সমাজ হোক বা রাজনীতি, মেয়েদের সমানাধিকার চাই
women want equal rights

আমরা, সারা ভারত প্রগতিশীল মহিলা সমিতি, মেয়েদের নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে আহমেদাবাদের শাহি ইমামের সাম্প্রতিক মন্তব্যের বিরোধীতা করছি, যেখানে তিনি বলেছেন, মেয়েদের নির্বাচনের টিকিট দেওয়া অনুচিত কারণ তা ধর্ম-বিরুদ্ধ। আইপোয়ার জাতীয় সম্পাদিকা মিনা তিওয়ারী ও সহসম্পাদিকা ডঃ ফারহাত বানো বলেছেন, সমাজ হোক বা রাজনীতি, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মেয়েদের সমানাধিকারে বিশ্বাস করে আইপোয়া।

মুসলিম মেয়েরা দীর্ঘ লড়াইয়ের পর বিভিন্ন জায়গায় নামাজ পড়ার অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে, বিভিন্ন দেশে প্রভাবশালী রাজনৈতিক হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে বহাল। বিগত কয়েক শতক ধরে, ভারতের মুসলিম মেয়েরা, রাজনীতি, প্রশাসন, সমাজ বদলের ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। তারা সমাজকে দিশা দেখিয়েছে, সম্মান অর্জন করেছে। যেমন, ১৯ শতকে ফাতিমা শেখ, হজরৎ মহলের অবদান, এমন বিশ শতকে স্বাধীনতা সংগ্রামে বহু মুসলিম মেয়ের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন ভারতে, আসাম, জম্মু-কাশ্মীরে মুখ্যমন্ত্রী পদে থেকেছে মুসলিম মেয়েরা। অনেকেই, নির্বাচনে লড়েছে এবং বিধায়ক, সাংসদ, পঞ্চায়েত প্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচত হয়েছে। কখনোই ধর্মের কারণে মুসলিম মেয়েদের অংশগ্রহণ থেমে থাকেনি। শাহি ইমাম হয়ত ভুলে গেছে যে, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রকে বাঁচাতে ভারতজোড়া সিএএ, এনআরসি, এনপিআর বিরোধী আন্দোলন গড়ে উঠেছিল মুসলিম মেয়েদের শক্তি আর প্রতিরোধের আকাঙ্ক্ষার উপর ভিত্তি করে। অনেক মুসলিম মেয়ে আজও কারারুদ্ধ।

ইতিহাস যেভাবে এগিয়েছে, সেভাবেই, মুসলিম মেয়েরা সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে আত্মঘোষণায় আরো দৃঢ় হয়েছে। আজ, মুসলিম, হিন্দু, শিখ, খ্রিস্টার — সব ধর্মের মেয়েরা একসাথে সমানাধিকারের জন্য, বেকারত্ব, মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়ছে। শাহি ইমাম, ইতিহাসের চাকাকে ঘোরাতে পারবে না। তাই ওনার উচিত, নিজের বক্তব্য অবিলম্বে ফিরিয়ে নেওয়া।

- মিনা তিওয়ারী ও ডঃ ফারহাত বানো, সারা ভারত প্রগতিশীল মহিলা সমিতি, ৫ ডিসেম্বর ২০২২

খণ্ড-29
সংখ্যা-48