বিবৃতি
ত্রিপুরায় রাজ্য সরকারি কর্মী ও পেনশনভোগীদের সাথে অন্যায় আচরণ
pensioners in Tripura

সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের ত্রিপুরা রাজ্য সম্পাদক পার্থ কর্মকার এক প্রেস বিবৃতিতে বলেন, দীর্ঘদিন ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত রেখে সরকার ৫৮ মাস পরে নির্বাচনের মাত্র দু’মাস আগে সরকারি শিক্ষক, কর্মচারী, পেনশনভোগীদের জন্য ১২ শতাংশ ডিএ ও একাংশ অনিয়মিত কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি করেছে। যার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ভোট কেনা ও ভোটের দাদন বিলি ছাড়া আর কিছুই নয়। রাজ্যের ইতিহাসে অন্যান্য সরকারের সময়ে কেউ এমন অসম্মানজনক আচরণ করেনি। রাজ্যের সরকারি শিক্ষক, কর্মচারী ও পেনশনভোগীরা আর কখনো এমন অসম্মানজনক ব্যবহারের শিকার হয়নি। তাছাড়া এরপরেও ১৮ শতাংশ ডিএ বকেয়া থাকবে। যেখানে অসহনীয় ও আকাশছোঁয়া ভোগ্যপণ্য মূল্যবৃদ্ধির বাজারে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী ও রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের এমন বিরাট বৈষম্য আর দেখা যায়নি। এ হিসাব রাজ্যের সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীরা ভালভাবেই জানেন ও বোঝেন। কিন্তু সমগ্র শিক্ষা, মাদ্রাসা শিক্ষক, আশা কর্মী, অঙ্গনোয়াড়ি কর্মী, রেগা কর্মী ও রেগা শ্রমিকদের সম হারে কোনও বেতন ও মজুরি বৃদ্ধি করা হয়নি। অসহনীয় মূল্যবৃদ্ধির বাজারে এভাবে প্রকল্প শ্রমিকদের, রেগা শ্রমিক ও অন্যান্য শ্রমিকদের বঞ্চিত করা হয়েছে। যা এক বিরাট বৈষম্য তৈরি করেছে ও কোনভাবেই তা মেনে নেওয়া যায় না।

তাছাড়া গত ৫৮ মাসে রাজ্যে ৩৮ হাজার শূন্যপদ পূরণ করা হয়নি। কোনও স্থায়ী নিয়োগ নেই। সারা দেশে সবচেয়ে বেশি বেকারত্ব ত্রিপুরায়। জাতীয় গড় যেখানে ৮.৭ শতাংশ। ত্রিপুরায় বেকারত্বের হার সেখানে ১৪.৫ শতাংশ। গত ৫৮ মাসে ২০,১৩৮ জন সরকারি কর্মচারীর সংখ্যা কমেছে। অর্থাৎ এই ২০,১৩৮টি পদ অবলুপ্ত করা হয়েছে। উল্টো এই সরকার আউটসোর্সিং করে ঠিকা প্রথায় সরকারি পদে নিয়োগ করছে। তাঁরা অধিকাংশ নিয়মিত বেতন পান না। আসলে এরা সরকারি পদে নিয়োগ ব্যবস্থাটি ধ্বংস করে দিতে চায়। বেসরকারি কোম্পানি রাজ কায়েম করতে চায়। এখন ভোটের মুখে প্রতিষ্ঠান বিরোধী বিক্ষোভ ধামাচাপা দিতে দাদন হিসেবে ডিএ ও বেতন বৃদ্ধির পদক্ষেপ। তাই আমরা সিপিআই(এমএল), ত্রিপুরা রাজ্য কমিটি রাজ্য সরকারের এই চরম বৈষম্যমূলক নীতির বিরোধিতা করার পাশাপাশি সমহারে সবার নিয়মিত ও স্থায়ীভাবে বেতন ও মজুরি বৃদ্ধির দাবি জানায়। সব অংশের জনগণকে এই সরকারের জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে স্থায়ী নিয়োগ, সমহারে বেতন ও মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানায়।

খণ্ড-30
সংখ্যা-1