ঘটনা ও প্রবণতা

২০১৮-১৯ নির্বাচন পর্বে বিজেপির প্রাপ্ত কর্পোরেট আর্থিক ‘সাহায্য’-র মধ্যে তিন-চতুর্থাংশই এসেছিল টাটা গোষ্ঠীর থেকে। বিজেপি মোট কর্পোরেট অর্থ পেয়েছিল ৪৭২ কোটি টাকা, তার মধ্যে টাটাদের ‘প্রোগ্রেসিভ ইলেক্টোরাল ট্রাস্ট’ বা ‘পেট’ তহবিল থেকে দেওয়া হয়েছিল ৩৫৬ কোটি টাকা। পরিমাণটা মোট প্রাপ্তির ৭৫ শতাংশ। বিজেপির জন্য অকৃপণ হয়েছিল আরও কিছু বড় পুঁজি গোষ্ঠী। যেমন ভারতী এয়ারটেল গ্রুপ ‘প্রুডেন্ট ইলেক্টোরাল ট্রাস্ট’ নামে তার তহবিল থেকে দিয়েছিল ৬৭.৩ কোটি টাকা। আদিত্য বিড়লা গ্রুপের ‘এ বি জেনারেল ইলেক্টোরাল ট্রাস্ট’ জুগিয়েছিল ২৮.৫ কোটি টাকা। সবই ‘প্রগতিশীল’, ‘গৌরবময়’!! বিজেপির জন্য “অচ্ছে দিন” নিয়ে আসার সেবায় লেগেছে।

কর্পোরেটরা অবশ্য কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস ইত্যাদিকেও বঞ্চিত করেনি। তবে বিজেপির ঝোলাভর্তির সাথে কোনো তুলনা হয় না।

— দি টাইমস অব ইন্ডিয়া, ৩০ নভেম্বর ২০১৯

 

উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে  এনআরসি-ক্যাব ফর্মূলা কার্যকরি হবে না বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যতই স্তোকবাক্য শোনান তা নিয়ে সন্দেহে অসন্তোষে ফুঁসছে ওই বিস্তীর্ণ সীমান্ত অঞ্চল। ইতিমধ্যে মেঘালয়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, অটোনমাস ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিল ও নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা দিল্লী গিয়ে অমিত শাহর কাছে ‘ক্যাব’-এর বিরোধিতার কথা জানিয়ে আসেন। প্রতিনিধিদলে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী সাংমা।

ইনার পারমিট অনুমোদিত থাকা অরুণাচল প্রদেশও যথেষ্ট উদ্বেগ প্রকাশ করছে ‘ক্যাব’ প্রসঙ্গে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বারকয়েক কথা হয়েছে, তবু অরুণাচলের সমস্ত মহল উদ্বিগ্ন।

— দি টেলিগ্রাফ, ১ ডিসেম্বর ২০১৯

 

“উত্তর-পূর্বের ‘জোট’ ভাঙল নাগরিকত্ব বিল’। যদিও মিজোরাম, অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, মেঘালয় ও মণিপুরকে নাগরিকত্ব সংশোধনীর বাইরে রেখে ‘শান্ত’ রাখার কৌশল নিয়েছে কেন্দ্র তথা বিজেপি, তথাপি এই পার্বত্য ভৌগলিক অঞ্চলসমূহে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য নানা মাত্রার অসন্তোষ আছে। তবে অসম আলোড়িত হচ্ছে নতুন করে অশান্তি ছড়ানোর ধারায়। বিজেপি যেভাবে এন আর সি নামিয়েছে, সেটাই আজকের অসমে ‘শেষ কথা’ বলে গণ্য হচ্ছে না। বিজেপি এখনও প্রচুর সংখ্যায় বিদেশী বহনের বোঝা চাপিয়ে রেখে কথার খেলাপ করেছে দাবি করে প্রস্তাবিত ক্যাব-বিরোধিতায় সরব আসু, অসম জাতিয়তাবাদী যুবছাত্র পরিষদ, কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি ইত্যাদি সংগঠন। অখিল ও তরুণ গগৈরা বলছেন, “বিজেপি হিন্দু-মুসলিম, বাঙালি-অসমিয়ার পরে জনজাতি ও অ-জনজাতির মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সিদ্ধ করতে চাইছে।” একই অভিযোগে সোচ্চার অসম সাহিত্য সভা, এআইইউডিএফ।                  

