যোগী শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়ে এলো মারাত্মক এক অধ্যাদেশ

হিন্দু রাষ্ট্রের পরীক্ষাগার উত্তর প্রদেশে যোগী আদিত্যনাথ আনতে চলেছে মারাত্মক এক অধ্যাদেশ। “উত্তর প্রদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ, ২০১৯” এর খসড়া প্রস্তাবটি ইতিমধ্যে ওই রাজ্যের মন্ত্রীসভায় পাশ হয়ে গেছে সর্বসম্মতিক্রমে। কোনো রকম রাখঢাক না করে উত্তর প্রদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও রাজ্য সরকারের মুখপাত্র সিদ্ধার্থনাথ সিং বলেছেন, “জেএনইউ ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যা ঘটেছে তারপর থেকে ওগুলোর প্রতিষেধক হিসাবে এই অধ্যাদেশ আনার কথা ভাবা হয়েছে।” তিনি এখানেই থেমে থাকেননি। তিনি একই সঙ্গে হাজির করেছেন ‘জাতীয় স্বার্থের’ নতুন ভাষ্য। “আমরা যেগুলোকে মনে করব জাতীয় স্বার্থবিরোধী, সেগুলো কোনো মতেই বরদাস্ত করা হবে না। “আজাদী” বা “ভারত টুকড়ে টুকড়ে”-র মতো শ্লোগান দেশবিরোধী বলে চিহ্নিত হবে, নেওয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা।’’

এরপর থেকে জাতীয় স্বার্থের অধীনে কোনগুলি গণ্য হবে তা বিচারের ভার একমাত্র রাজ্য সরকারের। কোনো ধরনের প্রশ্ন, জিজ্ঞাসা, যোগী রাজ্যে নিষিদ্ধ। যে কোনো বিষয়ে প্রশ্ন করা, বিতর্ক তোলা দেশবিরোধী তকমা পেয়ে যেতে পারে নতুন এই অধ্যাদেশবলে। চিন্তার জগতে অনুসন্ধিৎসা, জিজ্ঞাসু মনন, জ্ঞানচর্চার বৈচিত্র্যগামিতার পরিসরকে কন্ঠরুদ্ধ করে একমাত্রিক, রাষ্ট্রিক অঙ্গুলিহেলনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে পরিচালিত করা হবে যোগীর হিন্দু রাষ্ট্রে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আর মুক্ত চিন্তার প্রাঙ্গন হয়ে থাকবে না। তা চলবে নিয়ম মতে, শাসন অনুযায়ী।

উত্তর প্রদেশের ২৭ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এতদিন কোন আলাদা আইন ছিল না। প্রস্তাবিত এই অধ্যাদেশ সবগুলোকেই একই ছাতার তলায় নিয়ে আসবে। ইতিমধ্যেই এই অধ্যাদেশ নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। এই অধ্যাদেশকে ঠেকানো না গেলে অচিরেই বিজেপি শাসিত বাকি রাজ্যগুলো, এমনকি কেন্দ্রীয় সরকার ও কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তা রূপায়িত করার জন্য চেষ্টা চালাবে অদূর ভবিষ্যতে।

খণ্ড-26
সংখ্যা-18