এসপি মুখার্জী কেবল সাম্প্রদায়িক ছিলেন এমন নয়, জাতপাত ও লিঙ্গবৈষম্য প্রশ্নেও সমস্যাজনক দৃষ্টিভঙ্গী ছিল তাঁর, এবং কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ব্রিটিশকে সমর্থন করতেও তাঁর বিবেকে বাধেনি। ভারতীয় জনতা পার্টির ওয়েবসাইটে যেসব ব্যক্তিত্বকে “গাইডিং লাইটস” বা আলোকবর্তিকা বলে উল্লেখ করা হয়েছে তাদের মধ্যে প্রথম নামটি হল শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী।
রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯৫১ সালে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী হিন্দু মহাসভা ছেড়ে ‘ভারতীয় জনসংঘ’ স্থাপন করেন।
জনসংঘ থেকেই ১৯৮০ সালে স্থাপিত হয় বর্তমান কালের ‘ভারতীয় জনতা পার্টি’। ফলত, লোকসভায় প্রথমবার সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পর বিজেপি তার প্রতিষ্ঠাতা ও তাঁর উত্তরাধিকারের ধারাকে প্রচারের আলোতে আনতে চাইবে তা স্বাভাবিক।
দিল্লীর নেহরু মেমরিয়াল মিউজিয়মে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর জীবনের ওপর আয়োজিত সাম্প্রতিক প্রদর্শনীটিতে জনসংঘ প্রতিষ্ঠাতাকে কেবলমাত্র জনপ্রিয় করার প্রচেষ্টাই ছিল না বরং প্রদর্শনীর জায়গা নির্বাচন থেকে একথা বোঝা যায় যে কংগ্রেসের আইকনদের সরিয়ে নিজেদের আইকন স্থাপন করাও অন্যতম উদ্দেশ্য।
নেহরু মেমরিয়াল মিউজিয়ামটি জওহরলাল নেহরুর সাবেক বাড়িতেই অবস্থিত এবং মূলত তাঁর জীবনের কাজকর্ম নথিভুক্ত করতেই মিউজিয়মটি স্থাপিত হয়।
এই দুই ধারার মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও খুব প্রকট করে তোলা হয়। প্রদর্শনির উদ্বোধন করতে গিয়ে অমিত শাহ কাশ্মীরে নেহরু ও মুখার্জীর ভুমিকার তুলনা করেন।
১৯৪৮ এর ভারত-পাক যুদ্ধে নেহরুর যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টাকে ‘ঐতিহাসিক ভুল’ বলে অবহিত করে অমিত শাহ দাবি করেন যে মুখার্জীর প্রচেষ্টাতেই শেষ পর্যন্ত কাশ্মীর ভারতভুক্ত হয়।
পার্টি প্রতিষ্ঠাতা সম্পর্কে ভালো ভালো কথা বলাটা বিজেপি প্রেসিডেন্ট হিসেবে অমিত শাহের কর্তব্য বটে, কিন্তু মুখার্জীর ভুমিকা সম্পর্কে সুদৃঢ় ইতিহাসনির্ভর মূল্যায়ন তেমন সন্তোষজনক মনে হবে না যেমনটা অমিত শাহ সকলকে বিশ্বাস করাতে চাইছেন।
সাম্প্রদায়িকতা, জাত-গোঁড়ামি ও ব্রিটিশের তাঁবেদারি করার মানসিকতার লোক এসপি মুখার্জী বাস্তবে আধুনিক ভারতের দিশার সাথে একেবারেই খাপ খায় না।
এই মানুষটি সম্পর্কেতিনটি অস্বস্তিকর তথ্য যা আধুনিক ভারতের পরিপন্থি :
১। মুখার্জী দ্বিজাতি-তত্ত্বে বিশ্বাস করতেন ও বাংলা ভাগের পক্ষে ওকালতি করেছিলেন।
এসপি মুখার্জী যে একজন হিন্দু সাম্প্রদায়িক নেতা ছিলেন তা নিয়ে তো সংশয় নাই। ১৯৪৭-পূর্ব সময়ে মুখার্জী হিন্দুমহাসভার একজন নেতা ছিলেন এবং মহাসভার সভাপতি পদেও উন্নীত হয়েছিলেন।
