মোদীর প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ইলেকটোরাল বন্ড চালু করেছে,বার বার আইন ভেঙেছে — বিজেপি’কে কালো টাকার ইন্ধন যোগানোর জন্য

২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের সিপিআই(এমএল) ইস্তাহারে দাবি জানানো হয়েছিল “মোদী সরকারের নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প (ইলেকটোরাল বন্ড স্কিম) বাতিল করো যা ক্রোনিজম এবং দুর্নীতিকে আড়াল করতে সাহায্য করছে” এবং ‘‘রাজনৈতিক তহবিলের স্বচ্ছতাকে সুনিশ্চিত করো”।

এটা সর্বজনবিদিত যে রাজনৈতিক অনুদান যা ইলেকটোরাল বন্ড-এর প্রথম কিস্তি থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল তার ৯৫ শতাংশই বিজেপি’র তহবিলে গিয়েছিল। তাদের চালু করা এই স্কিমের প্রধান সুবিধাভোগী তারাই ছিল। এই বন্ড তাদের সাগরপারের অ্যাকাউন্টের কালো টাকাসহ কর্পোরেট এবং বিদেশি উৎস থেকে সীমাহীন, গোপন অনুদান নেওয়ার অনুমোদন দিয়েছিল।

সম্প্রতি প্রকাশিত তথ্য নিশ্চিত করেছে যে মোদী সরকারের চালু করা ইলেকটোরাল বন্ড দুর্নীতিকে বাড়িয়ে তুলেছে। তথ্যগুলি আরও তাৎপর্যপূর্ণভাবে নিশ্চিত করেছে যে আরবিআই এবং নির্বাচন কমিশন সরকারকে সতর্ক করেছিল যে ইলেকটোরাল বন্ড ভারতীয় নির্বাচনে কালো টাকার স্রোতকে উৎসাহিত করবে; সরকার অবশ্য সেই সতর্কবাণীকে উপেক্ষা করেছিল এবং এই ধরনের উদ্বেগ যে ব্যক্ত হয়েছিল সেকথা অস্বীকার করে সংসদে মিথ্যা বলেছিল। সরকার সেই বিধিগুলি বারংবার ভেঙেছে, যেগুলো ইলেকটোরাল বন্ডের কালো টাকাকে সাদা করার অন্তর্নিহিত সম্ভাব্যতাকে পরখ এবং খর্ব করার জন্যই বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছিল।

হাফিংটন পোস্টে ইংরাজিতে এবং অন্যান্য মাধ্যমে হিন্দি এবং ওড়িয়া ভাষায় প্রকাশিত পরপর কয়েকটি তদন্তভিত্তিক প্রতিবেদনে সাংবাদিক নীতিন শেঠি,কমোডোর লোকেশ বাত্রার ফাইল করা আরটিআই-এর সহায়তায়, এই নির্লজ্জভাবে প্রকট দুর্নীতি এবং অবৈধ স্কিমটিকে একবারে উলঙ্গ করে দিয়েছিলেন।

তৎকালীন অর্থমন্ত্রী, প্রয়াত অরুণ জেটলি, গত ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭-র বাজেট বক্তৃতায়  ইলেকটোরাল বন্ডকে প্রকাশ্যে আনার পরিকল্পনা নেওয়ার কয়েক দিন আগে, একজন আয়কর আধিকারিক জানিয়েছিলেন এই ইলেকটোরাল বন্ডের জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া আইন-এর সংশোধন  দরকার। ২৮ জানুয়ারি ২০১৭, অর্থ মন্ত্রক আরবিআই-এর মন্তব্য জানতে চেয়ে একটি টোকেন ই-মেল পাঠায়। আর বি আই অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে ৩০ জানুয়ারি ২০১৭-তে তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল।

আরবিআই বলেছিল, ইলেকটোরাল বন্ড দুর্নীতিকে মদত দেবে, ভারতীয় মুদ্রা ব্যবস্থায় অস্থিরতা সৃষ্টি করবে। এই তৎপরতার বিরুদ্ধে  জোরালোভাবে মতামত দিয়ে আরবিআই প্রধান জেনারেল ম্যানেজার পি বিজয়কুমার অর্থমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন: “প্রস্তাবিত এই ব্যবস্থা, নগদে বেয়ারার ইন্সট্রুমেন্ট চালু করার আরবিআই-এর নিরঙ্কুশ কর্তৃত্বের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে।” তিনি আরও বলেন, “বেয়ারার ইন্সট্রুমেন্টের মুদ্রা হয়ে ওঠার সম্ভাব্যতা আছে এবং যথেষ্ট পরিমাণে ছাড়া হলে তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ইস্যু করা ব্যাঙ্ক নোটের উপর আস্থা কমিয়ে দিতে পারে। আরবিআই অ্যাক্টের ৩১নং ধারা পরিবর্তিত হলে তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আইন ব্যবস্থার মূলনীতিকে সত্যি সত্যিই ক্ষুণ্ণ করবে এবং এর মাধ্যমে অত্যন্ত খারাপ একটা দৃষ্টান্ত তৈরি  হবে।”

