লোকসভা নির্বাচন দুয়ারে এসে দাঁড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে প্রচার আন্দোলনকে জোরদার করতে পার্টির উত্তর ২৪ পরগণা জেলা কমিটির তরফে বিভিন্ন এলাকায় কর্মীসভাগুলি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত রবিবার, ১০ মার্চ ২০২৪ এমন একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হল বেলঘরিয়াতে। বেলঘরিয়া কামারহাটি লোকাল কমিটি আয়োজিত সভাটিতে উপস্থিত পার্টিকর্মীরা বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে খোলামেলা মত বিনিময় করেন। সভাটি পরিচালনা করেন বেলঘরিয়া আঞ্চলিক কমিটির সম্পাদক অশোক সাহা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য কমিটির স্ট্যান্ডিং বডির সদস্য নবেন্দু দাশগুপ্ত এবং জেলা নেতৃবৃন্দ।
লোকসভা নির্বাচনে পার্টি বিজেপিকে পরাস্ত করার জন্য সর্বাত্মক প্রয়াস গ্রহণের যে আহ্বান রেখেছে সেই বিষয়টি বিশেষভাবে চর্চায় আসে। এরই পাশাপাশি উঠে আসে বিজেপিকে পরাস্ত করার জন্য নির্দিষ্ট ভূমিকা গ্রহণের বিষয়টি। উপস্থিত পার্টিকর্মীদের অনেকেই জানতে চান বিজেপিকে পরাস্ত করার জন্য এ রাজ্যে জোটের বিষয়টি। অনেক রাজ্যে নানা বাধা বিঘ্ন অতিক্রম করে ইন্ডিয়া জোট শেষপর্যন্ত একটা সক্রিয় চেহারা নিলেও পশ্চিমবঙ্গে তা হয়নি। যেদিন পার্টির এই কর্মীসভা হয়েছে, সেইদিনই ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডের জনসভা থেকে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল এই রাজ্যের ৪২টি আসনের সবকটিতেই নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করে দেয়। ফলে কিছুক্ষণ আগের এই সংবাদটিও পার্টি কর্মীদের চর্চায় উঠে আসে। এই রাজ্যে তৃণমূল ও জাতীয় কংগ্রেসের মধ্যে আসন সমঝোতা তথা ইন্ডিয়া জোট যে ফলপ্রসু হয়ে হচ্ছে না, তা স্পষ্ট হয়ে যাওয়ায় বিজেপিকে হারাতে ঠিক কোথায় কোনে দলকে নির্দিষ্টভাবে ভোট দিতে বলা হবে, বা আদৌ এরকম কিছু না বলে সাধারণভাবে বিজেপি বিরোধী শক্তিকে ভোট দেবার কথা বলা হবে কীনা – সে সব উপস্থিত পার্টি কর্মীরা জানতে চান। উপস্থিত রাজ্য ও জেলা নেতৃত্ব জানান বিষয়টি পার্টির চর্চার মধ্যে আছে। আগামী দু-একটি বৈঠকে আলাপ আলোচনা করেই বিষয়টি নিয়ে পার্টি নেতৃত্ব তার সুনির্দিষ্ট অবস্থান জানিয়ে দেবে বলে উপস্থিত পার্টিকর্মীদের আশ্বস্ত করা হয়। এই বিষয়ে পার্টি কর্মীরা যে সমস্ত পর্যবেক্ষণ ও অভিমত পেশ করেছেন, তাও রাজ্য পার্টি নেতৃত্বকে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান রাজ্য কমিটির উপস্থিত নেতৃত্ব।
আলাপ আলোচনায় উঠে আসে বিজেপি বিরোধী প্রচারকে জোরদার করার পদ্ধতি প্রকরণ সংক্রান্ত বিষয়গুলিও। লোকসভা নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যাবার পর সভা সমাবেশ করার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের বিধিনিয়ম মেনে চলার বিষয়টি বলবৎ হয়ে যাবে। যে সব আসনে পার্টি নির্বাচনে প্রার্থী দিচ্ছে না, সে সব আসনে প্রচার করার ক্ষেত্রে সম্ভাব্য পদ্ধতিগুলি খতিয়ে দেখতে হবে। বড় আকারের সভা সমাবেশের বাইরে ঘরোয়া আলাপে, ট্রামে, বাসে, ট্রেনে, বাজারে, পাড়ার চায়ের দোকানের আড্ডায় – যেভাবে যেভাবে সম্ভব সেখানেই বিজেপি কতটা ভয়ংকর শক্তি তা নানাভাবে মানুষের কাছে নিয়ে যাবার বিষয়টির ওপর জোর দেওয়া হয়।
মার্চ মাসে থাকা দুটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক কর্মসূচিকে সফল করে তোলার দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। একটি হল ১৬ মার্চ মৌলালি যুব কেন্দ্রের ‘শ্রমিক বাঁচাও বিজেপি হঠাও’ কনভেনশন। অন্যটি হল ৩১ মার্চ বারাসাতে পার্টির উত্তর ২৪ পরগণা জেলা কমিটি আয়োজিত রাজনৈতিক প্রচারসভা। এলাকার সমস্ত কমরেড যেন এই কর্মসূচি দুটিতে উপস্থিত থাকেন, সেই বিষয়টিতে জোর দেওয়া হয়।
সৌভিক ঘোষাল