১৯৩২ সালে ব্রিটিশিরাজ আইনসভার আসন পুনর্বন্টনের ‘কমিউনাল অ্যাওয়ার্ড’ নামক নতুন প্ল্যান আনার পর বাংলার রাজনীতি নাটকীয়ভাবে বদলে যায়। তখন পর্যন্ত, মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশ হওয়া সত্বেও, বেঙ্গলের আইনসভায় মুসলমান আসনসংখ্যার তুলনায় হিন্দু আসনসংখ্যা অনেক বেশি ছিল। কমিউনাল অ্যাওয়ার্ড এই বৈষম্য পাল্টে দেয়। এই প্ল্যান ডিপ্রেসড ক্লাস (দলিত)- দেরও ‘সংখ্যালঘু’ হিসেবে গণ্য করে এবং তাঁদের জন্য আলাদা নির্বাচকমন্ডলী তৈরি করে।
উচ্চবর্ণ ভদ্রলোকদের অবস্থা আরও সঙীন ক’রে, সুদূর পুণেতে, মোহনদাস গান্ধী হিন্দু-দলিত মিলিত নির্বাচকমন্ডলী মেনে নেওয়ার বিনিময়ে ‘হিন্দু’ আসনগুলির একটি বড়ো অংশ দলিতদের জন্য বরাদ্দ করার চুক্তিতে আবদ্ধ হন বি আর আম্বেদকরের সাথে। এর ফলে ভদ্রলোকেদের পজিশন আরও দুর্বল হয়ে পড়ে।
এইভাবে ভদ্রলোকেদের ক্ষমতা হঠাৎ করে হ্রাস পেয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি হিন্দু সাম্প্রদায়িকতা পেকে ওঠার উর্বর ক্ষেত্র তৈরি করে। মুখার্জী এই পরিস্থিতির সুযোগ নেন। ১৯৩৯ সালে তিনি বিনায়ক সাভারকারের হিন্দুমহাসভাতে যোগ দেন। কংগ্রেসকে মুসলমান তোষণকারী বলে আক্রমণ করে সাম্প্রদায়িক প্রচার অভিযান শুরু করেন তিনি।
যদিও মহাসভা সাধারণ মানুষের সমর্থন পায়নি, কিন্তু বাংলার কংগ্রেসকে আরও দক্ষিণপন্থী দিকে ঠেলে দিতে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিল এবং জমিদার ও কোলকাতার মারোয়াড়ি শিল্পপতিদের ভালোরকম পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছিল।
বাংলা ভাগের পরিকল্পনাকে সবার আগে যারা সমর্থন দিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে শ্যামাপ্রসাদ অন্যতম। পরিকল্পনার সমর্থনে ভদ্রলোকেদের জনমত গড়ে তুলতে বিশেষ ভূমিকা ছিল তাঁর। বাংলা ভাগ ছিল এক আবেগময় বিষয়। অনতি অতীতে ১৯০৫ সালে বাংলার সব নেতাব্যক্তিরাই বাংলা ভাগের ব্রিটিশ চক্রান্তকে ব্যর্থ করতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেছিল। অথচ ১৯৪৬-’৪৭ সাল নাগাদ সাম্প্রদায়িক বিভাজন জোরালো হওয়া ও বাংলাতে হিন্দুদের সংখ্যালঘু হয়ে যাওয়ার আশঙ্কার পরিস্থিতিতে অনেক ভদ্রলোকই বাংলা ভাগ করার কথা ভাবতে শুরু করেছিলেন।
বিষয়টা একটু অস্বস্তিকর কারণ দেশভাগের পক্ষে সমর্থন দেওয়া বর্তমান ভারতে প্রায় গর্হিত কাজ হিসেবেই গণ্য হয়। নেহরু মেমরিয়াল মিউজিয়ামের প্রদর্শনিতে তাই বিষয়টিকে যুক্তিগ্রাহ্য করার কসরৎ করা হয়েছিল। দাবি করা হয় যে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী “বাংলার একটা অংশকে, বিশেষ করে ঐতিহাসিক ও স্ট্র্যাটেজিক গুরুত্বের নগর ক্যালকাটাকে, পাকিস্তানের অংশ হওয়ার” হাত থেকে বাঁচিয়েছেন ! — মজার কথা হল এই সাফাই আসলে অভিযোগের সত্যতাই প্রতিষ্ঠিত করে, কারণ এধরনের কোনও প্রস্তাব ব্রিটিশ প্ল্যানেই ছিল না !
