খবরা-খবর
বামফ্রন্টের বিক্ষোভ সমাবেশে সিপিআই(এম-এল) লিবারেশনের সংহতি জ্ঞাপন

২৬ অক্টোবর বারাসত, ময়নায় উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলা পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে ভিড়ে উপচে পড়া বিক্ষোভ সমাবেশে যখন আমডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতে নির্বাচিত সদস্যা সাবিরা বিবি বললেন “আমার স্বামীকে জেলে আটকে রেখেছে, বোমা মেরেছে; তবু আমরা বোর্ড গঠন করবো এবং জিতব”- তখন গোটা সমাবেশ গর্জে উঠেছে করতালিতে। বারাসতের হেলা বটতলা থেকে জেলা বামফ্রন্টের মিছিল শুরু হয়। এসপি-র দপ্তরের সামনে সমাবেশে অংশ নেওয়া মানুষের শরীরের ভাষা ও মেজাজ বলে দিচ্ছিল, পুলিশ যদি আমডাঙার ঘরছাড়া মানুষদের ঘরে ফেরাতে না পারে, তাহলে তারা নিজেরাই ঘরে ফিরবেন। গোটা জেলার বামপন্থী গণতান্ত্রিক মানুষ এই সংগ্রামের পাশে থাকবেন। শহীদ কমরেড মুজাফ্ফর আহমেদ (৩১)-এর বৃদ্ধপিতা আলিমুদ্দিন পিয়াদা লালঝাণ্ডা হাতে হাজির ছিলেন সমাবেশে। বক্তৃতা করেননি, শুধু একবার মঞ্চে উঠে দাঁড়িয়েছেন। সমাবেশে অংশ গ্রহণকারীরা দাঁড়িয়ে উঠে স্লোগানে স্লোগানে তাঁকে কুর্নিশ জানিয়েছেন। এদিনের বিক্ষোভ সমাবেশে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক, সিপিআই(এম) জেলা সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তী বলেন, বইছগাছি, বড়গাছিয়া, ট্যাঙাট্যাঙির মতো গ্রাম এখনও কার্যত পুরুষশূন্য। রোজ চলছে হুমকি, তবুও আমডাঙার লালঝান্ডা কাঁধে নেওয়া মানুষের মনোবলকে ওরা দমাতে পারেনি। সিপিআই(এমএল) লিবারেশন জেলা কমিটির সদস্য নবেন্দু দাশগুপ্ত বলেন আমডাঙ্গায় রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস নেমেছে, এই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমডাঙ্গার মানুষ সিপিআই(এম)-এর নেতৃত্বে লড়ছেন। আজ আপনারা বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছেন, আমরা সিপিআই(এমএল) লিবারেশন-এর পক্ষ থেকে সংহতি জানাতে ও আমডাঙ্গার মানুষের লড়াইয়ের পাশে থাকার বার্তা নিয়ে এই সভায় উপস্থিত হয়েছি। অন্যান্য বক্তারা ছিলেন সিপিআই(এম)-এর সুভাষ মুখার্জি, তড়িৎ তোপদার, সিপিআই নেতা অমলেন্দু দেবনাথ, ফরওয়ার্ড ব্লকের সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়। সভাপতিত্ব করেন সিপিআই(এম) নেতা নেপালদেব ভট্টাচার্য। ডেপুটেশন দলে ছিলেন বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য, গার্গী চ্যাটার্জী এবং রঞ্জিত কর্মকার সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। পুলিশ সুপারের কাছে যে দাবিগুলি পেশ করা হয়-১) অবিলম্বে আমডাঙ্গায় শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। ২) তৃণমূল দুষ্কৃতীদের সন্ত্রাস ও পুলিশী নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। ৩) সমস্ত ঘরছাড়া মানুষদের ঘরে ফেরাতে প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। ৪) সমস্ত এলাকাকে বেআইনি অস্ত্র মুক্ত করতে হবে। ৫) প্রকৃত অপরাধীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। ৬) মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া রাজনৈতিক নেতৃত্ব সহ নিরপরাধ গ্রামবাসীদের অবিলম্বে নি:শর্ত মুক্তি দিতে হবে।

খণ্ড-25
সংখ্যা-33