সময় মতো চিকিৎসা না পেয়ে ১৭ ডিসেম্বর বজবজ জুট মিলের কর্মক্ষম শ্রমিক অভিজিৎ ধাড়া শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
জুট শিল্পের কর্তৃপক্ষ জুট শ্রমিকদের ওপর বহুবিধ অত্যাচার চালাতে চালাতে এতদূর পৌঁছেছে যে মুমূর্ষু রোগীর জীবন নিয়েও অবহেলা করার সাহস দেখাতে পিছুপা হল না। বুধবার পেটের ব্যথা নিয়ে বজবজ ইএসআই হাসপাতাল গেলে বৃহস্পতিবার মেডিসিনে চিকিৎসা হওয়ার কথা, কিন্ত ইএসআই কর্তৃপক্ষ রোগীর পরিবারকে জানায় চিকিৎসার জন্য যথেষ্ট টাকা জমা নেই তাই চিকিৎসা করা যাবে না। অথচ অভিজিৎ-র বেতন শ্লিপে ইসএসআই-র জন্য কাটা টাকা যথেষ্ট পরিমাণ জমা আছে বলে পরিবারের মানুষ জানালেন। আনুমানিক ১২/১৩ ঘণ্টা বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল ঘুরে যখন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু হল তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। বজবজ জুট মিলের মতো চালু একটি মিলের ইএসআই-র নথিভুক্ত শ্রমিকদের টাকা কেন নিয়মিত জমা পরছে না, তা দেখার জন্য ইএসআই-র কর্তৃপক্ষের কোনও দায় যেন নেই। শ্রমিকদের অভিযোগ ম্যানেজমেন্ট — ইএসআই বাবদ নিয়মিত টাকা কাটে কিন্তু তা জমা দেয় না। ইএসআই ও মিল কর্তৃপক্ষের মধ্যে অশুভ গোপন আঁতাতের ফলে কোনও শ্রমিক অসুস্থ হলে সেই শ্রমিকের কাটা টাকা তৎক্ষনাত ইএসআই-তে পাঠিয়ে দিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। অভিজিৎ ধাড়ার ক্ষেত্রে এই বোঝাবুঝিটা সময় মতো গড়ে উঠতে পারিনি বলেই মনে হয় এবং তাই আসল ঘটনা জনসমক্ষে চলে এসেছে। ম্যানেজমেন্ট মৃত শ্রমিকের পাশে না থাকলেও সহ কর্মী, পাড়া প্রতিবেশীরা পাশে ছিলেন। তারা সবাই ক্ষোভে ফেটে পড়েন। লিখিত অভিযোগ থানায়, মিলের কর্তৃপক্ষ, ইএসআই-তে জমা দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকরা গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করেছে।
এখন দেখার কর্তৃপক্ষ মৃত জুট শ্রমিক অভিজিৎ ধাড়া-র পরিবারের জন্য কী ন্যায্য অধিকার পাইয়ে দেয়। ইউনিয়ন নেতৃত্বই বা কী ভূমিকা পালন করেন। এআইসিসিটিইউ দাবি করেছে, দোষী উভয় কর্তৃপক্ষকে শাস্তি দিতে হবে, ক্ষতিপূরণ হিসাবে ইএসআই ও মিল কর্তৃপক্ষ — এই দু-তরফ থেকে ১০ লক্ষ টাকা করে মোট ২০ লক্ষ টাকা মৃত শ্রমিক পরিবারকে প্রদান করতে হবে।