বাস্তবে এসপি মুখার্জী ১৯৪৪ সাল থেকেই দেশভাগকে সমর্থন জানিয়ে এসেছেন। একবার তো কোলকাতার একটি সমাবেশে বাংলাকে দুটুকরো করার ওকালতি করায় ওনাকে চিৎকার করে থামিয়ে দিয়েছিল শ্রোতারা। ১৯৪৭ সালের ২৭মে উনি ভাইস-রয় লুই মাউন্টব্যাটেনকে গোপনে চিঠি লিখে দাবি করেছিলেন যে এমনকি ভারত ভাগ না হয়ে একতাবদ্ধ থাকলেও বাংলাকে ভাগ করতে হবে।
বাংলার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হুসেইন সোরাওয়র্দি এবং বাংলার কংগ্রেসের দুই প্রধান নেতা শরৎ চন্দ্র বোস (নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর দাদা) ও কিরণশংকর রায় যখন স্বাধীন ঐক্যবদ্ধ বাংলার পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য প্রচেষ্টা চালান তখন শ্যামাপ্রসাদ তার প্রবল বিরোধিতা করেন। উনি আসলে দ্বিজাতি-তত্ত্ব মেনে সাম্প্রদায়িক ভাগাভাগিই চাইছিলেন।
মুখার্জী বাবু অবশ্য অচিরেই, ১৯৫১ সালের মধ্যেই, বুঝতে পারেন যে বাংলা ভাগ কত বড়ো বিপর্যয় ডেকে এনেছে। তখন তিনি সিদ্ধান্ত নাকচ করার জন্য বলাবলি শুরু করেন। কিন্তু তখন তা আর কীভাবে সম্ভব, তখন ‘পূর্ব বাংলা’ পাকিস্তানের অঙ্গ।
এরকম ধান্দামূলক পাল্টিও অবশ্য ১৯৫২র নির্বাচনে তাঁকে তেমন সুবিধা করে দিতে পারেনি, পশ্চিমবঙ্গের স্টেট এসেম্বলিতে জনসংঘ মাত্র ৪% আসনে জয় হাসিল করতে পারে। পরবর্তীতে, পার্টিশানের মূল ভুক্তভোগি পূর্ব বঙ্গের হিন্দু উদ্বাস্তুরা ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি(মার্ক্সবাদী)-র দৃঢ় ভিত্তি হয়ে ওঠে এবং রাজ্যে হিন্দুত্ব রাজনীতি বিলুপ্তপ্রায় হয় পড়ে।
২। এসপি মুখার্জী ছিলেন একজন ধর্মীয় মৌলবাদী
শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন হওয়া সত্বেও এবং প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ স্যর আশুতোষ মুখার্জীর পুত্র হওয়া সত্বেও এসপি মুখার্জী ছিলেন অতি দক্ষিণপন্থী গোঁড়া ও ধর্মীয় রক্ষণশীল। ১৯৪৩-’৪৪ এর মন্বন্তরে বাংলার মর্মান্তিক দুর্দশার দিনগুলিতে শ্যামাপ্রসাদ পরিচালিত ‘হিন্দুমহাসভা’-র অন্যতম প্রধান ইস্যু ছিল : ‘সরকারী লঙ্গরখানাগুলিতে মুসলমান ও নিম্নবর্ণের মানুষদের নিয়োগ করার ফলে হিন্দুদের পক্ষে জাত যাওয়ার ভয়ে খাওয়া সম্ভব হচ্ছেনা’; ভাবুন, তিরিশ লক্ষ বাঙালি না খেতে পেয়ে মারা গেছে, সেরকম এক বিপর্যয়ের দিনে এ কেমন চিন্তাভাবনা !
অধিকন্তু, ত্রাণ কার্যের সময় মহাসভার বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক পক্ষপাতিত্ব ও দূর্নীতির অভিযোগ আনে খোদ বেঙ্গল গভর্মেন্ট। ‘দ্য হিন্দু’ পত্রিকার সুখ্যাত সাংবাদিক টিজি নারায়ন এই বিপর্যয়ের সরেজমিন খবর করেছিলেন। তিনি এবং বিখ্যাত শিল্পী চিত্তপ্রসাদও মহাসভার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেছেন।
কোনও কোনও সময়ে তো এসপি মুখার্জীর সাম্প্রদায়িক পক্ষপাতিত্ব গোঁড়া ধর্মান্ধতায় আচ্ছন্ন থাকত। উদাহরণ হিসেবে ইতিহাসবিদ জয়া চ্যাটার্জী তাঁর “বেঙ্গল ডিভাইডেড: হিন্দু কম্যুনালিজম অ্যান্ড পার্টিশন” গ্রন্থে এসপি মুখার্জীর একটি লেখা উদ্ধৃত করে দেখিয়েছেন যে একজন উচ্চ বর্ণহিন্দুহিসেবে মুখার্জী বাবু বিশেষ মহম্মণ্যতা বোধ করতেন “এই বিশ্বাসের বশবর্তী হয়ে যে বাঙলার মুসলমানেরা আসলে হিন্দু সমাজের গাদ বা তলানির অংশ থেকে ‘একদল ধর্মান্তরিত’ মানুষ”।
