বিবৃতি
একমাস হয়ে গেল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘ পরিবারের গুণ্ডামি, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের নিন্দা পর্যন্ত করেননি রাজ্যপাল

সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের রাজ্য সম্পাদক পার্থ ঘোষ এক প্রেস বিবৃতিতে বলেন, ১৯ সেপ্টেম্বর, সন্ধ্যা ৭টা থেকে সোয়া ৭টা, পুলিশের ঘেরাটোপে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করলেন রাজ্যপাল জগদীশ ধনখড়। “ঘোষিত উদ্দেশ্য” মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে “উদ্ধার”! রাজ্যপালের পেছন পেছন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঢুকলো একদল পরিচিত দুষ্কৃতি। লোকে তাদের আরএসএস-এর মতদপুষ্ট গুণ্ডা বলেই চেনে। রাজ্যপাল যখন “উদ্ধার কাজে” ব্যস্ত, তখন সংঘী গুণ্ডারা পুলিশের চোখের সামনে শুরু করে দিয়েছে তাণ্ডব। বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ থেকে শুরু করে ছাত্র সংসদের অফিস ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ। চে গেভারার ফটো ভেঙে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া। বাধা দিতে গিয়ে ছাত্রছাত্রীরা আক্রান্ত, লাঞ্ছিত। রাজ্যপালের কাছে পুলিশ মারফত সব খবরই রিলে হচ্ছিল। রাজ্যপাল তখন ছাত্রছাত্রীদের “সবক” শেখাতে ব্যস্ত।

তারপর কেটে গেল এক মাস। “বিলম্বিত বোধদয়” বলে একটা কথা অভিধানে আছে। আমরা জানি না, রাজ্যপাল ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় তাঁর উপস্থিতিতে (? পরোক্ষ মদতে) বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে সংঘী গুণ্ডারা যে তাণ্ডব করল, তার নিন্দা করবেন কিনা। আমরা অপেক্ষায় থাকলাম।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কাকে সান্মানিক ডি লিট দেবে, কাকে সান্মানিক ডিএসসি দেবে, তা ঠিক করা বা নির্ধারণ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের “কোর্ট” বৈঠকে রাজ্যপাল জগদীশ ধনখড় কেন, তার যৌক্তিকতাই বা কোথায় তা শুধু বোধগম্য নয়, তাই নয়, যথেষ্ট প্রশ্নসূচক।

ঔপনিবেশিক যুগে ব্রিটিশ লাটসাহেবরা বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চূড়ায় বসে থাকতেন, উপনিবেশ বিরোধী জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি নজরে রাখার জন্য। ৭০ বছরের স্বাধীন দেশেও কেন এবং কি যুক্তিতে রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য থাকবেন, বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চূড়ামণি থাকবেন তা নগ্ন রাজনীতি ছাড়া আর কিছু হতে পারে না।

এ বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র বিক্ষোভের ঘটনায় রাজ্যপাল যে বিতর্কিত ভূমিকা রেখেছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে “সান্মানিক” ডিলিট, ডিএসসি দেওয়ার জন্য “কোর্ট” বৈঠকে রাজ্যপালের অংশগ্রহণ যথেষ্ট প্রশ্নসূচক।

কোর্ট বৈঠকে রাজ্যপাল জগদীশ ধনখড়ের অংশগ্রহণের আমরা তীব্র বিরোধিতা করছি।

খণ্ড-26
সংখ্যা-33