ন্যায্য মহার্ঘ ভাতা ও শূন্যপদে স্বচ্ছতার সঙ্গে কর্মী নিয়োগের দাবিতে সরকারী কর্মচারী ও সরকার পোষিত বিদ্যালয়গুলিতে কর্মরত শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারীদের আন্দোলনের সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বানে ১০ মার্চ রাজ্যজোড়া ধর্মঘট অভূতপূর্বভাবে সফল হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক রীতিনীতিকে জলাঞ্জলি দিয়ে ন্যায়সংগত দাবিকে সরাসরি নাকচ করতে অবান্তর কথামালা, সরকারী ফরমানে শাস্তিমূলক কঠোর ধারাগুলি ও শাসক দল আশ্রিত দুষ্কৃতিদের পূর্বাপর হুমকিকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে হাজারে হাজারে সরকারী কর্মী- শিক্ষক - শিক্ষাকর্মীরা কোনোরকম বাধার কাছে নতিস্বীকার না করে শিরদাঁড়া সোজা রেখে ধর্মঘটে অংশগ্রহন করেছেন। পশ্চিমবঙ্গের গণআন্দোলনের ইতিহাসে এই আন্দোলন এক নতুন নজির তৈরি করেছে।
আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে ধর্মঘটের পরের দিন উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে ধর্মঘটে অংশগ্রহণকারী শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের শাসকদলের মদতপুষ্ট স্থানীয়স্তরের বাহুবলীরা স্কুলে ঢুকতে বাধা দেওয়া, অশ্লীল গালিগালাজ করা, এমনকি শিক্ষক- শিক্ষিকাদের ওপর শারীরিক হামলা নামিয়ে এনেছে। অথচ প্রশাসনের এ ব্যাপারে কোনো হেলদোল নেই। আক্রান্তদের অনেকেই প্রাণঘাতী হামলার আশঙ্কা করছেন।
আমরা এই সামাজিক সন্ত্রাসে আক্রান্তদের সম্পূর্ণ নিরাপত্তা ও দুষ্কৃতিদের বিরুদ্ধে কঠোর পুলিশী ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানাই।
দাবি পূরণে সদর্থক ভূমিকা পালনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অনশনরত আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করার উদ্যোগ নিয়েছেন মাননীয় রাজ্যপাল – আমরা এই সময়োচিত হস্তক্ষেপের জন্য তাঁকে স্বাগত জানাই।
অন্য দিকে, বিগত দু'বছরের বেশি সময় ধরে রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতির অবসান ও যোগ্যদের নিয়োগপত্রের দাবিতে মাটি আঁকড়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়া শিক্ষক পদপ্রার্থীদের নাছোড় আন্দোলন সম্পর্কে রাজ্য সরকারের উপেক্ষার কৌশলকে আমরা ধিক্কার জানাই।
আদালতের উপর্যুপরি রায়দানের মাধ্যমে ভূয়ো শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের চাকরি কেড়ে নেওয়া চললেও, কোনো এক অদৃশ্য কারণে যোগ্যদের নিয়োগের ক্ষেত্রে আদালতের সক্রিয়তার অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে।
মাননীয় রাজ্যপালের কাছে আমাদের দাবি যোগ্যদের দ্রুত নিয়োগের লক্ষ্যে
আপনি রাজ্য প্রশাসন, শিক্ষাদপ্তর ও আন্দোলনকারীদের নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক আহ্বান করে ন্যায়সঙ্গত দাবির পক্ষে দাঁড়ান।
সিপিআই(এমএল) লিবারেশন
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি
১২ মার্চ ২০২৩