উড়িষ্যার বর্ষীয়ান পার্টি নেতা ক্ষিতীশ বিসওয়াল আর নেই
party leader Kshitish Biswal

উড়িষ্যার বর্ষীয়ান সিপিআই(এমএল) নেতা কমরেড ক্ষিতীশ বিসওয়াল ১২ জানুয়ারি প্রয়াত হয়েছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। তাঁর না ফেরার দেশে চলে যাওয়ায় সমগ্র পার্টি সংগঠন ও সুধীজন গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় শোকপ্রকাশ করতে গিয়ে পার্টির সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেছেন, আমরা এমন এক প্রবীণ নেতাকে হারালাম যিনি উড়িষ্যায় ও তার বাইরে পার্টিকে শক্তিশালী করে তুলতে প্রভূত অবদান রেখে গেছেন। কমরেড ক্ষিতীশ বিসওয়াল লাল সেলাম।

কমরেড ক্ষিতীশ বিসওয়াল ছিলেন আজীবন বামপন্থী। প্রথমে সিপিআই, তারপরে সিপিআই(এম) করতেন। ১৯৮০-৯০ দশকের সন্ধিক্ষণে তিনি সিপিআই(এম)-এর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে সিপিআই(এমএল) সংগঠনে যুক্ত হন। এ নিছক দল বদল ছিল না, এটা ছিল সিপিআই(এম)-এর বামপন্থা'র নামে নানা রূপে সুবিধাবাদী ধারার বিরুদ্ধে শুরু করা মতাদর্শগত-রাজনৈতিক সংগ্রামের স্বাভাবিক রূপান্তর। এক উল্লেখযোগ্য কমিউনিস্ট কর্মী-সমর্থকসারি সহ কমরেড ক্ষিতীশ বিসওয়াল নতুন পার্টিতে চলে আসেন। তার পর থেকে উড়িষ্যায় আমাদের পার্টির মানচিত্র, উদ্যোগ ও সক্রিয়তা ক্রমেই বাড়তে থাকে। প্রয়াত প্রবাদপ্রতীম পার্টি নেতা নাগভূষণ পট্টনায়কের পাশাপাশি ক্ষিতীশ বিসওয়ালের নেতৃত্বে সিপিআই(এমএল) লিবারেশন অনুসৃত সংগ্রামী বামপন্থার পতাকা উড়িষ্যায় ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। ভুবনেশ্বরে কমরেড নাগভূষণের মূর্তি প্রতিষ্ঠা ও স্মৃতিবিজড়িত অফিসভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে কমরেড ক্ষিতীশ বিসওয়ালের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। তাঁর বিশেষ পরিচিতি গড়ে উঠেছিল কৃষক সংগ্রামের নেতা হিসেবে। বহু কৃষক আন্দোলনের পেছনে তিনি ছিলেন সংগঠক। প্রবলভাবে সোচ্চার হয়েছিলেন কলিঙ্গনগরে কৃষক গণহত্যার বিরুদ্ধে। তাঁর এই সমগ্র সুদীর্ঘ পরিচিতি তাঁকে উড়িষ্যার সীমানা ছাড়িয়ে পার্শ্ববর্তী অন্ধ্র ও বাংলায়ও কম-বেশি পরিচিত করে তুলেছিল। তিনি ছিলেন দৃঢ় পার্টি মানসিকতার ও দরাজ হৃদয়ের ব্যক্তিত্ব, খুবই সদালাপী ও বন্ধুবৎসল; নির্ভরযোগ্য সহায়তার নিশ্চিত চরিত্র। জীবনের শেষপর্বে বার্ধক্যের কারণে পার্টি কাজ করতে পারতেন না। কিন্তু পার্টি অফিসে যতদিন সম্ভব হয়েছে আসতেন। এরকম এক বিশিষ্ট পার্টি নেতার জীবন থেকে বহু অমূল্য শিক্ষা নেওয়ার আছে।

খণ্ড-29
সংখ্যা-2