— আনন্দবাজার, ৫ ডিসেম্বর ২০১৯

 

কাশ্মীরে গত আগস্ট থেকে নভেম্বর চার মাসে পর্যটকের সংখ্যা ছিল ৩২ হাজারের কিছু বেশি। ২০১৮-র আগস্ট-নভেম্বর পর্বে পর্যটকের সংখ্যা ছিল ২.৪৯ কোটির মতো। অর্থাৎ ধারা ৩৭০ খারিজ পরবর্তী বিগত চার মাসে পর্যটক হ্রাস পেয়েছে ৮৭ শতাংশ। নভেম্বর পর্যটনের সবসেরা মাস, ভরা মাস। অথচ এবার হোটেল ব্যবসারও করুণ দশা। যেমন শ্রীনগরের রাজবাগে সামসি রিভিয়েরা হোটেল মালিক জানাচ্ছেন, হোটেলের ২৪টি ঘর অন্যান্যবার ভরে থাকে, কিন্তু এবার ভাড়া জুটেছে মাত্র ৪টি ঘরের, তাও অর্দ্ধেক অর্থ-কড়ি মূল্যে।

— দি টাইমস অব ইন্ডিয়া, ৯ ডিসেম্বর ২০১৯

 

সমগ্র উত্তর-পূর্বাঞ্চল গত ৬ ডিসেম্বর কেবলমাত্র নাগাল্যান্ড বাদে কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায় নর্থ ইস্ট স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন (নেসো) ১১ ঘন্টা বনধ্ পালনের আহ্বান দেওয়ায়। নাগাল্যান্ডকে বনধ্ করার আওতার বাইরে রাখা হয় এক উৎসব থাকার কারণে। এই বনধ্ কর্মসূচী ছিল প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্থান থেকে আগত কেবলমাত্র অ-মুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়ার সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে।

— দি টেলিগ্রাফ, ৭ ডিসেম্বর ২০১৯

 

কাজ গিয়েছে ১ লক্ষ কর্মীর। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ছয়মাসে গাড়ির যন্ত্রপাতির শিল্প ক্ষেত্রে উৎপাদনে ঝিমুনি ও কাজ চলে যাওয়ার ছবি যা মিলল তা আগে কখনও দেখা যায়নি। এই অভিমত সংশ্লিষ্ট শিল্প-ইউনিয়ন “অ্যাকমা”-র। এবছর ব্যবসা হ্রাস পেয়েছে প্রায় ১০ শতাংশ, কাজ চলে গেছে ১ লক্ষ অস্থায়ী কর্মীর। গাড়ি কোম্পানিগুলি ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে ১৫-২০ শতাংশ। তার জেরে মার খেয়েছে গাড়ির যন্ত্রাংশ তৈরির ব্যবসাও। গত বছর এসময়ে ব্যবসা করেছিল ১.৯৯ লক্ষ কোটি টাকার, এবছর ব্যবসা হয়েছে ১.৭৯ লক্ষ কোটি টাকার। ব্যবসা কমায় হ্রাস পেয়েছে লগ্নিও।

— ৭ ডিসেম্বর, আনন্দবাজার ২০১৯

 

অযোধ্যা রায়ের ওপর পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে সুপ্রীম কোর্টে জমা পড়েছে আরও ৫টি আবেদনপত্র। পর্যালোচনার দাবি প্রসঙ্গে বলা হয়েছে মামলার রায় দেওয়া হয়েছে হিন্দু বিশ্বাসের ভিত্তিতে, বিশ্বাসযোগ্য যুক্তি ও বিশ্লেষণের ভিত্তিতে নয়। ন্যায়বিচারের  আবেদন জানিয়েছে জমিয়ত উলেমা-ঈ-হিন্দ্-এর পর আরও ৫টি মুসলিম সংগঠন।    

