শ্রদ্ধা-ভালোবাসায়, শপথে- স্মৃতিচারণায় অনুষ্ঠিত হল, নদীয়া জেলার পার্টি নেতা কমরেড মৃত্যুঞ্জয় হালদারের স্মরণ সভা। তিনি ছিলেন পার্টির তেহট্ট-পলাশীপাড়া লোকাল কমিটি সদস্য এবং কৃষিমজুর সংগঠনের রাজ্য কাউন্সিল সদস্য।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর তাঁর বাসভূমি তথা সংগ্রামের কর্মভূমি নিশ্চিন্তপুর গ্রামে আয়োজিত এই স্মরণসভায় জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত পার্টিকর্মীরা ছাড়াও এলাকার গ্রামবাসীরা,বামপন্থী কর্মীরা উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় অংশগ্রহণ করেন। গত ৯ সেপ্টেম্বর ভারত বনধে্র আগের দিন প্রচার কাজ শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে আকস্মিক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুঞ্জয় হালদারের চলে যাওয়া তাঁর পরিবার, গ্রামবাসী এবং নদীয়া পার্টির কাছে এক বিরাট আঘাত। সেই বেদনা বুকে নিয়ে স্মরণসভায় উপস্হিত সকলেই প্রয়াত নেতার সংগ্রামী জীবনের কথা তুলে ধরেন। এলাকায় বিরাট অংশের মানুষ যে আন্দোলনের সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছেন সেই নিশ্চিন্তপুর বিল দখলের প্রসঙ্গ স্মরণসভা থেকে বারংবার উঠে আসে।প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, ঐ আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার স্বার্থে ৯০ সালে কমরেড মৃত্যুঞ্জয় সি পি এম ছেড়ে আমাদের পার্টিতে যোগ দেন। পরবর্তীকালে আন্দোলন আরও ব্যাপকতা লাভ করে। স্মরণসভায় সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য কার্তিক পাল বলেন,কমঃ মৃত্যুঞ্জয়ের স্বপ্ন সফল করে তুলতে হবে,জলাভূমিতে তথা নিশ্চিন্তপুর বিলে মৎস্যজীবীদের এলাকার ব্যাপক মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় নতুন করে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। পূর্বতন সরকারের মতো বর্তমান সরকারও জনগণের স্বার্থকে পাশে সরিয়ে রেখে মুষ্টিমেয় ধনীদের দালালী করছে। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
কমরেড মৃত্যুঞ্জয় শুধু মৎস্যজীবীদের স্বার্থেই নয়, জনগণের স্বার্থে বিভিন্ন ধরনের আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। তাঁর বীরত্ব, দৃঢ়তা থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। যে কোনো লড়াইয়ে, শ্লোগানে, পথচলায় তিনি একেবারে সামনের সারিতে থাকতেন, একটা স্বপ্নকে দীর্ঘদিন ধরে বুকে লালন করে গেছেন, একে সফল করে তুলতে আমরা অবশ্যই দায়বদ্ধ থাকবো। রাজ্য কমিটি সদস্য জয়তু দেশমুখ বলেন, পার্টির প্রচারকাজে তাঁর সাহসী ভূমিকা শিক্ষণীয়, যেখানে বিরাট এলাকায় স্বল্প শক্তি নিয়েও লাল পতাকা কাঁধে জনগণের মধ্যে চলে যেতেন। পার্টির নদীয়া জেলা সম্পাদক সুবিমল সেনগুপ্ত বলেন, প্রতিকুল অবস্থার মধ্যেও তিনি পার্টির স্পিরিটকে ধরে রেখেছিলেন, অত্যন্ত ধৈর্যশীলতার সাথে সংগঠন ও সংগ্রাম গড়ে তোলার কাজ চালিয়ে গেছেন।এ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন,পার্টির রাজ্য কমিটি সদস্য বিমান বিশ্বাস, কাজল দত্তগুপ্ত, জেলা কমিটি সদস্য আলতাফ হোসেন, ধনঞ্জয় গাঙ্গুলী, দিলীপ মজুমদার, এলাকার বর্ষীয়ান পার্টি নেতা বিল্বমঙ্গল চ্যাটার্জী, সি পি এম জোনাল সদস্য সুবোধ বিশ্বাস, মৎস্যজীবী সমিতির সহদেব হালদার। শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রয়াত নেতার স্ত্রী দেবীরাণী হালদার, জেলা নেতা বিদ্যান প্রমূখ। শুরুতে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বাবলু হালদার, নীতীশ রায়। সভা সঞ্চালনা করেন পার্টির লোকাল কমিটির নেতা বিশ্বজিৎ চ্যাটার্জী।