অনাদিকাল হতে তুমি নির্যাতিত, অসহায়
শান্ত প্রকৃতির মতোই সহজ সরল।
তাই সমাজের সকল আবর্জনা —
তোমার বুকেই এসে জড়ো হয়,
তোমার চলার পথকে করে ব্যাহত।
আর কতদিন এই অন্যায়কে প্রশ্রয় দেবে?
আর কত অবিচার মুখ বুজে কেবলই সয়ে যাবে?
শুনতে কি পাও না? ভিটে ছাড়া কত মানুষের হাহাকার —
প্রকৃতির বুক থেকে, টেনে ছুঁড়ে ফেলা শিশুর আর্তনাদ —
সেই কত কাল হতে কত ‘ঠুড়গা প্রকল্প’, কত ‘দেউচা পাঁচামী’
তোমার স্বজনদের করলো ঘরছাড়া —
তোমার ভাইকে করলো ভিটেছাড়া।
তবু তুমি নিশ্চুপ!
মায়ের চোখের জলও কি তোমায় বিগলিত করে না?
তুমি কি পারো না সুনামির মতো ঠেউ তুলে
প্রতিবাদে মুখর হতে?
তুমি কি পারো না ঝর্ণার মতো সবেগে ধেয়ে এসে
কঠিন শিলাকে চূর্ণ করতে?
চেয়ে দেখ — নিথর হয়ে যাওয়া তোমার মায়ের থমথমে মুখ,
তোমার বোন আজ মজুরি গিরি করে,
দমকা ঝড়ে পরিশ্রান্ত তোমার পিতা —
ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর দিন গোনে।
না আর না, অনেক হয়েছে
সময় এসেছে এবার উঠুক ডাক —
কোটি কোটি করাঘাত দ্বারে তুলুক আওয়াজ।
প্রলয় ঝড়ে ছিটকে পড়ুক সকল সন্ধিপত্র —
কোলাহলে কেঁপে উঠুক সমগ্র আকাশ।
বিদ্রোহের এই বাণীতেই ধৌত হোক সকল পাপ
ধরণী উঠুক খিলখিলিয়ে হেসে,
নতুন প্রভাতের আলোয় চকচক করে উঠুক
মায়ের সুন্দর মিষ্টি মুখচ্ছবি।
- পাপিয়া মাণ্ডী