১১ জুলাই সিপিআই(এমএল) রাজ্য সম্পাদক পার্থ ঘোষ এক প্রেস বিবৃতিতে বলেন, ১০ জুলাই মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় বললেন, “কৃষিজমি বিক্রি করে সিঙ্গুরের কৃষকরা ‘ভাল দাম’ পাচ্ছেন এবং সেই টাকায় অন্য কোনো ‘ইতিবাচক’ কাজ করছেন” বলে কৃষকরা কৃষিকাজ ছেড়ে দিচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রীর হিসাব অনুযায়ী ২০১৭-১৮ সালে ৬৪০ একর (১৯২০ বিঘা) জমিতে কৃষিজাত পণ্য উৎপাদন করেন কৃষকরা, আর ২০১৮-১৯ সালে ২৬০ একর জমিতে ৭৯২ জন চাষি মাত্র ২ কোটি টাকার বার্ষিক মূল্যের কৃষিজাত পণ্য উৎপাদন করেন। মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় যে প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গেলেন, সুপ্রীম কোর্টের রায়ের ভিত্তিতে ‘অধিগৃহীত’ ৯৯৭ একর জমিকেই “চাষ যোগ্য” করে কৃষকদের ফিরিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। সিঙ্গুরে আমাদের পার্টির পক্ষ থেকে ধারাবাহিক অনুসন্ধান চালিয়ে এবং কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, “১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের টাকায় আগাছা পরিস্কার করা ছাড়া জমিকে উর্বরা করার জন্য অন্য কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। যে কংক্রিটের চাঁইগুলো এখনো মাটিতে রয়ে গেছে বা কংক্রিটের রাস্তা অধিগৃহীত জমির মধ্যে তৈরি করা হয়েছিল তা সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে। নিকাশি ব্যবস্থাও তথৈবচ।” ডোল রাজনীতি ও তাকে ঘিরে দুর্নীতি আর কাটমানির খবর সিঙ্গুরের মাটিতে এখন কান পাতলেই শোনা যায়। শাসকদলের গোষ্টীদ্বন্দ্বের খবর তো প্রতিদিন সংবাদ মাধ্যমে। মুখ্যমন্ত্রী এখন ‘অনুপস্থিত জমিদার’ ও খাসজমির মালিকদের খুঁজে বেড়াচ্ছেন !!
কৃষক ফসলের দাম পায় না, উৎপাদন খরচ লাগাতার বেড়ে চলেছে, কেন্দ্রীয় বাজেটে আবার ডিজেল-পেট্রোলের দাম বাড়ানো হল, সার, বীজ ও কীটনাশকের দাম বাড়ছে, ঋণের ভারে কৃষক ন্যুব্জ এসব প্রশ্নের সুরাহা না করে কৃষক কৃষিকাজ ছেড়ে দিচ্ছে এই প্রচার বস্তুত কর্পোরেটের জমি গ্রাসের ওকালতি। দেশজুড়ে এই যুক্তিতেই বনাঞ্চল বেহাত হচ্ছে, কৃষিজমি লুঠ হচ্ছে, কৃষক জমিহারা হয়ে দারিদ্র-পীড়িত কৃষিমজুরে পরিণত হচ্ছে। ‘সিঙ্গুর আন্দোলনের নেত্রী’ আজ কর্পোরেটদের শেখানো বুলি আওড়ে যাচ্ছেন। আন্দোলনের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা আর কাকে বলে !