অস্থায়ী ও প্রকল্প শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে পথ দেখাচ্ছেন মেদিনীপুরের পৌর-সাফাইকর্মীরা। রাজ্য জুড়ে অস্থায়ী শ্রমিকদের দুদর্শা ক্রমবর্ধমান, চুক্তি শ্রমিকরাও তাদের বেতন সহ অন্যান্য সামাজিক সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়ছেন। মেদিনীপুর পুরসভার সাফাইকর্মীরা পুরসভার অধীন সমস্ত প্রকার প্রকল্প শ্রমিক, ফান্ড শ্রমিক ও চুক্তিবদ্ধ শ্রমিকদের ক্যাজুয়াল শ্রমিকে রূপান্তর, কর্তৃপক্ষের দ্বারা মজুরি হ্রাস সহ সাফাইকর্মীদের পরিবারের বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মে নিযুক্ত করা ও অন্যান্য দাবিতে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করে ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই। গত ২০২১ সালে মেদিনীপুর পুরসভা সংগ্রামী শ্রমিক ইউনিয়ন এর নেতৃত্বে ৯ দিন টানা ধর্মঘট করে প্রকল্প কর্মী হোক কিম্বা ফান্ড শ্রমিক, সকলের জন্যই চালু হয়, দৈনিক ২২৬ টাকা নুন্যতম মজুরি। কিন্তু নবান্ন কর্তৃক এক চরম শ্রমিক স্বার্থে অনৈতিক আদেশ পাঠানো হয়, মেদিনীপুর পুরসভার চেয়ারম্যানকে। আদেশে বলা হয়, কেন্দ্রীয় সরকারের বিধান অনুযায়ী ‘সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট’ প্রকল্পে নিযুক্ত থাকা শ্রমিকদের সর্বোচ্চ মজুরি ২০২ টাকা, তায় মেদিনীপুরের এই শ্রমিকদের ২২৬ টাকা মজুরি বাতিল করতে হবে। যার ফলস্বরূপ এই মাসের বেতন থেকে দৈনিক ২৪ টাকা করে কেটে মজুরি ৭২০ টাকা করে কমিয়ে দেওয়ার সাথে সাথে শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ তৈরি হয়। এরপর শুরু হয় কাজ বন্ধ রেখে সম্পূর্ণ পুরসভাকে অচল করে রাখা। টানা ৪ দিন এই ধর্মঘট চলার পর চিঠি করে ইউনিয়ন নেতৃত্বের সহিত আলোচনার প্রস্তাব দিতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। সেই মতো ৬ ডিসেম্বর সকালে পুরসভা অবরোধ উঠিয়ে নেওয়া হয় কিন্তু কাজে যোগ দেয়নি কোনো শ্রমিক। ঐদিন সন্ধ্যাড় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর সহ অন্যান্য আধিকারিকদের উপস্থিতিতে ইউনিয়ন আলোচনাতে অংশগ্রহণ করে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। যা নীচে দেওয়া হল —
এআইসিসিটিইউ রাজ্য নেতা ও মেদিনীপুর পৌরসভা সংগ্রামী শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক কমরেড তপন মুখার্জী জানান, “সাফাইকর্মীদের নেতৃত্বে আসলে সমস্ত অস্থায়ী ও চুক্তিবদ্ধ শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের লড়াই চলছে। সাফাইকর্মীদের এই নেতৃত্ব প্রদানকারী ভূমিকাকে শাসক দলের নেতারা কখনও ‘গুণ্ডামো’, কখনও ‘হাঙ্গামা’ বলে কালিমালিপ্ত করতে সদা সচেষ্ট রয়েছেন এমনকি অশালীন মন্তব্যও করা হচ্ছে কাউন্সিলরদের তরফ থেকে, এই প্রথম সারির কোভিড যোদ্ধা বা ফ্রন্টলাইনারদের প্রতি। সমস্ত অপমান ও অবমাননার জবার সাফাইকর্মীরা ঝাড়ু হাতেই সংগ্রামের ধারাই ফিরিয়ে দিয়েছেন, তায় সকল শ্রমিককে জানাই লড়াকু অভিনন্দন।”