপত্র। কেউ জানে না কী দিয়ে হবে তা। দিগন্ত প্রসারিত চা গাছগুলোতে পূর্বপুরুষদের হাতের ছাপ, মাটিতে সিঞ্চিত তাঁদের রক্তঘাম অথবা সমাধিতে শায়িত তাঁদের দেহগুলো এ যাত্রায় এনআরসি থেকে বাঁচাবে কিনা জিগ্যেস করছে কেউ কেউ।
আরো অনেক ছোটো, বড়ো বাগানের শ্রমিকেরা রুটি, রুজি, ভিটে, মাটি হারানোর আশংকায় দিন গুনছেন।