৫ অক্টোবর বেলঘরিয়া, সিপিআই(এম এল) লিবারেশন বেলঘরিয়া আঞ্চলিক কমিটির উদ্যোগে ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী’ সভা অনুষ্ঠিত হল। বেশিরভাগ স্থানীয় পার্টি কর্মীরা এই সভায় উপস্থিত ছিলেন।
শিবশঙ্কর গুহরায় বলেন, তিনি শুরুতেই বিপিএমও কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার কথা উল্লেখ করেন। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের জন বিরোধী কাজের বিরোধিতা করার জন্য সমস্ত বামপন্থী ও গণতান্ত্রিক মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আবেদন জানান।
সুজিত ঘোষ বলেন, নোটবন্দী, ব্যাঙ্কের টাকা লুঠ, জিএসটি, টাকার দাম কমা, মূল্যবৃদ্ধি ইত্যাদি নিয়ে জনপ্রিয় বক্তব্যের মাধ্যমে মোদী রাজত্বকে উন্মোচিত করেন। তিনি আরও বলেন গণতন্ত্র বিপন্ন, অন্যদিকে সার্বভৌমত্ব আজ চ্যালেঞ্জর মুখে। তাই সমস্ত দেশপ্রেমিক মানুষের ঐক্য গড়ে তোলা পরিস্থিতির দাবি।
সাগ্নিক চক্রবর্তী কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, এরা বিজ্ঞান গবেষণা বন্ধ করে দিচ্ছে, ইতিহাসের বিকৃতি ঘটাচ্ছে। ইউজিসি বন্ধ করে দেওয়ার জন্য চক্রান্ত শুরু করেছে। তিনি আরও বলেন রাজ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে ভর্ত্তির দূর্নীতিতে রেকর্ড করেছে। ইসলামপুর দাড়িভিট স্কুলের ছাত্ররা শিক্ষক নিয়োগের বদলে গুলি পেল ও দু’জন ছাত্র নিহত হল। ছাত্ররা সারা দেশে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে লড়ছে। জেএনইউ, হায়দ্রাবাদের কলেজের ছাত্ররা লড়ছেন। মেডিকেল, প্রেসিডেন্সির ছাত্ররা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দাঁতে দাঁত চেপে লড়ছে। শিক্ষার গৈরিকীকরণ এবং বাংলায় শিক্ষায় নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজের একতার ওপর জোর দেন।
জয়ন্তী দাশগুপ্ত বলেন, দক্ষিণ দমদমে বোমা বিস্ফোরণে ছোট্ট বিভাসের মৃত্যু, নারী নির্যাতন, বেলঘরিয়ায় মির্ধা পাড়ায় নাবালিকার ওপর যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে ডেপুটেশন দেওয়া সত্ত্বেও পুলিশ অপরাধীকে গ্রেপ্তার না করার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শপিং মলগুলি স্থানীয় বাজারগুলি কব্জা করছে তার জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেন। উৎসবের সময় বিজেপি/আর এস এস-এর বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আবেদন জানান। রাজ্য সরকারের পূজা অনুদানের বিরোধিতা করেন। রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষের ঐক্যের কথা বলেন।
অর্চনা ঘটক বলেন, নারী নির্যাতনের বিভিন্ন ঘটনা তুলে ক্ষোভ ব্যক্ত করেন। তিন তালাক প্রশ্নে মুসলমানদের ক্ষেত্রে ফোজদারি অপরাধ হিসাবে অধ্যাদেশ জারির বিরোধিতা করে বলেন এটা হল বিজেপি-র বিভাজনের রাজনীতি। তিনি প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী তার দাম্পত্যসঙ্গীনী যশোদাবেনকে একতরফাভাবে বিচ্ছিন্ন করেছে, তাহলে এই ঘটনা কেন ফৌজদারি অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে না? ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সব মহিলাদের নির্যাতনের বিরুদ্ধে ও অধিকারের জন্য ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের জন্য তিনি আবেদন করেন।
বাসুদেব বসু বলেন, মুক্তমনা বুদ্ধিজীবী, দলিতদের হত্যা করা, ‘আরবান নকশাল’ নাম দিয়ে অধিকার আন্দোলনের নেতাদের গ্রেপ্তার, এনআরসি থেকে ৪০ লক্ষ মানুষের নাম বাদ যাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এম কে গান্ধীর জন্মের সার্ধশতবর্ষের দিন দিল্লীতে কৃষকদের ওপর লাঠি চার্জের নিন্দা করেন। আরও বলেন ভারতের সংবিধান ও গণতন্ত্র আক্রান্ত তাকে রক্ষা করার জন্য আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি আবেদন করেন ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে যে ভাবেই হোক বিজেপি-কে পরাস্ত করতে হবে।
নবেন্দু দাশগুপ্ত বলেন, ৮-৯ জানুয়ারি ২০১৯ কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নের ডাকে ধর্মঘট সফল করার জন্য সংগঠিত ও অসংগঠিত শ্রমিকদের কাছে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বার্তা দেন।
সন্দীপ দে ও নীতীশ রায় গণসংগীত পরিবেশন করেন। অশোক সাহা সমগ্র সভাটি পরিচালনা করেন।