— দি টাইমস অব ইন্ডিয়া, ৭ ডিসেম্বর ২০১৯

 

ঝুলে ফাস্ট-ট্রাক কোর্ট
উন্নাওয়ের মেয়েটিকে পুড়িয়ে মারার বিচারে কত সময় লাগবে, সেই প্রশ্নের জবাবে মোদী সরকারের মন্ত্রীরা ফাস্ট-ট্রাক কোর্টের কথা তুলছেন। কিন্তু আরেক মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি সংসদে জানিয়েছেন, উত্তরপ্রদেশে ২১৮টি ফাস্ট ট্রাক কোর্ট গঠনের প্রস্তাব থাকলেও রাজ্যের সিদ্ধান্ত নেওয়া এখনও বাকি।

— আনন্দবাজার, ৯ ডিসেম্বর ২০১৯

 

২০১৯ অক্টোবর পর্যন্ত ভারতের দেশীয় সংস্থাগুলির বৈদেশিক বাণিজ্য ঋণের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ৩৪১ কোটি ডলার। যা ২০১৮-র অক্টোবরের (১৪১ কোটি ডলার) তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্য অনুযায়ী, ২৮৭ কোটি ডলার এসেছে সরাসরি। ৫৩.৮ কোটি ডলার এসেছে অনুমোদনের মাধ্যমে।

— আনন্দবাজার, ৯ ডিসেম্বর ২০১৯

 

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘বিশ্বমানের পরিকাঠামো’ গড়তে পাঁচ বছরে ১০০ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করা হবে। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেছেন, ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ১০টি প্রকল্প ঘোষণা করা হবে।

প্রশ্ন হল, বছর প্রতি ২০ লক্ষ কোটি টাকা লগ্নি হবে কোথা থেকে, যোগান মিলবে কিভাবে? কারণ অর্থব্যবস্থায় তো চলছে ঝিমুনি। বিভিন্ন আর্থিক সংস্থাও রয়েছে হাত গুটিয়ে। তাহলে বিনিয়োগের টাকা আসবে কোথা থেকে? কেন্দ্রই জানাচ্ছে, ইতিমধ্যে গৃহীত ৩৬০টি প্রকল্পের কাজ সময়ে শেষ হয়নি। ফলে ঐ সমস্ত প্রকল্পে সংশোধিত ব্যয় বেড়ে গেছে। সরকারের নতুন ১০ প্রকল্প ঘোষণা প্রসঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগছে এর আর্থিক রসদ মিলবে কোথা থেকে?

— আনন্দবাজার, ৮ ডিসেম্বর ২০১৯

 

পরিসংখ্যান বলছে, এনএসএসও-র মতে, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে ভারতে বেকারি পৌঁছেছিল, ৬.১ শতাংশে, ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ।

সিএমআইই-র হিসাবে অক্টোবরে বেকারত্ব ছিল ৮.৫ শতাংশ,যা ২০১৬ সালের আগস্টের পরে সর্বাধিক।

উপদেষ্টা সংস্থা অক্সফ্যামও বলেছে বাড়ছে বেকারি। কাজের বাজারে কাজ উধাও হচ্ছে, ছবিটা ভয়ঙ্কর ও হতাশাজনক। স্রেফ অটোমোবাইল শিল্পে কাজ চলে গেছে ৩.৫ লক্ষ কর্মীর।

তবু মোদীর মন্ত্রীমশাইরা বলছেন কোনো সংকট নেই! শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ কুমার গঙ্গোয়ার বললেন, কর্মসংস্থান কমে যাওয়ার মতো কিছু ঘটেনি। ভারী শিল্প প্রতিমন্ত্রী বললেন, গাড়ি শিল্পে চাকরি হারানো নিয়ে উদ্বেগের কারণ নেই। কোনও চাকরি সংকটে নেই।

— আনন্দবাজার, ১০ ডিসেম্বর ২০১৯

খণ্ড-26
সংখ্যা-42