স্বাধীনতা লাভের পর হিন্দু আইনের আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে নেহরু ও আম্বেদকরের যাবতীয় উদ্যোগকে বাঞ্চাল করতে এসপি মুখার্জী সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। হিন্দু আইনের মধ্যে বহুবিবাহ রোধ ও বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত নারীপক্ষের ধারাগুলিকে আক্রমণ করেন তিনি। তাঁর মতে ওসব করলে “হিন্দুবিবাহ প্রথার মৌলিক ও পবিত্র চরিত্রই বিলুপ্ত হবে” এবং শেষ পর্যন্ত “তোমার ধর্মের (হিন্দু) উৎসমুখকেই খতম করে দেবে”।
জাত, ধর্ম ও লিঙ্গ প্রশ্নে এমন গোঁড়া ব্যক্তি আধুনিক ভারতের আদর্শচরিত্র হতে পারে বলে তো মনে হয় না।
৩। স্বাধীনতা সংগ্রামের উত্তঙ্গ দিনগুলিতেও তিনি ব্রিটিশদের সমর্থন দিতে কসুর করেননি।
১৯৪২-এর ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় এসপি মুখার্জী বেঙ্গলের অর্থমন্ত্রী ছিলেন। রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ফজলুল হকের পর তিনিই ছিলেন মন্ত্রীসভার দ্বিতীয় বরিষ্ঠ মন্ত্রী।
মুখার্জীর দল ‘হিন্দু মহাসভা’ ঔপনিবেশিক সরকারকে সহযোগিতা করার সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের দৃষ্টিতে প্রকৃত লড়াইটা নাকি দেশের মুসলমানদের বিরুদ্ধে ! তাঁর দল এমনকি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশ বাহিনীতে লোক রিক্রুটও করেছিল, বিনায়ক সাভারকার হিন্দুদের কাছে আবেদন করেছিলেন বাহিনীতে বিপুল সংখ্যায় নাম লেখাতে।
বাংলায় এই পার্টিলাইন জোরালোভাবে লাগু করতে উদ্যোগ নেন এসপি মুখার্জী। সেই পথেই ব্রিটিশদের সাথে সহযোগিতা করেন এবং কংগ্রেস যে চুড়ান্ত এক গণ আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল — ১৯৪২-এর ভারত ছাড়ো আন্দোলন — তার বিরোধিতা করতে ঝাঁপিয়ে পড়েন এসপি মুখার্জী।
১৯৪২-এর ২৬ জুলাই বেঙ্গল গভর্নর জন হার্বার্টকে একটি চিঠি লিখে মুখার্জী বাবু কংগ্রেসকে মোকাবিলা করার একটি প্ল্যান ছকে দেন। “যুদ্ধের এই সময়ে কেউ যদি জনতার আবেগ উস্কাতে চায় আর দেশের ভেতরে অস্থিরতা ও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয় তাহলে সরকার চালোনোর স্বার্থেতা দমন করা সরকারের কর্তব্য”, প্রতিশ্রুতি দিয়ে লিখছেন শ্যামাপ্রসাদ, “আপনার একজন মন্ত্রী হিসেবে আমি আপনাকে সর্বান্তকরণ সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত আছি এবং এই সংকটের সময়ে আমি আমার প্রদেশ ও দেশের জন্য কাজ করতে চাই।”
এ এক নিন্দার্হ চিঠি, বিশেষত বাংলাতে, যেখানে সে সময় ব্রিটিশ-বিরোধী সংগ্রামের তীব্র আবেগময় ঝড় বইছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ভারতকে ঢুকিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে আটটি প্রাদেশিক মন্ত্রিসভা পদত্যাগ করেছিল। এই পদত্যাগকে ১৯৩৯ সালে মহম্মদ আলি জিন্নাহ ‘নিষ্কৃতি পাওয়ার দিন’ হিসেবে সেলিব্রেট করার কথা ঘোষণা করেন। সেই সময়ে বাংলায় উপনিবেশ-বিরোধী আবেগ এতটাই প্রবল ছিল যে মুসলীম লীগ ওয়ার্কিং কমিটির অন্যতম সদস্য আব্দুর রহমান সিদ্দিকি জিন্নাহর এই ঘোষণার প্রতিবাদে ওয়ার্কিং কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন এবং ঘোষণাটিকে “জাতীয় গরিমার অবমাননা” ও “ব্রিটিশ উপনিবেশবাদের স্তাবকতা” হিসেবে অবিহিত করেন।
এহেন পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ শাসকদের অনুগ্রহভাজন হতে লালায়িত শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী আধুনিক ভারতে অনুসরণযোগ্য নেতা হওয়া তো দূরের কথা বরং এক অস্বস্তিকর দায় বিশেষ।
(স্ক্রল. ইন পোর্টালে প্রকাশিত শোয়েব ড্যানিয়েলের প্রবন্ধের ভাষান্তর)