প্রতিবেদন
দুরাত্মার ছলের অভাব হয় না

৩০ নভেম্বর এক প্রেস বিবৃতিতে সিপিআই(এমএল) রাজ্য সম্পাদক পার্থ ঘোষ বলেন, রাজ্য রাজনীতিতে ভারতীয় জনতা পার্টির নয়া অবতার শ্রীযুক্ত চন্দ্র বসু মহাশয় অবশেষে স্বীকার করলেন, সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা উপনির্বাচনে বিজেপির ধরাশায়ী হবার অন্যতম কারণ এনআরসি। জনগণ এনআরসি “ভুলভাবে বুঝেছে”। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি নাকি জানিয়েছেন, ‘‘এনআরসির আগে ‘ক্যাব’ (নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল”) পাস করানো হবে, ‘‘তারপর এনআরসি”। চন্দ্র বসু মহাশয় জীবনের বেশিরভাগ সময় বিদেশে কাটিয়েছেন, বাংলার মানুষের জ্ঞানবুদ্ধি সম্পর্কে সম্যক ধারণা নেই। তাই তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, “ক্যাব হলে (?) হিন্দুদের ভয়ের কোনো কারণ নেই”। ওয়াকিবহাল মানুষ মাত্রই জানেন, ধর্মের ভিত্তিতে ভারতের নাগরিকত্ব নির্ধারণ সংবিধান বিরোধী, সভ্য রীতিনীতি বিরোধী এবং চরম অগণতান্ত্রিক। ক্যাব চরম সংখ্যালঘু, দলিত, আদিবাসী বিরোধী। বস্তুত দরিদ্র শ্রমজীবী জনগণ বিরোধী। হিন্দুদের ধোঁকা দেওয়ার ছলচাতুরি মাত্র। এনআরসি-র ধোঁকাবাজি ধরা পড়ে যাওয়ার পর এখন ক্যাব-এর ধোঁকাবাজি শুরু হয়েছে। ক্যাব-ই হোক, আর এনআরসি-ই হোক বিজেপির এই বিভাজনের রাজনীতি, সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে বাংলার মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং প্রত্যাখ্যান করবে।

তিনি আরও বলেন, রাজ্যের তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রের তিনটিতেই পরাজিত সাম্প্রদায়িক ও বিভাজনের রাজনীতির প্রতিনিধি ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থীরা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য খড়গপুর এবং কালিয়াগঞ্জ। এই তিনটি কেন্দ্রের ভোটদাতারা বিজেপির সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতিকে যেমন প্রত্যাখ্যান করেছেন, তেমনই অর্থনৈতিক নীতিগুলো, যার চরম প্রকাশ আকাশছোঁয়া মূল্য বৃদ্ধি, ভয়াবহ বেকারি, ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দা, তাকেও মেনে নিতে পারেননি। এই নির্বাচনে বিজেপির কাছে কোনো সার্জিক্যাল স্ট্রাইকও ছিল না, কোনো পুলওয়ামাও ছিল না। ছিল এনআরসি-র বিপদ। মানুষ এনআরসি-র বিপদকে কোনো মতেই মেনে নিতে রাজি নয়। কালিয়াগঞ্জ ও করিমপুরের নির্বাচনে এনআরসি প্রত্যাখ্যান অন্যতম প্রধান বিষয় হিসাবে এসেছে। এনআরসি বিরোধী লড়াইকে আরও জোরদার করার জন্য বামপন্থীদেরই এগোতে হবে।

খণ্ড-26
সংখ্যা-39