কিন্তু মোদী সরকার আরবিআই-এর এই উদ্বেগকে অগ্রাহ্য করে  ইলেকটোরাল বন্ডকে আইনসিদ্ধ করার উদ্দেশ্যে আর্থিক বিল-২০১৭ পাস করাল।সরকার দাবি করেছিল, ইলেকটোরাল বন্ড স্বচ্ছতা রক্ষা এবং “ভারতে রাজনৈতিক তহবিল গঠনের ব্যবস্থাকে পরিচ্ছন্ন করার” একটি মাধ্যম। আরবিআই -এর সম্পূর্ণ বিপরীত অভিমত সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকা সত্ত্বেও তাকে উপেক্ষা করে সরকার এটা করল।

এই স্কিমটির ফলে, “ভারতীয় কোম্পানিগুলি, শেল (shell) কোম্পানি সহ, যেগুলোর রাজনৈতিক দল, ব্যক্তিসহ অন্যান্য বৈধ সংস্থা যেমন ট্রাস্টগুলিকে টাকা হস্তান্তরিত করা ছাড়া অন্য কোনো ব্যবসা নেই, এখন বেনামে যত খুশি ইলেকটোরাল বন্ড কিনতে এবং তাদের পছন্দ মতো কোনো রাজনৈতিক দলকে নগদে রূপান্তরিত করার জন্য হস্তান্তরিত করতে পারবে। বিদেশি কোম্পানিগুলিও এখন ভারতের রাজনৈতিক দলগুলোকে টাকা পাঠাতে পারবে।” (নীতিন শেঠি, হাফিংটন পোস্ট)

২০১৭-র আগস্টে অর্থ মন্ত্রককে পাঠানো আরেকটি চিঠিতে, আরবিআই-এর ডেপুটি গভর্নর বি পি কানুনগো আবারও সতর্ক  করেন যে, “এই বন্ডগুলির মধ্যেই এগুলিকে অনভিপ্রেত কাজকর্মে লাগানোর মতো অপব্যবহারের সুযোগ রয়েছে” তিনি আরও বলেন, “আপনি নিশ্চয়ই জানেন সাম্প্রতিককালে আন্তর্জাতিক স্তরেও এইরকম বেয়ারার বন্ড ছাড়ার দৃষ্টান্তও নেই বললেই চলে।”

সরকার নির্বাচন কমিশনের আপত্তি সম্পর্কে সংসদে মিথ্যা বলেছিল

নির্বাচন কমিশন ২০১৭-র মে-তে আইন এবং বিচার মন্ত্রককে জানিয়েছিল যে, এই ইলেকটোরাল বন্ড স্কিম যা দলগুলিকে এর আওতায় গৃহীত বিভিন্ন অনুদান সম্পর্কে রিপোর্ট না করার (অর্থাৎ গোপন রাখার) সুযোগ দিয়েছে, ‘‘অনুদানের স্বচ্ছতার প্রশ্নে একটি পশ্চাৎমুখী পদক্ষেপ।”

নির্বাচন কমিশন আরও বলে “এটা নিশ্চিত করা যাবে না যে, কোন রাজনৈতিক দল অনুদান নেওয়ার ক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ২৯বি ধারার সংস্থানকে ভঙ্গ করেছে কিনা, যাতে সরকারি কোম্পানি এবং বিদেশি উৎস থেকে যে কোনো রকম অনুদান নেওয়া নিষিদ্ধ।”

নির্বাচন কমিশন আরও উল্লেখ করে যে কোম্পানি আইন ২০১৩-র ১৮২ নং ধারার সংশোধনী “শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুদান দেওয়ার জন্য নতুন নতুন শেল কোম্পানি খোলার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেবে।”

নির্বাচন কমিশন “ইলেকটোরাল বন্ডের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর পাওয়া অনুদানের স্বচ্ছ রিপোর্টিং-এর ব্যবস্থা  রাখার জন্য “ এই স্কিমের কিছু  পরিবর্তন চেয়েছিল। বন্ড স্কিমের প্রকৃতি সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনকে বিভ্রান্ত করার বারংবার চেষ্টা ফলপ্রসূ হয়নি।

