দেশজুড়ে ধর্মের নামে উন্মাদনা,ঘৃণার বাতাবরন ছড়িয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি-র বার্তা দিতে গত ৫ ডিসেম্বর আইসা যাদবপুর জোনাল কমিটি ও আশু মজুমদার স্মৃতি লাইব্রেরীর পক্ষ থেকে 'রুখে দাও বাবরী ভাঙা ত্রিশূলধারী রথের চাকা' শীর্ষক এক অন্যধারার সাংস্কৃতিক জমায়েত অনুষ্ঠিত হল যাদবপুর কফি হাউসের সামনে। একই মঞ্চে প্রতিবাদের ও সম্প্রীতি-র গান গাইলেন বিখ্যাত শিল্পী মৌসুমি ভৌমিক ও এ প্রজন্মের শিল্পী সুমেলি-শাক্য। 'তোমরা গাও লালনের গান,গাও মানুষের গান'-সহ উপস্থিত দর্শকদের মাতিয়ে দিলেন শিল্পী অভিজিৎ বসু। আবৃত্তি পরিবেশন করেন শিল্পী দীপ্তেন ব্যানার্জী ও নবারুন ভট্টাচার্যের সৈনিক কবি বিমল দেব। 'মহেশ' ছোটগল্পের নাট্য রুপ 'গফুর-জোলার গল্প'-পরিবেশন করলো বাদল সরকার নাট্য চর্চা কেন্দ্রের সহযোগিতায় সংযোগ (যাদবপুর) দল। আরও একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি-র নাটক 'আদাব' পরিবেশন করে অশনি নাট্যম (গড়িয়া)। এই অনুষ্ঠানের জন্য কবি শঙ্খ ঘোষের কাছে যাওয়ায় তিনি আসার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও শেষ মুহুর্তে শরীর খারাপ হওয়ায় তিনি আসতে না পেরে একটি সম্প্রীতি-র পক্ষে বার্তা পাঠান অনুষ্ঠানের উদ্দশ্যে। সেই বার্তায় তিনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার্থে আরও বেশি করে পাড়ায় পাড়ায় মানুষের সাথে সুস্থ সম্পর্কবোধ তৈরি-র কথা বলেন। বহু কর্পোরেট সংবাদ সংস্থা ও ব্যক্তিরা এই বার্তা প্রচার করলেও, এই বার্তাটি আইসা-র এই সাংস্কৃতিক জমায়েতের উদ্দেশ্যেই লেখা। অনুষ্ঠানে আসতে না পেরে সাউথ সিটি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সলীল বাবু তার বার্তায় এই ধরনের উদ্দ্যোগের পাশে থাকার কথা বলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকার কর্মী বিনায়ক সেন, তুষার চক্রবর্তী, অম্লান ভট্টাচার্য সহ বহু মানুষ। ছিলেন সি পি আই এম এল এর রাজ্য সম্পাদক পার্থ ঘোষ। বিজেপি-আরএসএস-এর ঘৃণার বাতাবরণ সমাজে ছড়িয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে এই অন্যধারার সাংস্কৃতিক জমায়েত এলাকায় যথেষ্ট উৎসাহের সঞ্চার করে। বহু সাধারণ ও বাম-গণতান্ত্রিক মানুষ দীর্ঘক্ষণ ধরে উৎসাহ নিয়ে গান-কবিতা-নাটক-কথা শোনেন। আগ্রাসী সাম্প্রদায়িক সংস্কৃতি প্রচারের বিরুদ্ধে এই অন্য ধারার সাংস্কৃতিক জমায়েত ব্যাপক অংশের মানুষের কাছে পৌঁছতে সক্ষম হয়।