দীর্ঘদিন ধরে পুর্ব বর্ধমান জেলার কালনা থানার অকালপৌষ গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিআই(এমএল) ও সারা ভারত কৃষি ও গ্রামীণ মজুর সমিতির পক্ষ থেকে ১০০ দিনের কাজের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছে। সিপিআই(এমএল) জয়ী পঞ্চায়েত সদস্যের গ্রাম ঝিকরে ও আগরাদহে গত বিধানসভা নির্বাচনের ভোটে তৃণমূল লীড করার পর জোর করে সুপারভাইজার পাল্টে দিয়ে নিজেদের পছন্দের সুপারভাইজার নিযুক্ত করে নিজেদের লোকদের কাজ দিতে শুরু করে। গ্রামের বেশিরভাগ সিপিআই(এমএল) এবং অন্যান্য বিরোধী দলের কর্মী সমর্থকদের কাজ দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেইদিন থেকেই সিপিআই(এমএল)-এর প্রতিবাদে আন্দোলন চালিয়ে আসছে। এই কয়েক বছর বিভিন্ন রূপে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিডিও অফিসে ৪০০ লোকের ৪(ক) ফর্ম জমা দিয়ে আইন অনুযায়ী কাজের দাবিতে ডেপুটেশন অবস্থান বারবার চালিয়ে যাওয়া হয়। বিডিও সব দাবি মেনে নিয়ে ও তৃণমূলের চাপে পড়ে কাজ দিতে ব্যর্থ হয়। এমনকি বিকল্প হিসেবে কিছু গরিবদের রিলিফ দেওয়ার ব্যবস্থা পর্যন্ত করে ও আন্দোলনের জোয়ার প্রতিহত করার চেষ্টা হয়। কিন্তু আন্দোলন চলতে থাকে রাস্তা অবরোধ, পঞ্চায়েতের প্রধানকে ঘেরাও পঞ্চায়েত অফিসে বিক্ষোভে ভাঙ্গার এবং মাস্টার রোল চুরির অভিযোগে মিথ্যা মামলা পর্যন্ত দেওয়া হয়। এইসব আন্দোলন প্রক্রিয়ায় চলে আসে লোকসভা নির্বাচন। এই নির্বাচনে তৃণমূল এর শক্তি দুর্বল হয়। তাতে সমস্ত গ্রামবাসীদের এই আন্দোলন এ সামিল করানো সম্ভব হয়। তাই সমস্ত গ্রামীণ গরিবদের চাপে গ্রাম সংসদ ডাকতে প্রধান বাধ্য হয়। গ্রাম সংসদে জনসাধারণকে নিয়ে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পড়ে বাধ্য হয়ে তৃণমূলের সুপারভাইজার পাল্টে দিয়ে সিপিআই(এম-এল) সমর্থকদের মধ্যে থেকে সুপারভাইজার নিযুক্ত করতে বাধ্য হয় এবং কাজ শুরু করে। বর্তমানে গ্রামের সমস্ত মানুষকে কাজ দেওয়া হচ্ছে। এই আন্দোলন এর পাশাপাশি সমসাময়িক সময়ে বিভিন্ন ধরনের সফল আন্দোলনও গড়ে তোলা হয়। যেমন বন্যার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাল্টা তালিকা জমা দিয়ে ক্ষতিপূরণ আদায় করতে সফল হওয়া। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা ঘরের তালিকায় নাম তোলার দাবিতে অবস্থান বিক্ষোভ সংগঠিত করা হয়। তৃণমূলের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লাগাতার মোকাবিলা চালিয়ে যাওয়া। মিথ্যে মামলার বিরুদ্ধে গণ প্রতিরোধ সংগঠিত করে পুলিশ প্রশাসনকে নিরপেক্ষতার ভান করতে হলে ও বাধ্য রাখা সম্ভব হয়।
বলা যায় নির্দ্দিষ্ট জীবন্ত দাবিতে লাগাতার আঁকা বাঁকা পথে লাগাতার আন্দোলনে জনগণের নতুন নতুন দাবিতে জনগণকে সামিল করানোর চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। নেতৃত্বকে সব সময় সাহসী ও বিচক্ষণ ভুমিকা রাখতে হবে। সংগঠনের মধ্যে ঐক্য ও সক্রিয়তা বজায় রাখতে হবে। শত্রুর সম্পর্কে প্রতিনিয়ত মুল্যায়ন থাকতে হবে।