যাই হোক, এক বছর পর তৃণমূল সাংসদ নাদিমুল হক যখন সংসদে প্রশ্ন রাখেন “ইলেকটোরাল বন্ড ছাড়ার প্রশ্নে নির্বাচন কমিশন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে একথা কি সত্যি ?” তখন অর্থ মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী পন রাধাকৃষ্ণন মিথ্যা বলেছিলেন “সরকার ইলেকটোরাল বেয়ারার বন্ড ছাড়ার ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের থেকে উদ্বেগ সংক্রান্ত কোনো বার্তা পায়নি।” এরপর সরকার এই মিথ্যা ঢাকতে মিথ্যাশ্রয়ী আরও জগাখিচুড়ি গল্প বানিয়েছিল যার সবটাই আরটিআই-এর মাধ্যমে পাওয়া তথ্যে ফাঁস হয়ে গিয়েছিল।

পিএমও বন্ডেরঅবৈধ বিক্রির নির্দেশ দিয়েছিল

বন্ডের বিক্রি নিয়ন্ত্রিত করতে এবং অবাধ অর্থ-হস্তান্তর রুখতে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করার উদ্দেশ্যে জানুয়ারি ২০১৮-তে বিজ্ঞাপিত বিধিতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে এসবিআই প্রতি বছর কেবলমাত্র জানুয়ারি, এপ্রিল, জুলাই এবং অক্টোবরে চারটি দশ দিনব্যাপী ‘উইন্ডো সেল’-এর মাধ্যমে এবং সাধারণ নির্বাচনের বছরে অতিরিক্ত আরও ৩০ দিন দাতাদের বন্ড  বিক্রি করতে পারবে। সত্যি বলতে কি, আর বি আই বছরে মাত্র দু’বার খুব অল্প সময়ের জন্য বন্ড বিক্রির সুপারিশ করেছিল — যে সুপারিশকে অগ্রাহ্য করা হয়েছিল। কিন্তু আসল কথা হল, মোদী সরকার এবং বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এই ইলেকটোরাল বন্ডকে এটিএম উইন্ডো যা শাসক দল যখন খুশি প্রয়োজনমতো খুলতে পারে, সেই হিসেবে  ব্যবহার করেছে, এমনকি এই নমনীয়  বিধিগুলিকেও বারবার লঙ্ঘন করেছে।

হাফিংটন পোস্ট-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, “এসবিআই-এর প্রথম কিস্তি বিক্রির কথা ছিল এপ্রিল ২০১৮-তে, কিন্তু প্রথম পর্যায়ের শুরু হয়ে যায় আরও এক মাস আগে থেকে অর্থাৎ মার্চ ২০১৮ থেকে। এই রাউন্ডে ২২২ কোটি টাকার বন্ড বিক্রি হয়, যার ৯৫ শতাংশই যায় বিজেপি’র তহবিলে।”

পরবর্তী মাস অর্থাৎ এপ্রিল ২০১৮তে এসবিআই রাজনৈতিক অনুদানের জন্য আরেকটি উইন্ডো খোলে।এর মাধ্যমে আরও ১১৪.৯০ কোটি টাকার বন্ড অনুদান হিসেবে দেওয়ার জন্য কেনা হয়। কিন্তু তাতেও সরকার সন্তুষ্ট হতে পারেনি।

মে, ২০১৮তে কর্ণাটক নির্বাচনকে মাথায় রেখে পিএমও অর্থ মন্ত্রককে আরও ১০ দিনের জন্য বিশেষ এবং অতিরিক্ত আরেকটি উইন্ডো খোলার নির্দেশ দেয়।

অর্থ মন্ত্রক তার নথিতে দাবি করে যে ঠিক কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের আগে পিএমও’র নির্দেশে ইলেকটোরাল বন্ডের অবৈধ বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল “একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা” হিসেবে।

কিন্তু এই ‘ব্যতিক্রম’টাই খুব শীঘ্রই নিয়ম হয়ে দাঁড়ালো। অক্টোবর ২০১৮-তে অর্থ মন্ত্রক ইলেকটোরাল বন্ড-এর বিক্রির জন্য আরও একটি অতিরিক্ত দশ দিনের বিশেষ উইন্ডো খোলার অনুমতি দেয়। এইবার অবশ্য খোলাখুলি প্রস্তাব রাখে “পাঁচটি রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষিতে”। (নীতিন শেঠি, হাফিংটন পোস্ট)

কিন্তু কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের আগে পিএমও-র নির্দেশে দশ হাজার কোটি টাকায় কেনা ইলেকটোরাল বন্ড, কেনার পনেরো দিনের মধ্যে খালাস হতে পারেনি, বিধি-নির্দেশের কারণে। তবে কর্ণাটক বিধানসভার নির্বাচনে ত্রিশঙ্কু বিধানসভার ফলাফলের ঠিক পর পরই, কেন্দ্রীয় সরকার এসবিআই-কে মেয়াদ উত্তীর্ণ ঐ বন্ডগুলিকে গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছিল! এই বিধি ভঙ্গে সুবিধা হয়েছিল কার? যে কেউ অনুমান করতে পারে! লাভটা যদি বিজেপি’র না হোত, তাহলে কি কেন্দ্রীয় সরকার এই বিধি ভঙ্গের রাস্তায় হাঁটতো!

