ত্রিপুরার রাজ্য কমিটির বিবৃতি
Statement of Tripura

বিশালগড়ে, বিশ্রামগঞ্জে, সাব্রুমে ও উদয়পুরে বিরোধী দলের কর্মীদের উপর আক্রমণ, ভয়-ভীতি ও সন্ত্রাস সংগঠিত করে বিজেপি সারা দেশের সাথে ত্রিপুরা রাজ্যকে বিরোধী মুক্ত করার ফ্যাসিবাদী ব্লুপ্রিন্ট রচনা করেছে। একে নাকাম করতে একটি ন্যূনতম কর্মসূচির ভিত্তিতে বিরোধীদের মধ্যে রাজনৈতিক মহাজোট গড়েতোলার আহ্বান জানায় সিপিআই(এমএল) লিবারেশন। গত ২২ সেপ্টেম্বর এক প্রেস বিবৃতিতে রাজ্য সম্পাদক পার্থ কর্মকার বলেন –

সাব্রুমে ও গতকাল উদয়পুরে বিরোধী দলের মিছিল ও সভা সমাবেশে অংশগ্রহণকারী কর্মীদের উপর পরিকল্পিতভাবে বিজেপি তার দলীয় বাইক বাহিনীর দ্বারা নৃশংসভাবে আক্রমণ সংগঠিত করেছে। রাতের বেলায় বিরোধীদের বাড়ি-ঘর, জিনিসপত্র ভাঙচুর করেছে। বৈধ অনুমতি প্রাপ্ত সভা ও সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের উপর কর্তব্যরত পুলিশের সামনেই এই আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পুলিশ নীরব ও নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে এবং শাসক দলের বাইক বাহিনীকে পরোক্ষভাবে মদত যুগিয়েছে। গণতন্ত্র নিধনের পরীক্ষাগারে পরিণত হয়েছে ত্রিপুরা। সংবিধান ও আইনের শাসন আজও বিপন্ন। এখন ২০২৪-এ লোকসভা নির্বাচনের লক্ষ্য সামনে রেখে বিজেপি সারা দেশের সাথে ত্রিপুরা রাজ্যকেও আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিরোধী মুক্ত করার ফ্যাসিবাদী ব্লু-প্রিন্ট রচনা করেছে। এরই অঙ্গ হিসেবে বিধানসভা নির্বাচনের ৫ মাস পূর্ব হতে আরএসএস ও বিজেপি পরিকল্পিতভাবে বিরোধীদের উপর নতুনভাবে আক্রমণ ও সন্ত্রাস নামিয়ে এনেছে। কিন্তু প্রকৃতির নিয়মে এই সন্ত্রাস ও ভয়ভীতি বেশিদিন মানুষ সহ্য করবে না। প্রতিটি ক্রিয়ার বিপরীতে যেমন প্রতিক্রিয়া থাকে। ঠিক তেমনি দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে মানুষ কিন্তু রুখে দাঁড়াবেই। যেমনটা ত্রিপুরার জনজাতিরা মথা-র নেতৃত্বে গত এডিসি নির্বাচনে প্রথম থেকেই বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ খাড়া করেছে। তার সাথে সমাজের অল্পসংখ্যক অন্যান্য অংশও প্রতিরোধে সামিল হয়েছে। তাই অতি সম্প্রতি শাসক বিজেপির আক্রমণ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিরোধের ঘটনাও ঘটতে শুরু করেছে। বিরোধী দলগুলো আলাদা আলাদা থাকার কারণে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ শক্তিশালী হয়ে উঠছে না। বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধ হলে তা দানা বাঁধবে ও শক্তিশালী প্রবনতা হয়ে উঠবে। এটাই হচ্ছে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার উপযুক্ত সময়। কিন্তু তার জন্য রাজনৈতিক রণকৌশল হিসেবে বিরোধীদের যেকোন মূল্যে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মহাজোট গড়তে হবে। ১৯৩৫ সালে কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিকের ৭ম কংগ্রেসে ইউরোপে ও পৃথিবীতে কিছু দেশে ক্ষমতাসীন বিপর্যয়কারী শক্তি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে শ্রমিক শ্রেণীর যুক্তফ্রন্ট, ফ্যাসিবিরোধী জনগণের মোর্চা গড়েতোলার জন্য সর্বসম্মতভাবে নীতিমালা গৃহীত হয়েছে। যা আজও মার্কসবাদী মহলে সর্বজন স্বীকৃত এবং সবাই তা মেনে চলেন।

খণ্ড-29
সংখ্যা-38