এ রাজ্যের বুকে বিজেপি গণতন্ত্রর মুখোশ পরে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে। আসলে ওরাই সারা দেশে গণতন্ত্রকে হত্যা করছে। তৃণমূলের স্বৈরাচার, দুর্নীতি ও লুঠের বিরুদ্ধে রাজ্যের নীচুতলায় যে তীব্র গণক্ষোভ গড়ে উঠেছে তাকে কাজে লাগিয়ে ওরা ওদের হিন্দুত্ববাদী-উগ্রজাতীয়তাবাদী এজেন্ডাগুলিকে মানুষের কাছে গ্রহণীয় করে তুলতে চাইছে। দেশের সংবিধান, ধর্মনিরপেক্ষতা, সম্প্রীতি, মানুষের ঐক্য—সবকিছুকে ধ্বংস করে দিয়ে বিজেপি আসলে দেশের বুকে কর্পোরেট শোষণ শাসনকে শক্তিশালী করতে চায়। এই বিজেপিকে কোনো মতেই তৃণমূলী অপশাসনের বিকল্প হিসাবে বেছে নেবেন না, বামপন্থীরাই একমাত্র বিকল্প হতে পারে। এই প্রচারকে তুলে ধরে বাঁকুড়া জেলার ওন্দা ব্লকের অন্তর্গত নিকুঞ্জপুর, মাজডিহা, কোষ্ঠিয়া প্রভৃতি অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে সিপিআই(এমএল)-এর নিজস্ব উদ্যোগে প্রচারসভা সংগঠিত হল গত ৭ মে। বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ঐ এলাকায় বামফ্রন্ট মনোনীত সিপিএম প্রার্থী সুনীল মালিকের সমর্থনে সভাগুলিতে বক্তব্য রাখেন পার্টির রাজ্য কমিটি সদস্য জয়তু দেশমুখ, বাঁকুড়া জেলা নেতা আদিত্য ধবল, বৈদ্যনাথ চীনা প্রমূখ। সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশব্যাপী কৃষক, শ্রমিক, মেহনতী মানুষের জীবন-জীবিকার জ্বলন্ত প্রশ্নে একমাত্র বামপন্থীরাই ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তুলেছে। এর সাথে যোগ দিয়েছে সমাজবাদীরা, দলিত ও বিভিন্ন গণতান্ত্রিক-প্রগতিশীল শক্তিসমূহ। সাম্প্রদায়িক ফ্যাসিস্টদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা আজ বামপন্থীদের কাছে একটা চ্যালেঞ্জ। কারণ, কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি সত্বেও একমাত্র বামপন্থার আদর্শ ও রাজনীতি এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু বর্তমানে বামপন্থী নেতা ও কর্মীদের একটা অংশের মধ্যে ভিন্ন সুর শোনা যাচ্ছে। বলা হচ্ছে বামপন্থীরা নিজের শক্তির জোরে এই মুহূর্তে জয়লাভ করতে পারবে না। তাই আগে তৃণমূলকে পরাজিত করতে হবে, কৌশলগত ভাবে বিজেপিকে জেতাতে হবে, কেবল তারপরই বামদের ফিরে আসার রাস্তা খুলে যাবে। বলা হচ্ছে” আগে রাম পরে বাম”। এই ধরনের ভাবনাকে আত্মঘাতী বলে নেতৃবৃন্দ অভিহিত করেন, বামপন্থী বিরোধীপক্ষের ভূমিকাই আগামীদিনে বামপন্থাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে এই লক্ষ্যে বামফ্রন্ট প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান নেতৃবৃন্দ তুলে ধরেন।