সরকার দাতাদের পরিচিতি খুঁজে বার করতে পারে জেটলি বলেছিলেন যে দাতারা শুধু নিজেরাই  জানতে পারেন, তারা একটি রাজনৈতিক দলকে কত অনুদান দিয়েছেন: এইভাবে ক্ষতিপূরণ (কুইড প্রো কুও) বা ঘনিষ্ঠদের আনুকূল্যের সম্ভাবনাকে খারিজ করে দেন।

সত্যি বলতে কি, সাংবাদিকরা দেখেছেন যে “ইলেকটোরাল বন্ডে আদতে সরকারের কাছ থেকে দাতাদের পরিচয় গোপন রাখার কোনো ব্যবস্থা নেই। এইসব অনুদানের উৎস সম্পর্কে সত্যিই যারা অন্ধকারে থাকে তারা হল ভারতের জনগণ এবং বিরোধী দলগুলো।”

২০১৮-র এপ্রিলে দি কুইন্ট প্রতিটি ১০০০ টাকা মূল্যের দুটি বন্ড কেনে এবং রিপোর্ট করে যে সেগুলোতে আলফানিউমেরিক গোপন কোড ছিল যেগুলো ইউ ভি আলোর নিচে দৃশ্যমান ছিল। অর্থ মন্ত্রক তখন দাবি করে যে “ঐ নম্বর এসবিআই-এর দ্বারা উল্লিখিত নয়’’ আর সে জন্যই দাতাকে খুঁজে বার করার জন্য ব্যবহার করা যাবে না।

এখন আরটিআই-এর মাধ্যমে পাওয়া তথ্যে প্রকাশ পেয়েছে যে, “কারা, কতগুলি বন্ড কিনেছে এবং কোন্ কোন্ রাজনৈতিক দলের কাছে বন্ডগুলিকে অনুদান হিসেবে দেওয়া হয়েছে — সেই সব তথ্য খুঁজে বার করার জন্য ঐ সংখ্যা-হরফের সাংকেতিক চিহ্ন (আলফানিউমেরিক কোড)-গুলি এসবিআই ব্যবহার করে থাকে। এইভাবে বন্ডগুলিকে অনুসরণ করার ব্যবস্থা (মেকানিজম) অর্থ মন্ত্রকের দ্বারা অননুমোদিত ছিল।ইলেকটোরাল বন্ডগুলিকে নিয়ন্ত্রণকারী বিধিগুলি এমন হতে হবে যে, যখন প্রয়োজন এই তথ্যগুলো আইন বলবৎকারী সংস্থাগুলিকে অবহিত করা যাবে।” (নীতিন শেঠি, হাফিংটন পোস্ট)

স্মরণ করুন, কালো টাকার উপর বিমুদ্রাকরণের কোনও প্রভাব  পড়বে না — আরবিআই-এর এই সতর্কবাণী সত্ত্বেও মোদী সরকার দেশের উপর জোর করে এই ব্যবস্থা চাপিয়ে দিয়েছিল। ঐ সময়েও প্রধানমন্ত্রী নিজে, বিমুদ্রাকরণকে “কালো টাকার উপর সার্জিক্যাল স্ট্রাইক” হবে — এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে দেশের মানুষকে ধোঁকা দিয়েছিলেন। তার ফল হয়েছিল — ভারতীয় অর্থনীতি তথা ভারতের দরিদ্র মানুষের জীবন জীবিকার চরম বিপর্যয়। এর মধ্যে ঐ একই সরকার,শাসক দল বিজেপি’র জন্য অকথিত পরিমাণে কালো টাকার গোপন যোগানকে অনুমোদন দিয়ে, আরবিআই এবং নির্বাচন কমিশনের এই সতর্কবাণী আবারও অগ্রাহ্য করল যেখানে বলা হয়েছিল ইলেকটোরাল বন্ড কালো টাকা এবং নির্বাচনী দুর্নীতিকে ইন্ধন যোগাবে।

ভারতীয় নির্বাচন ব্যবস্থায় দুর্নীতিকে মদত দেওয়া এবং ভারতীয়  মুদ্রাব্যবস্থার স্থিতিশীলতাকে বিপন্ন করার জন্য মোদী সরকার এবং বিজেপি’র অবশ্যই শিক্ষা পাওয়া উচিত — যার সবটাই করা হয়েছিল নিজেদের কালো টাকার তহবিলের সুরক্ষার জন্য।

(লিবারেশন, ডিসেম্বর ২০১৯)

খণ্ড-27
সংখ্যা-2