যতীন মার্ডী আদিবাসী সংগঠনের রাজ্য কমিটির সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ইটাহারের পার্টি নেতা ছিলেন। লড়াকু নেতা। যখন দুজন আদিবাসী মহিলাকে রায়গঞ্জে তূণমূল কংগ্রেসের গুন্ডারা ধর্ষণ করে তখন যে প্রতিবাদের উত্তাল আন্দোলন গড়ে উঠে, তখন তার সামনের সারির নেতা ছিলেন। শ্রেণীর ও আদিবাসী সমাজের নেতা ছিলেন। পার্টির বড় ক্ষতি হল। স্থানীয় স্তরে ভাল নেতাকে হারালাম। কমরেড সুলেমান হাফিজির মৃত্যুর পর ভাল ভূমিকা নিয়েছিলেন। এই ধরনের কমরেডরাই কৃষক আন্দোলন ও গণভিত গড়ে তোলা ও বিস্তারের কান্ডারি। লাল সেলাম (আরা জোহার) যতীন মার্ডী। উত্তর দিনাজপুর ও ইটাহার এর কমরেডদের শোক এর সাথে রাজ্য পার্টি সংগঠনও শোকাহত।
ইটাহার লোকাল কমিটির সম্পাদক কমরেড যতীন মার্ডী ১২ নভেম্বর রাত্রি ১২টা নাগাদ বুকে ব্যথা অনুভব করেন তিনি। প্রত্যন্ত গ্রামে বাড়ি হবার জন্য অতরাতে ডাক্তার দেখানোর সুযোগ পায়নি পরিবারের সদস্যরা। রাত্রি ১-টার পর মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি রেখে গিয়েছেন দুই পুত্র ও স্ত্রীকে। তাঁর মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই অসংখ্য গুণমুগ্ধ ব্যক্তি তথা পঞ্চায়েত প্রধান সহ জাতি-বর্ণ নির্বিশেষে বহু মানুষ তাঁর বাড়িতে গিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান। পার্টির তরফে রাজ্য নেতা কমরেড তসলিম আলি, জেলা নেতা সুশীলা রায়, গণেশ সরকার সহ ভগত পাল ও রোকেয়া বিবি উপস্থিত থেকে কমরেডকে রক্ত পতাকা ও মালা দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান। এখানে তাঁর কর্মজীবন নিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন তসলিম আলি। রাজ্যের পাঠানো শোকবার্তা পাঠ করেন গনেশ সরকার। কমরেড যতীন মার্ডী ১৯৮০-সাল থেকে বামপন্থী আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন। ১৯৯১-সালে প্রয়াত নেতা অজিত দাসের হাত ধরে এই পার্টিতে যোগদান করেন। ২০০৯ সালে সুলেমান হাফিজী জেলার দায়িত্ব নিলে তিনি সম্মেলনের মাধ্যমে ইটাহার লোকাল কমিটির সম্পাদক নির্বাচিত হন। সেই থেকে অদ্যাবধি তিনি ঐ পদেই ছিলেন। এবারের লোকাল কমিটির সম্মেলনে তাঁর শত আপত্তি উপেক্ষা করে উপস্থিত কমরেডগণ তাঁকেই সম্পাদক রূপে পুননির্বাচিত করেন। আমাদের পার্টি তাঁকে রাজ্য আদিবাসী সংগঠনের নেতা নির্বাচিত করেছিলেন। পার্টি ছাড়াও তাঁর কাজের অনেক ব্যপ্তি ছিল। তিনি ঐ এলাকার চার্চ-এর দেওয়া দায়িত্ব সামলেছেন আবার আশপাশের চার/পাঁচটি গ্রামের মানুষের সুখ ও দুঃখের সাথী ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে পার্টির ও ঐ এলাকার ব্যাপক ক্ষতি হল। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৫-বছর। তাঁর পরিবারকে সমবেদনা ও পাশে থাকার অঙ্গীকার জানানো হয়েছে। কমরেড যতীন মার্ডীর মৃত্যুতে পুরো এলাকা শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছে। কমরেড যতীন মার্ডী লাল সেলাম।