উত্তর ২৪ পরগণার কাঁকিনাড়া জুট মিলে গত ১ ডিসেম্বর এআইসিসিটিইউ অন্তর্ভুক্ত বেঙ্গল চটকল মজদুর ফোরাম’এর উদ্যোগে পিএফ অন্তর্ভুক্তির দাবিতে ‘এ শিফট’এর মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট সকাল ৬টা থেকে একঘণ্টা কাজ বন্ধ করে দেয়। মিল কর্তৃপক্ষ জানান তারা এই বিষয়ে মালিককে অবহিত করবেন। এদিকে লেবার অফিসার টালবাহানা করতে থাকেন এবং জানান মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্টের এ শিফটে পিএফ নম্বর দেওয়ার দরকার নেই। এরফলে শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থকে। বাধ্য হয়ে মিল মালিক বিসিএমএফ নেতৃত্বের সাথে আলোচনায় বসেন। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যেখানে যেখানে প্রয়োজন নম্বর দেওয়া হবে। এই আন্দোলন বিসিএমএফ’এর নেতৃত্বে আংশিক জয় হয়েছে। আপাতত এ শিফট ডিপার্টমেন্টের শ্রমিকদের মধ্যে ১৫ জনকে নম্বর দেওয়া হবে। ইতিপূর্বেই পুজোর আগে মিলের সমস্ত ইউনিয়নের উদ্যোগে, জিরো নম্বরের শ্রমিকদের পিএফ নম্বর করার জন্য ২০০ জন শ্রমিক লেবার অফিসে ডেপুটেশন দেয়। কর্তৃপক্ষ স্বীকার করে তারা দ্রুত নম্বর দেওয়া শুরু করবে। কিন্তু মিল কর্তৃপক্ষ এই বিষয়টি এড়িয়ে যেতে থাকে।
বিসিএমএফ নতুন করে উদ্যোগ নিয়ে আন্দোলন শুরু করে। ফলে তৃণমূল থেকে শুরু করে অন্য ইউনিয়নের শ্রমিকরা কাঁকিনাড়া জুট মিলের বিসিএমএফ নেতৃত্বের সাথে যোগাযোগ করে, বৃহত্তর আন্দোলন করার দাবি ব্যক্ত করেন।
আন্দোলন শুরুর পর্বে কয়েক দফায় পোস্টারিং করা হয়। গত একমাস পূর্বে মিল কর্তৃপক্ষ, প্রথমে স্পিনিং ও পরে ড্রয়িং মেশিনম্যান সহ বেশ কিছু সংখ্যক শ্রমিকদের পিএফ নম্বর দেওয়া শুরু করে। এই মূহুর্তে সিদ্ধান্ত হয়েছে ১০০ জনের মতো শ্রমিককে নম্বর দেবে। সবাই জানেন কাঁকিনাড়া মিল দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক গুণ্ডামির পীঠস্থান হয়ে আছে। শাসকশ্রেণীর ইউনিয়ন ছাড়া, প্রতিকূলতার মধ্যেও বিসিএমএফ ইউনিয়ন অফিস শ্রমিকরা নিয়মিত খোলেন। ইউনিয়ন সম্পাদক কৃষ্ণা বেহরার অবসরের পর উজ্জ্বল বেহরাকে নতুন সম্পাদক করে ইউনিয়নের কাজ শুরু হয়েছে। নতুন ও পূর্বতন সম্পাদকের সমন্বয়ে ইউনিয়ন নতুন করে উদ্যোগ নিচ্ছে।
কাঁকিনাড়া জুট মিলে বিসিএমএফ যে প্রচারগুলো চালাচ্ছে,
১) অবিলম্বে শ্রমিকদের বকেয়া গ্র্যাচুইটি দিতে হবে।
২) ২০১৯ ও ২০২০ সালের চুক্তি অনুযায়ী গ্র্যাচুইটির বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে।
৩) মিলে কর্মরত সব শ্রমিকদের নাম নথিভুক্ত করতে হবে।
৪) শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি ও অন্যান্য ছুটিতে কর্মরত শ্রমিকদের নির্ধারিত মজুরি থেকে বেশি মজুরি দিতে হবে। ইউনিয়ন নেতৃত্ব এবং শ্রমিকরা ঝুঁকি নিয়ে আন্দোলনের পথে পা বাড়িয়েছেন।
- নারায়ণ দে