নাগরিকত্ব সংশোধন আইন জারি হওয়ার পর থেকে নদীয়া জেলার মতুয়া সমাজের মধ্যে আনন্দ উৎসবের খবর পাওয়া যাচ্ছে। কোথাও আবির খেলা হচ্ছে, কোথাও বা লাড্ডু বিলি হচ্ছে। কিন্তু জেলার সীমান্তবর্তী তেহট্টের বেতাই এলাকা কিংবা ধুবুলিয়ার উদ্বাস্তু অধ্যূষিত এলাকায় মানুষের মধ্য থেকে প্রাথমিক যে খবর পাওয়া যাচ্ছে তাতে দেখা যাচ্ছে তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের মারপ্যাঁচ বা সাতকাহন তাঁদের কাছে আদৌ স্পষ্ট নয়। সর্বোপরি তাঁদেরকে অনুপ্রবেশকারী হিসাবে লিখিত কাগজ দিতে হবে শুনে তারা খুবই আশঙ্কিত! আপনারা কি বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় কারণে অত্যাচারিত হয়ে এদেশে এসেছেন? এর উত্তরে সকলেই বলছেন – না! বেশিরভাগই বলছেন, রুটি রুজির তাগিদে একটু উন্নত জীবনযাত্রার জন্য আমরা এবার বাংলায় এসেছি। আমাদের বহু আত্মীয়-স্বজন এখনো বাংলাদেশে রয়ে গেছে। তাহলে নাগরিকত্বের জন্য আপনাদের হলফনামায় লিখতে হবে যে আপনারা ধর্মীয় কারণে বাড়িঘর ছেড়ে এসেছেন? এ প্রশ্নের উত্তরে তারা সকলেই নীরবতা পালন করছেন। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে বিজেপির লোকজনেরাই উৎসবের নামে মতুয়াদের ভুল বুঝিয়ে হইচই করে চলেছে। যে ঘটনা ঘটেনি সেটাকেও লিখে দেওয়ার জন্য মানুষকে জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এইভাবে ধর্মীয় বিদ্বেষের বিষাক্ত মানসিকতা সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে অনুপ্রবেশ করিয়ে চলেছে ওরা। কিন্তু শুভবুদ্ধিসম্পন্ন সাধারণ মানুষেরা এই চক্রান্ত বুঝতে পারছেন। এনআরসি চালু করার সময়কালের অভিজ্ঞতা সকলের রয়েছে। যে সরকার কাজ দিতে পারছে না, খাদ্য দিতে পারছে না, চাষির ফসলের দাম নেই। তারা এখন নাগরিকত্বের নামে মানুষকে ধাপ্পা দিচ্ছে, সংবিধানের মৌলিক চরিত্রকে লঙ্ঘন করছে। এই বার্তা তুলে ধরে গত ১২ মার্চ কৃষ্ণনগর শহরে অনুষ্ঠিত হল এক প্রচার কর্মসূচি। শহরের পোস্ট অফিস মোড় থেকে শুরু করে এক দৃপ্ত মিছিল সদর মোড় আসে। দুই জায়গাতে সভা করা হয়। বক্তব্য রাখেন জীবন কবিরাজ, বিজয় সাহা,জয়তু দেশমুখ প্রমূখ।